Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

গুচ্ছ ছড়া-কবিতায় মালিপাখি 

maro news
গুচ্ছ ছড়া-কবিতায় মালিপাখি 

১। উড়ান

পাতা তোকে চুমু খাই ! চুমু ! তারা গুলো জ্বলে মিটি মিটি ! কোনো হুঁশ নেই ! ঘাড় গুঁজে লিখি শুধু চিঠি আর চিঠি -- ! পাতা তোকে চুমু খাই ! চুমু ! তোর বুকে গড়েছি যে বাড়ি ! কেন ? কোনো এক কিশোরীর চোখে যদি পাখি হতে পারি !
ঘাস ! তুমি ভালো আছো ? দ্যাখা করা ভুলে গেছি ? তাই বুঝি ? বেশ , তবে আজ এই রণসাজ পরে বলো কাকে খুঁজি ? মাঝে মাঝে রাঙা হাঁস সেজে , পালকের রঙ রোদে নাড়ি ! কেন ? কোনো এক কিশোরীর চোখে যদি আলো হতে পারি !
নদী তোকে ভালোবাসি ! নদী তোকে আলোমাসি বলে ডাকি ! ডেকে , ডেকে ছুটে যাই ! রাত ভোর তোর কোলে শুয়ে থাকি ! শুয়ে , শুয়ে তারা নাম লিখি ! ঘেমে গেলে হই মরুচারী ! কেন ? কোনো এক কিশোরীর চোখে যদি নদী হতে পারি !
মরীচিকা ! মরি মরি ! হুলো রাজা , মিনি পরী, ওড়া বুলি ! এসো এসো ফিরে এসো ! হীরে এসো , চুনী এসো মুঠো খুলি ! মুঠো খোলো ! খুলে বাঁধো তাকে ! চলো পথ, চলো মেধা সারি ! কেন ? কোনো এক কিশোরীর চোখে যদি ভাষা হতে পারি !

২। আমি জেগে দেখি

আকাশের বোন নীল ঢেলে বলে সামনে কে ? দোপাটির চারা বেড়ে বেড়ে জলে নাম লেখে !!
আকাশের ভাই হুস্‌ করে যায় হাঁস এঁকে ! পাহাড়ের চূড়ো সেই চিঠি পায় ঘাস থেকে !!
চারিদিকে মায়া , হও তার মানে চুপ যদি ! জলছবি আঁকে কবিতায় , গানে রূপ নদী !!
ডিঙি গুলি ভাসে সোনা নদীটার কূল ধরে ! আমি জেগে দেখি রামধনু হার ফুল ভোরে !!

৩। সাথী

পাগল ছেলে ! শোনায় কেরে একলা নাকি তুই ? আঁধার ঘরে কাঁদিস বসে – আয়না তোকে ছুঁই !
গেছিস বুঝি পাথর হয়ে , নেইকি মনে বল ? ছোটার তেজি সাহস নিয়ে সামনে হাঁটি চল -- !
কাঁসাই আছে , তিতাস আছে , মেঘনা আছে আর ; বাঁধার পাহাড় থাকনা যতো থাকনা যতো ভার -- !
আঁধার কেটে দু দিন বাদে উঠবে নেচে বুক ! বিজয় মালা সবাই দেবে দেখবি কতো সুখ !
এই ছেলেটি আয়না কাছে আয়না সাথী হই ! এইনে হাতে ছড়ার দেশের সাতটা খুশির বই !

৪। টাপুর-টুপুর

মেঘরা এখন জল টুপ -- টুপ মেঘরা এখন জল -- চল ছুটে যাই নামতা পাড়ায় । নামতা পড়ি চল ।
ঝলমলানো পোষাকটি বেশ । বাজায় কে শাঁখ মন ? বুলবুলি দেশ গান ধরেছে , পুঁতিরা সাত বোন !
তিনটি পুঁতি মাটির কুটির ! বাকিরা সব ফুল ! আয় জোনাকি , পাহাড়ী পথ ; নাচছে নদীর কূল -- !
ধান ঝুর ঝুর , গান ঝুর ঝুর , বাজলো নুপুর যেই ; জুঁই দরিয়া বললে হেসে - আরতো সময় নেই !
আর দেরি নয় , আর দেরি নয় ,নামতা পড়া যাক । তিন খানা ঘর । নামতা পড়ি । একশো তারার ঝাঁক -- !
নামতা শুনে নাম ভুলে যায় । চরকি মনে তাই সাজলো ভোরের শাপলা সানাই মেঘনা কুটুম ভাই !
মেঘনা পাগল , নামতা পাগল , আয়না ও মেঘ আয় -- ! এই ছড়ালুম টাপুর-টুপুর -- পানসি ভেসে যায়।

৫। শুভ হোক

কবি মানেই লোকটা পাগল । লোকটা বাজে লোক । কবি লেখেন আগামি দিন । সবার শুভ হোক ।
ওরা সবাই কি মেধাময় । চোখে মেধার ঘোর । কবি খোঁজেন রূপকথা আর নতুন আলোর ভোর ।
ওরা সবাই নেয় কেড়ে নেয় কবির সকল মান । পাতায় পাতায় কবি ছড়ান ভালোবাসার গান ।
ওরা সবাই নিজে বাঁচে । পোড়ায় কবির মুখ । কবি লেখেন পারুল, পলাশ সবাইকে দাও সুখ ।
ওরা সবাই খুশির পাহাড় । ওরা সবাই বীর । ওদেরতো নয় , ওদের কাছে কবির নত শির ।
কবির গায়ে ছড়ায় ওরা মেধার কালো ছাপ । কবি বলেন ও দয়াময় , দাও ধুয়ে সব পাপ ।
কবি একাই পথের পথিক । ইতিহাসের দাস । মাথা দোলায় গোলাপ , টগর , সবুজ কচি ঘাস ।
কবি মানেই লোকটা পাগল । লোকটা বাজে লোক । কবি লেখেন আগামি দিন । সবার শুভ হোক ।

৬। ফুল হয়ে যাই

ঝরনা পাতায় রঙের বাড়ি , দু-একটা রঙ তাই কুড়ালাম । কেউ বা শালিক কেউ বা ফিঙে , এই নিয়ে এক রূপকথা গ্রাম ।
পাহাড় ছুঁয়ে শীতল হাওয়ায় কোলাজ আঁকে নীল দুটি চোখ । পাতায় পাতায় পথের মিছিল --- কেউ বা দোয়েল কেউ বা চাতক ।
ঢেউ বয়ে যায় ঘাসের ডগায় -- নাম লেখে এক ফুল ঘোড়া তার । বাউরি বাতাস আপন মনে সুর বোনে রোজ চুমকি পাতার ।
মেঘনা মেঘের হাতছানিতে অনুভূতির বীজ ওড়ে তাই অলীক ভূবন কেবল ভাবে মাঠ পেরিয়ে ফুল হয়ে যাই ।

৭। মায়াতরু

গাছটি যেন নদী , দেয় ছড়িয়ে প্রীতির মোহর একলা এদিক ওদিক !
গাছটি যেন তারা , ভালোবাসার ফুল বুনে দেয় রোজ আমাদের পাড়ায় !
গাছটি যেন পাখি , শুধুই বলে ও ভাই তোরা সবাই সুখে থাকিস !
গাছটি যেন বাঁশি , বাজতে বাজতে দেয় ছুঁয়ে মন পাগলি রাঙামাসির !
গাছটি যেন ঘোড়া , ছুটতে ছুটতে পথ গুলো রোজ রূপকথাতে মোড়ায় !
গাছটি যেন আশা , আমাকে রোজ ভুবন ডাঙার ওড়না মেঘে ভাসায় !
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register