দীন দুঃখী কষ্টভোগী হতভাগ্য দিন মুজুর
পথে ঘাটে ট্রেনে বাসে কাজ করে রাত দুপুর।
সকাল বিকাল জ্বলে চিন্তা যাবে জুটে পান আহার?
মুঠো অন্ন একটু ডাল অমৃত যেন আগুন ক্ষুধার!
হাড় ভাঙ্গা করে শ্রম দেহ রক্ত শূন্য জল
নাই তবু পরিশ্রমের ন্যায্য দামে সঠিক ফল।
দিন রাত খেটেই চলে ভুখা গরীব শত দল
জানেনা এ শিল্প-শৈলী পুঁজিবাদীর নির্দয় ছল!
শীর্ণ দেহে কাঁদে শুধু রিক্ত ঘরে জীর্ণ শিশু
এ ব্যথা বোঝে না রাম খোদা বীর বুদ্ধ যীশু!
স্বাধীনদেশে চলে আজো হরেক গজব মান বন্টন
মুনিষ ভাগ্যে ঘুচবে কবে যন্ত্রণার এ ব্যথা ক্রন্দন!
প্রশ্নগুলি বুঝি সবই বুঝে সকল গদি পুরুষ
সত্যপথে চলতে গেলে মৃত থাকে সবার হুঁশ!
রাস্তার মোড়ের গলির একপাশে
জটলা আর হাসির শব্দে দাঁড়ালাম
বাবুরা হাসতে হাসতে একে অপরের গায়ে
গলে পড়ছেন আর রসিক চোখে দেখছেন
যেন পৃথিবীর সবচেয়ে আশ্চর্য তামাশা
আমিও এগিয়ে গেলাম শান্ত পায়ে।
দেখলাম পাড়ার-ই এক মানসিক প্রতিবন্ধী
পাঁচিলে ঠেস দিয়ে বসে, আলুথালু কাপড়ে
ঠিকঠাক্ লজ্জা নিবারণ করছে না
পাশে একাধিক কনডমের ছেঁড়া প্যাকেট
মুখটেপা হাসির উদ্দেক করছে সবার!
এই সমাজে মানসিক প্রতিবন্ধীরও মুক্তি নেই
দেশ এগিয়ে চলেছে, ভাবতে ভালো লাগে;
সাথে খসে পড়ছে জোরগতিতে বোধ বিবেক।
এ বড়ো দুঃসময়, ফিরে এলাম বাড়ী
নিজে আর উচ্চ শ্রেণীজাত হতে পারলাম না
পড়ে রইলাম মিডিওকার শ্রেণীতেই।
তারপর এসব আঁতলামো ছেড়ে এককাপ চা খেলাম
খবরের কাগজে নিয়মমাফিক বিজ্ঞচোখ বোলালাম
যদিও কোন সমস্যাই স্পর্শ করলো না জীবনকে
শুধুমাত্র তা চা'র কাপের ঝড়ের বিষয়বস্তু হয়েই রইলো,
হয়েই রইলো আর হয়েই রইলো দিনের পর দিন।
দিনের নিয়মে দিন আসছে, যাচ্ছে
আমিও দুপুরে আরামের ভাতঘুম
আর রাতের টিপটপ স্লিম স্বপ্ন দেখছি
বুদ্ধিজীবীরাও শতশত বুদ্ধির টিকি নাড়ছেন।
দুঃখ এই যে, মানুষ হতে পারলাম না
জন্মেছিলাম বটে মনুষ্যাকৃতি নিয়ে
তারপর কিভাবে যে তা আর থাকলাম না
সেটাই এখন সবচেয়ে বড়ো রহস্য কাহিনী।
যা হোক, তবু তো এসেছে বসন্ত
হয়তো কোন সুবার্তার বাহক হয়ে।
এমন ধূসর নগ্ন বসন্ত কে চায়
কে চায় এমন বির্বণ সময়
জানে কেউ? কেউ কি জানে?
0 Comments.