Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

ছোটগল্পে কুণাল রায়

maro news
ছোটগল্পে কুণাল রায়

মহাকালী

তিনি পরমা প্রকৃতি। তিনি অসোনি সম্ভবা। তিনি মুক্তি প্রদায়িনী। তিনি মহাকালেরও উর্দ্ধে। তিনি তন্ত্রবিদ্যার অধিশ্বরী। তিনি ব্রহ্মাণ্ড স্বরূপীনি। তিনি সকল সৌন্দর্য ও ঐশ্বর্যের আদিস্রোত। তিনি আদি ও অন্ত বৃত্ত থেকে চিরমুক্ত। তিনি মহাকালী। তিনি সুভাগা সুন্দরী। তিনি করালবদনী। তিনি পরম কল্যাণী। পুরাণ মতে শিবপ্রিয়া পার্বতী হচ্ছেন মহাকালী। দেবী কালচক্র নিয়ন্ত্রণ করেন। জীবনের ভাগ্য নিরূপণ করেন। সকল কর্মের যথাযথ ফল প্রদান করেন। দেবী অনন্ত। তাই যা অনন্ত, অসীম, তাকে কোনও বস্ত্রের দ্বারা আবৃত করা যায় না। দেবীর এক হাত বরমুদ্রা। অন্য হাত অভয় মুদ্রার ভঙ্গিমায় বিরাজমান। দেবীর রক্তস্নাত খড়্গ সকল অজ্ঞান ও অন্ধকারকে বিনষ্ট করে। তাঁর হাতের মস্তক সকল অহংকারের প্রতীক, যা তিনি নিজের হাতে ছেদ করেছেন। এই মস্তক মূলত অসুর শ্রেষ্ঠ রক্তবীজের। দেবীর উজ্জ্বল দন্তরাশি সত্ত্বগুণের প্রতীক। তাঁর রক্তিম জিওভা রজগুণের প্রতীক এবং তাঁর করালবদনী কায়া তমগুণের প্রতীক। দেবীর বামপদ যখন অগ্রসর হয়ে, তখন মহাপ্রলয় সূচিত হয়। এবং ডান পদ অগ্রসর হলে, দেবী কল্যাণ দায়িনী রূপে আবির্ভূতা হন! শিববক্ষে তাঁর পদার্পণ প্রমাণ করে যে তিনি মহাকালের মহাকালী হলেও, তাঁর উর্দ্ধে। এই রূপে তিনি দক্ষিণাকালী রূপে পূজিতা হন। দেবী এখানে প্রশান্ত, স্নিগ্ধ, ভক্তবৎসলা। চামুন্ডা রূপে দেবী সংহারিণী। চন্ড ও মুন্ডকে বধ করবার পশ্চাতে দেবী চন্ডী তাঁকে বর দান দেন যে সংসারে তিনি চামুন্ডা রূপে পূজিতা হবেন। দেবীর কটিদেশে হস্ত বিন্যাস সকল কর্ম স্খলিত হয়েছে, এই ভাব প্রকাশ করে। তাঁর গলদেশে মুন্ডমালার উপস্থিতি তাঁকে নৃমুন্ডমালিনি মহাকালী করে তুলেছে। সংকট কালে তিনি শিবানী। প্রশান্ত কালে তিনি কৈলাশবাসিনি পার্বতী। আবার ভক্তের ঘরে ঘরে তিনি উমা মহেশ্বরী। কোটিকটি সূর্যের সমান তাঁর তেজরাশি বিচ্যুত হচ্ছে এই ব্রহ্মাণ্ড প্রতিপালনের শুভ উদ্দেশ্যে। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত তাঁরই মধ্যে স্বমহিমায় বিরাজ করছে। এই বিপুল সৃষ্টি তাঁর থেকেই সূচিত হয়, এবং তাঁর মধ্যেই বিলীন হয়ে যায়। অখণ্ড, অসীম ও অপরাজেয় !!
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register