• Uncategorized
  • 0

অণুগল্পে দিলীপকুমার মিস্ত্রী

লকডাউন

করোনার কারণে লকডাউন  চলছে দেশ জুড়ে। এরমধ্যেই মহানগরীর বুকে এক বিশাল মিছিল। ফেস্টুনে বড় বড় করে লেখা, করোনার হাত থেকে বাঁচতে,মিছিলে সামিল হউন। বিশাল পুলিশ বাহিনী  মাঝপথে মিছিল আটকে দাঁড়াল। চলছে পুলিশকর্তার  সঙ্গে মিছিলকর্তার  কথাবার্তা।
-করোনা ঠেকাতে লকডাউন চলছে। আপনি এরমধ্যেই এতো মানুষের মিছিল নিয়ে বেরিয়েছেন যে ?  আরও মানুষকে মিছিলে যোগ দিতে আহ্বান জানাচ্ছেন। জানেন, করোনা ঠেকাতে মানুষের মধ্যে দূরত্ব রাখাটাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে  জরুরি?
-আজ্ঞে স‍্যার, জানি। সেই জন্যই তো আমাদের এই আবেদন।
– বলছেনটা কী ? মাথার–
-আজ্ঞে শুনলাম,এই রোগটা  নাকি বড় শহর থেকে, বাবুদের শরীর ধরে ছড়াচ্ছে ।  তাইতো আমি গরীব-বস্তিবাসী ভাইদের তাদের কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে, শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছি। লকডাউনের আগে,বলতে পারেন এটা লকটাউন।
-আপনি জানেন, এরজন্য আপনাদের সবাইকে গ্রেফতার করা যায়, আপনাদের সকলের ছ’মাস জেলহাজত হতে পারে ?
-আজ্ঞে হ‍্যাঁ স‍্যার, জানি। সেইজন্যই তো আমি মিছিলে  আরও মানুষকে যোগ দিতে দু’ঘন্টা ধরে গলা ফাটাচ্ছি।
-মানে ? কী পাগলের মতো বকছেন ?
স‍্যার, লকডাউনের কারণে আমাদের কাজকর্ম সব বন্ধ।  হাঁড়িতে চাল বাড়ন্ত। আপনারা, সরকারি বাবুরা তো মাসের মাইনে সময়ে পেয়ে যাবেন। আমাদের কী হবে ? আপনি আমাদের এখুনি গ্রেফতার করুন। ছ’টা মাস অনন্ত খেয়ে বাঁচবো ! সেইসঙ্গে বাবুদের থেকে দূরে থাকায় করোনার রোগ-জ্বালা, অকাল মৃত‍্যুর হাত থেকে বেঁচে যাবো। সঙ্গে লকডাউনও সফল হবে। স‍্যার,আর দেরী করবেন না। করোনা না,ধরে ফ‍্যালে !
পুলিশ অফিসার অবাক চোখে, মিছিল কর্তার মুখে হাঁ করে তাকিয়ে রইল। তাকে  জাস্ট চিন্তিত লাগছে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।