Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

মার্গে অনন্য সম্মান নমিতা মাইতি (সেরা)

maro news
মার্গে অনন্য সম্মান নমিতা মাইতি (সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

পাক্ষিক প্রতিযোগিতা পর্ব - ১৮ বিষয় - বিজয়া তারিখ - ৩১/১০/২০২০

বিসর্জন

""এসো শূন্য পথ ধেয়ে,এসো হে কল‍্যানী। দুঃখ রাতে মাতৃবেশে থাকো অহর্নিশি।"" জীবনের হিসাব মেলানো কঠিন কাজ। আপনজনদের খুশী রাখতে স্বপ্নকে দূরে রেখেছিলো----আমার প্রাণের বান্ধবী বিজয়া। শেষ রক্ষা আর হলোনা। সমরেশ মজুমদার বিত্তশালী ব্যক্তি। তিনি পঙ্গু ছিলেন। তাঁর একমাত্র সন্তান উৎসব।মা রমলা দেবীর অমতে গরীব ঘরের মেয়ে বিজয়া কে বিয়ে করে। অপরূপা,দীপ্তশ্রী, নম্র,অল্পভাষী,বিনয়ী ছিল বিজয়া। উৎসব ইঞ্জিনিয়ার। বিয়ের ১৫দিনের দিন তাকে চলে যেতে হয় সিঙ্গাপুরে। সমরেশ বাবু র সেবা শুশ্রূষা বিজয়া করে।৮মাস পর বাড়ির দূর্গামার পূজোয় সে বাড়ি আসছে, বনেদি বাড়ির পূজো সাজ সাজ রব। বাড়ির মন্ডপে বিশিষ্ট মৃতশিল্পী এসে প্রতিমা তৈরি করেন। ২মাস ধরে, তিনি প্রতিমা বানাচ্ছেন।বিজয়া সারাদিনে একবার সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালাতে তুলসী তলায় আসে।রমলা দেবী সহ‍্য করতে পারেন না বিজয়া কে।সর্বদা খ‍্যাক করেন---"ছ‍্যা ছ‍্যা ছোটঘরের মেয়ে দিলি তো ছুঁয়ে,অচ্ছুৎ কোথাকার""। এভাবেই নানা ধরনের যন্ত্রনা দিতে থাকেন। বিজয়ার নীরব অভিমান জমতে থাকে উৎসবের ওপর।আজ শুভ পঞ্চমী।বরনডালা হাতে, হলুদ জলে পা ধোয়াতে রমলাদেবী গেলেন মন্ডপে।প্রতিমা দর্শন করেই ওখানে জ্ঞান হারালেন। চারিদিকে হৈ চৈ পড়ে গেল।এ কি করে সম্ভব!!প্রতিমার মুখ , বিজয়ার মুখ যে একই।।রমলাদেবীর তীব্র রোসানলের মুখে বিজয়া। হতবাক বিজয়া,সে মৃত শিল্পীকে চোখেই দেখেনি।মৃতশিল্পী সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালানোর সময় এক ঝলক দেখতেন বিজয়া কে। ষষ্ঠীর ভোরে উৎসব বাড়ি আসে।রমলাদেবীর নির্দেশে, সে মায়ের ঘরে যায়।রমল দেবী‌ অঝোরে কাঁদছেন, উৎসব কি হয়েছে জানতে চায়, তিনি বলেন,----বিজয়া কুলটা, দুশ্চরিত্রা, ও মৃতশিল্পীর সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক আছে। উৎসব মায়ের সাথে পূজো মন্ডপে যায়।প্রতিমার দিকে তাকিয়ে বিস্মিত !!--এ যে বিজয়া!!! ঘৃনাভরে মন বিষিয়ে যায়। বিজয়ার ঘরে গিয়ে কুৎসিত মন্তব্য করতে থাকে,, বিজয়ার সুরভী স্বপ্ন,নীরব অভিমান, শিশির ধোয়া হাসনুহানার কলিসম কথা, উৎসবের কর্ণগোচর হল না।বিজয়ার ভাবে,মন বোঝার মতো কেউ নেই, ভুল বোঝার মানুষ অনেক।রমলা দেবী মৃতশিল্পীর কোন কথা না শুনে দুর্নাম দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন।বিজয়া কিংকর্তব‍্যবিমুঢ়। সপ্তমী,অষ্টমী,নবমী গৃহবন্দি হয়ে রইলো,কেউ খোঁজ নিল না। দশমীতে সিঁন্দুর খেলা,প্রতিবেশী বৌয়েরা বিজয়ার খোঁজ করতে লাগলো।কাজের বিনি পিসি দরজার ফাঁক দিয়ে খাবার দিয়ে যেতো।বিনি পিসি কোন আওয়াজ না পেয়ে দরজা খুলে----অবাক!!! বৌমনি দূর্গার সাজে চোখ বন্দ করে বসে আছে। সিঁদুরে মাখামাখি ওর সিঁথি।ছুটে যায় রমলা দেবীর ঘরে।সব শুন ছুটে আসে উৎসব।------এ কি অপূর্ব দৃশ্য!!! মহামায়া কি এখানে?বিজয়া কে ছুঁতেই সে উৎসবের কাঁধে পড়ে যায়। ঘুমের বড়ি খেয়ে নিজেকে মুক্তি দিয়েছে। পাশে কাগজে লেখা-- আজ-----বিজয়া দশমী।।।।।।।(( বিসর্জন তো হয়েই গেছে))

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register