Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

ছোটগল্পে আদিল সাদ

maro news
ছোটগল্পে আদিল সাদ

হৃদয় কণ্ঠ যার আবৃত্তির স্পন্দন কবিতার কারুকাজ : মেহেদী হাসান আকাশ

আদিল সাদঃ শূন্য আকাশ নামটি হয়তো অনেকেই জানেন, আমার প্রথম স্পন্দন ও আকাশ নামটির সাথে পরিচয় ইউটিউব থেকে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের চিঠির একটি আবৃত্তি শুনে। তারপর ম্যাসেনঞ্জারে আলাপ বন্ধুসুলভ কথাবার্তা। হঠাৎ একদিন সরাসরি দেখা, চায়ের কাপে আড্ডা আর গল্প। কবিতায় নতুন কিছু সৃষ্টির জন্য ভালো কিছু সিদ্ধান্ত ও পরামর্শ নেওয়া। কবিতার প্রতি আকাশের রয়েছে গভীর প্রেম। কবিতার ভিতর সেই প্রেমকে আকড়ে ধরে, কণ্ঠে একটা নেশা তৈরি করেন, যা সৃষ্টি হয় কবিতা প্রেমী পাঠকদের জন্য স্বপ্নময় একটি অধ্যায়। তিনি একজন ভয়েজ আর্টিস্ট, আবৃত্তিকার ও প্রশিক্ষক। কণ্ঠ দিয়েছেন বহু কবিতায়, বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনে, ডকুমেন্টারিসহ কণ্ঠশিল্পের বিভিন্ন মাধ্যমে। বর্তমান প্রজন্মে অনেকেই ভালো আবৃত্তি করেন, কিন্তু একজন সফল মেহেদী হাসান আকাশ হতে পারে ক’জন! যে আকাশ আজকের আবৃত্তিকে গণমানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করছে। নিজেকে নিয়ে চর্চা, সাধনা, পরিশ্রম করে তার ছোট্ট ছোট্ট কাজগুলোকে জীবনের ডায়েরির পাতার মতন গুছিয়ে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য উপহার দিয়ে যাচ্ছেন।
এবার আসি মেহেদী হাসান আকাশের পরিচয়ে। পুরো নাম মেহেদী হাসান আকাশ, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বাবরখানা গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। শৈশবকাল কেটেছে বরিশালে, কলেজ জীবন চট্টগ্রামে এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবন কেটেছে ঢাকাতে। বর্তমানে ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন। বাবা মঞ্চ নাটক করতেন, ছোটবেলা থেকেই নাটক, গান, আবৃত্তি, একক অভিনয়সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে যুক্ত ছিলেন। কলেজ জীবন থেকে শুরু করেন সাংগঠনিক চর্চা। তির্যক নাট্য গোষ্ঠী, রংধনু সাংস্কৃতিক পরিষদ, পান্থজন, খামখেয়ালি সভা, হিমু পরিবহণ, রবীন্দ্রালয়সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনে চর্চার মাধ্যমে তিনি নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন। দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে কাজ করেছেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে।
মেহেদী হাসান আকাশ এর সাংগঠনিক আবৃত্তি চর্চা শুরু হয় প্রমা আবৃত্তি সংঘের মাধ্যমে, পরে কিছু দিন যুক্ত ছিলেন স্বরুপ আবৃত্তি সংঘে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে যুক্ত হন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আবৃত্তি সংঘের সাথে। সাংগঠনিকভাবে আবৃত্তি চর্চা করছেন ১০ থেকে ১২ বছর হলো, বাংলাদেশের প্রায় সকল স্বনামধন্য আবৃত্তি শিল্পীর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এক যুগ চর্চা, সাধনার ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে পৌঁছে দিয়েছেন কবিতা প্রেমী, পাঠক, শ্রোতাদের ভালোবাসার একটি স্থানে। আবৃত্তিকে পেশাদারিত্বের জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তিনি নিজে পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে কাজ করেন এবং অন্যকেও উৎসাহিত করেন। তিনি বিশ্বাস করেন, আবৃত্তি ও হতে পারে জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম। মেহেদী হাসান আকাশ স্বপ্ন দেখেন, আবৃত্তি হবে গণমানুষের জন্য। আবৃত্তি একদিন মেঠোপথ ধরে পৌঁছে যাবে সেই অজ-পাড়া গাঁয়ে, যেখানে এখনো আলো গিয়ে পৌঁছায়নি।
তার যে সকল কবিতা আবৃত্তি মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বনলতা সেন, যেতে চাস চলেই যাবি, হঠাৎ দেখা, জুলমত মিয়ার মে দিবস, যাত্রাভঙ্গ, এবাদত, সোনার তরী, আকাশলীনা, স্বাধীনতা এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো, শুভেচ্ছা, প্রস্থান, ছুটি, পায়ে চলার পথে, আমার পরিচয়, অমলকান্তি, তোমার বাংলা তোমার বাঙলি তোমার বাংলাদেশ ইত্যাদি। মেহেদী হাসান আকাশ ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশনা করেছেন, যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে। বর্তমানে “বাংলা আমার” নামে একটা আবৃত্তি সংগঠন চালাচ্ছেন। বাংলা আমার এর মাধ্যমে দেশে এবং দেশের বাহিরের বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষকে আবৃত্তি ও শুদ্ধ উচ্চারণ এর উপরে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন এই তরুণ আবৃত্তিকার। আবৃত্তিকে সকলের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য কবিতা আবৃত্তির পাশাপাশি প্রশিক্ষণের ভিডিও প্রকাশ করেছেন ইউটিউবে। তার এই চর্চা, সাধনা, পরিশ্রম, কবিতার প্রতি ভালো লাগা, বাংলা কবিতা ও সাহিত্যকে নিশ্চয়ই আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। সামনে তার হাত ধরে সহস্র আকাশে জন্ম হোক, বাংলা সাহিত্য আরো সমৃদ্ধি হোক, আগামীর তরুন্যের পথে চলুক সাংস্কৃতিক চর্চা, তার উত্তরীয় মঙ্গল কামনা করছি।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register