Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

কবিতায় বিজন মণ্ডল

maro news
কবিতায় বিজন মণ্ডল

মিত্তির বাবুর হুঁকো

যমুনা নদীর তীরে আছে গ্রাম পুরাতন । সদাই সুখী আছে কটা ঘর আছে এক মোড়ল মন্দ নয় নাম তার সনাতন মিত্তির । পথের ধারে বড়ো আম গাছের নীচে মাচায় বসে টানে হুঁকো সর্বক্ষণ ।
"ওহে রমেন যাচ্ছো কই একা ?" "আজ্ঞে কত্তা, নতুন গেরামে যাই ।" "উদ্দেশ্য যদি বলো তবে শুনতে পারি ।" "নতুন গেরামে বাদন মাঝির ডাগর একখান ছেলি আচে । লম্বা চওড়ায় আজ্ঞে বড়ো বাবু প্রায়, রঙে কামে ঐ গেরামে আর দুখানা নাই । বিদেশ থেকে আসি নাকি বে কত্তি চায় ! তাই বড়ো মেয়ির তরে সম্বন্ধ কত্তি যাই ।" হুঁকো নামিয়ে মিত্তির বাবু কয়, " হুঁ, তোমার মেয়ে ডাগর হয়েছে বটে ! শুনি অনেক কথা, যা কিছু রটে । তবে শোনো একখান কথা, ভালো করে দেখে শুনে ভাবিয়া করিও কাজ যদি কিছু অর্থ লাগে, বলিও, করিওনা কোনো লাজ ।" মাথা নাড়িয়া রমেন মাঝি রওনা দিল আগে । মিত্তির বাবু হুঁকো তুলিয়া আবার টানিতে লাগে ।
তিনটি ছেলে আর একটা মেয়ে ছিল সনাতনের ঘরে । ছোটটা মরেছে ডাকাতের হাতে আর, মেয়ে সাপের কামড়ে । মেজ ছেলে দেখে জমি জমা আর, বড়োটা থাকে শহর কোলকাতা । গেল বছর উঠেছে দু'গোলা ধান এখনো লোকের কাছে এক গোলা পান ।
বয়স হয়েছে আশি রোগের মধ্যে হয়েছে একটু কাশি । হুঁকোর টানে কাশতে কাশতে যখন, মাথায় ওঠে রক্ত । মেজ বৌ এসে বেজায় বকে আর, বুকে তেল টেনে করে শান্ত । বছর পাঁচেক আগে হয়েছে পত্নী বিয়োগ । কলাবতী সুন্দরী ছিল সে আর ছিল কর্কট রোগ ।
এখন কেবলই থাকে একা বসে মাঝে মাঝে আসে জনা কটা লোক । হুঁকোর লোভে কেউ কেউ আসে কেউবা শুধু গল্প গুজব ।
এমনি করে দিন কেটে যায় । একদিন সন্ধ্যা বেলা হুঁকো টেনে মশাই কাশিতে কাহিল ফিরলো না শ্বাস আর । বাড়িতে কান্নার রোল আর, গ্রামে শোকের ছায়া । মাঝ রাতে বড়ো ছেলে আসলো শেষ রাতে শ্মশান যাত্রা । আগুনের মাঝে ভষ্মিভূত হলো সঙ্গে, পুড়লো সাধের হুঁকো ।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register