Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় সোমনাথ বেনিয়া

maro news
।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় সোমনাথ বেনিয়া

উহ‍্য স্বভাব, গুহ‍্য সত‍্য 

বোকারা কি জানে তারা বোকা? যেমন পাগল কি জানে যে তারা পাগল? হয়ত কিংবা হয়ত নয়ের উত্তর খোঁজাটাও এক ধরণের বোকামি কিংবা পাগলামি। আসলে চতুর মন সব সময় নরম মন আঁচড়াতে চায়। তুলে আনতে চায় নিজের প্রয়োজন অতিরিক্ত সংস্থান। বোকারা বোঝে না চালাকের সরু চাল, না বোঝে তার হেতুহীন প্রতীকী অধ‍্যায়। তাই তারা নেমে যায় অন্ধকার কুয়োতে যেখানে জলের মধ‍্যে পাঁকাল মাছের সাথে তাদের অন্তরঙ্গতার দিন কাটে! এই সংসারে পাঁকাল মাছ রক্তবীজের মতন ছড়িয়ে আছে। ধরতে গেলে শূন‍্যস্থান পূরণের চ‍্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া হয়। ছুঁড়ে দেওয়া হয় করুণার নৈবেদ‍্য। তারা বোঝে মাথা নিচু করে থাকা মানেই কিছু কুড়োতে আসা। এই ভাবনার অক্ষমতায় তারা দেখতে পায় না গাছের মগডালের সৌন্দর্য। গভীরে প্রোথিত শিকড়ের দুঃসহ যন্ত্রণা উপলব্ধি করলেও তাকে প্রকাশ করার মতন সহজ পাঠ তাদের থাকে না। একটি নির্বিকার হাসি কিংবা ফ‍্যালফেলে চাউনি টিক মার্কের উত্তর হয়ে আসে। বীরবলের সেই গল্পের কথা মনে আছে। বাদশাহ আকবর তাকে পাঁচজন বোকা লোক খুঁজে আনতে বলেছিল। তিনজন খুঁজে চার নম্বরে নিজেকে রেখে পাঁচে আকবরকে রেখেছিলেন। বোকাকে খুঁজতে যাওয়া যেমন বোকামি, তেমনি যে এই কাজ করার নির্দেশ দেয়, সেও তাহলে বোকা। বাদশাহ বলে বেঁচে গেলেন কিন্তু পাড়ার হাবুল হলে তাকে ট্রিট করা হতো মজে যাওয়া খালের কচুরিপানা হিসাবে। যা শোনে তার অর্ধেক বোঝে, করে তার‌ও অর্ধেক। ফলত প্রাত‍্যহিক জীবনে গুরুত্ব হারায়। ইশারা বোঝে না, বোঝে না প্রণয়ের নিগূঢ় তত্ত্বকথা। তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় সিম্পল লিভিং হলেও হাই থিংকিং কখনোই হয় না। থিংক ট‍্যাঙ্ক নয়, বলা ভালো ট‍্যাঙ্কের ভিতর জমে থাকা প্রাগৈতিহাসিক মরচে। সিরিশ কাগজ দিয়ে ঘষে তুললেও তার অক্সিডাইজড রূপ কখনো যাবে না। পরিস্থিতি আর‌ও করুণ হয়ে ওঠে যখন বোকা-চালাক শব্দনাম অক্লেশে সাধারণের ঠোঁটের ডগায় ঝুলতে থাকে। হাঁদারাম বলা সত্ত্বেও বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ সহজাত থাকায় দোষ তখন ক্রোমোজোমের উপর পড়ে। বাইশ জোড়ার বদলে তেইশ জোড়া হলেই অটিজম। সেই অর্থে বোকামি শব্দটি নিতান্ত‌ই করুণার পাত্র সমাজে। বিজ্ঞান অর্থে বিশেষ জ্ঞান তো আর সবার থাকে না। ভিতরে থেকে বাইরের জীবন অবসাদের কারণ। তখন জ‍্যাপট্রা দিয়ে কত আর সেরিটোনিন বার করা যায় মস্তিষ্কের গ্রন্থি থেকে। একটা সংজ্ঞাহীন বন্ধনে আড়ষ্ট হয়ে থাকে শরীর-মন। সমস্ত জীবনটা কাচুমাচু মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকে চোখের জলাভূমির ধারে। ভিতরে কুঁকড়ে থাকে এমন ভাবে যেন অভিধানের প্রেত্নি তার গা-হাত-পা চেটে দেবে। তাই উহ‍্য থাকাই তখন স্বভাব, গুহ‍্য থাকাই তখন সত‍্য ...
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register