Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

গুচ্ছকবিতায় শিপ্রা দে

maro news
গুচ্ছকবিতায় শিপ্রা দে

১। বাইশে শ্রাবণ

আকাশ ভরা জ্যোৎস্না ছিল দিনটা হোলো বাইশে শ্রাবণ চারিদিকে চাঁদের থৈ থৈ লুকিয়েছে বৃষ্টি তখন।
শান্ত স্নিগ্ধ পূর্ণিমার চাঁদ জ্যোৎস্না চন্দন ঝরে পড়ে কবি গুরুর শেষ পালঙ্ক গিয়েছিল মালায় ভরে।
অন্তিম যাত্রায় ঈশ্বর যেন নিদ্রামগ্ন আছে শুয়ে। পাঞ্জাবী আর কোঁচা ধুতি বুকের কাছে পদ্ম ছুঁয়ে।
জনস্রোতে ঠাকুর বাড়ির প্রবেশ দ্বার যে ভেঙে পড়ে চিরবিদায় নিল ঠাকুর শ্রাবণের দিন বিষাদ করে।
হৃদয় মাঝে আজও ঠাকুর আছো সবার মনে প্রাণে শতকোটি প্রণাম জানায় ভারতবাসী জনে জনে।

২। দ্বিতীয়ার চাঁদ

পশ্চিম আকাশে দেখি বাঁকা চাঁদ ভাসে কাস্তের মতো লাগে ঝিলমিল হাসে। দ্বিতীয়ার সরু চাঁদ দিন দিন বাড়ে। বাঁকা হাসি হেসে বলে কি দেখো আমারে! এই বুঝি দিন মোর স্বপ্ন জাল বোনে অমাবস্যা হাসে শুনে দিন তার গোনে। ধীরে ধীরে চাঁদ তার গোল রূপ নেয় পূর্ণিমার-চাঁদ আসে ভরা আলো দেয়। দ্রিম দ্রিম ক্ষয় হয় গোলাকার চাঁদ অমানিশা নিয়ে কালো আঁধারের রাত সব আলো নিভে যায় অহংকার শেষ এইভাবে আসা যাওয়া রয়ে যায় রেশ।

৩। তবু অপেক্ষায়

দুরন্ত যৌবনে ফুটেছিল মৌ মনে সোনা ঝরা রোদ্দুর চোখ যেত যদ্দূর গোলাপের কুঁড়ি মেলে অলিগুলো যেত খেলে সেই ক্ষণে প্রেম ধীরে এসেছিল মন নীড়ে।
কামনার বীজ ঢেলে চোরাপথে গেল ফেলে মনে ছিল বিষভরা কখনো কি যায় ধরা! হৃদয়ের কোণে কোণে মায়া মোহ জাল বোনে সুখ পাখি গেল উড়ে খাঁচা থেকে বহুদূরে।
দুটি চোখ ভরে জলে বিরহের দাবানলে ধিকিধিকি জ্বলে ওঠে প্রেম পোড়া ফাগুনের ভালোবাসা কেঁদে মরে জীবনের খেলা ঘরে বেদনার বালুচরে স্মৃতি গুলো ঘিরে ধরে।
ছিল সে'তো মরীচিকা ছায়া পথে নীহারিকা জীবনের শেষ দিনে কেন সখি সাথী বিনে! পিছে ঘুরে দেখি যেই বাঁক ঘুরে গেছে সেই সারাদিন পথ চেয়ে ঝরা পাতা এলো ধেয়ে।
একদিন ছিল সবে আজ কেন একা তবে জোছনার ঝিকিমিকি পড়েনা তো ধিকিধিকি উঠোনের এক পাশে চেয়ে থাকা তবু আশে আঁধারের চুপ কথা জোনাকিরা গোনে ব্যথা।

৪। অমোঘ অনুভব 

ভাত ঘুমের নেশা কাটলে জানলা দিয়ে দেখি নীল গগনে মেঘ আঁচলে ঢাকল তাকে সেকি ! হঠাত্ করে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামে সাঁঝে উঠোন জুড়ে মেঘ কন্যা নুপুর পায়ে বাজে।
ভিজেই গেল জামা কাপড় তুলতে গিয়ে দেখি ফ্যালফেলিয়ে দেখছি নাকি অকম্মার ঢেকি! কার্নিসের ধারটা ঘেঁষে কাকটা ভিজে চুপ পায়রা গুলো মনের সুখে করছে বিদ্রুপ!
মধু গয়লা কচুপাতায় ভিজেই একসার পাঁচিল পরে আচার শিশি ভিজছে যেন কার! ফেরিওয়ালা দিনের শেষে ক্লান্ত হয়ে ফেরে রাস্তা মাঝে বৃষ্টি এসে ভীষণ ভাবে ঘেরে।
চিন্তা হলো তোমার কথা ভিজবে তুমি আজ ধুততারিকি ভাবছি কি'যে ফেলে সকল কাজ! দৌড়ে গিয়ে কাপড় তুলি ভিজি মনের সুখে নোনা জলের উষ্ণ ধারা পড়ল যেন মুখে।
অবহেলার সুপ্ত ব্যথা জেগে উঠলো আজ নিজেকে করি সমর্পন সরিয়ে ফেলে লাজ। নীল শাড়িটা লেপ্টে গেল জড়িয়ে আছে গায়ে বাদল দিনে অমোঘ নেশা আমার পায়ে পায়ে।
চাপা কান্না চোখের আড়ে ছিল অনুক্ষণ। পিঁজরা খুলে গাল ভাসিয়ে শীতল করি মন একটু খানি স্বস্তি পেল মনখারাপি বেলা খুব ভিজছি খুব ভিজছি মেঘের সাথে খেলা
অঝোর ধারা নোনা জলের শ্রাবণী বিপ্লব মন ময়ূরী পাখনা মেলে অমোঘ অনুভব।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register