• Uncategorized
  • 0

অণুগল্পে ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়

জলপাই রং চায়ের কাপ

অবসর প্রাপ্ত অধ্যাপক  আশুতোষের  ছিল একটাই নেশা সুগন্ধি চা। আদরিনী গৃহিণী কমলার হাতের শোভা মকরমুখী বালা আর  জলপাই রঙের চায়ের কাপ। এপর্যন্ত ঠিকই ছিল , বাবার জন্মদিনে মেয়ের উপহার দামি সেলফোন ,এবার আরেক নেশা ধরল আশুতোষের, ফেসবুকের…. তিনি নিজের নাম দিলেন অমিত রে ,প্রোফাইল পিক শিলং পাহাড় ,বয়স সাতাশ, কত বান্ধবী সারাদিন খুটখুট । গম্ভীর কমলা মেয়ের সাথে ফোনে ফিসফিস। দুপুরে নিরিবিলিতে তাঁর মন ইংরেজি সিনেমার একটা হট সিনে ব্যস বিকেল থেকে কমলা ও জলপাই রঙের কাপ দুইই মিসিং।আরো এক নতুন প্রমাদ,এক ভার্চুয়াল বান্ধবী,লাবন্য, প্রোফাইল পিক  গুচ্ছ পলাশ। জমে গেল .. স্মাইলি ,হার্ট সাইন , কবিতা.. ভিতরে ভিতরে দ্বিধায় ভুগছেন – চিটিং উইথ কমলা?  — আরে না নির্মল আনন্দ।কমলা তো গৃহলক্ষী । প্রেসারের ওষুধ খেতে ভুলে গেলেন কদিন  বুকের বাঁদিকে চিনচিনে ব্যাথা।
সকালে হাতে গরম চা ধরিয়ে কমলার আব্দার – আজ  গলদা চিংড়ি চাই, ভাই আসবে । ওদিকে পিং ,চ্যাটে লাবণ্য – বেড়াতে যাবে? – নিশ্চয়ই হিমাচলে ট্রেকিং।
খাট থেকে নামতে গিয়ে হাঁটু তে খট্ । উফ্ ব্যায়াম ও করা হয় নি কদিন।  বাজার যেতে পারলেন না ,কী যে লজ্জা।নাঃ,আজ ই এছলনার শেষ।লাবন্য কে চ্যাটে  জানালেন – দেখা করব আজ বিকেলে , ভিক্টোরিয়া, সাদা ধুতি পাঞ্জাবি। বিকেল চার টে।
কেউ এল না। বাড়ি ফিরে শোনে প্রিয় বন্ধু প্রভাতের গলা।একবছর পর দেখা।  আশুতোষের হাত জড়িয়ে প্রভাত  চুপিচুপি বলে – একা একা সময় কাটেনা, ফেসবুকের এক অমিত রে  কে খেপিয়ে তুলেছি রে বাঁচা আমাকে। আশুতোষের দিল ফুরফুরে। কমলার হাত থেকে জলপাই চায়ের কাপ নিয়ে গুনগুন করে গেয়ে ওঠেন – এক চায়ে আমি তোমাকে চাই ।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *