Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

গল্পে ডরোথী দাশ বিশ্বাস

maro news
গল্পে ডরোথী দাশ বিশ্বাস

সত্যিই, মিস ইউজ

সে এক চৈত্রদিনের কাহিনী, ঘটনাচক্রে আজ মনে পড়ে গেলো। ননদ নন্দেজামাই এলো দাদা বৌদির বাড়ি। সকালে এসে বিকেলে ফিরে যাওয়া। তারপর নিম্নলিখিত কথোপকথন--- ঘটনার ঘনঘটা--- "মনাদা তরকারী কেটে দেয়।" কে রান্না করে সেটা উহ্য রেখে--- নন্দেজামাইকে ডেকে ননদ বললো, "দেখো দেখো--- মনাদা এঁচোড় কাটছে।" (বৌদি মনে মনে বললো) বেশ করেছে, কেটেছে তো বেশ করেছে ---(জনান্তিকে)সব্জী মনাদাই কেটে দেয়। মনাদাকে একান্তে পেয়ে--- "অ্যাই মনাদা, তুই সব্জী কাটিস কেন? বৌদির তো দূর সম্পর্কের ভাগ্নী এখানেই জাঁকিয়ে বসেছে, ছেড়ে দে, ওরাই কেটে নেবে।" ---আরে, বুঝিস না, অনেক ব্যাপার আছে। দেখে শুনে কাটতে হয়, বাজার ঘুরে জোগাড় তো আমিই করে আনি, যেটা সহজ সেটা ধরে টানবে, আগের সব্জী আগে, পরের সব্জী পরে, এসব দেখেশুনে কাটতে হয়। নইলে মিস ইউজ হয়। তাছাড়া আমার সব্জী কাটতে সময় বেশি লাগেনা। দেখেছিস--- ওলকপির টুকরোগুলো কেমন সব সমান ঘনকের মতো? পেঁয়াজের খোসার নীচে এই যে কালো কালো পাউডারের মত--- এগুলোকে বলে অ্যাসপারগিলাস। এগুলো শ্বাসকষ্টের বা হাঁপানির কারণ। এরকম কতদিকে যে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হয়--- --- এ সব না হয় বুঝিয়ে দিবি, তাই বলে কি আজীবন সব্জী কাটবি তুই? --- যার যেমন ভাগ্য! এসব বলে লাভ নেই। কোনদিন্ সে সংসারের কাজ করলো! সারাজীবন কাজ তো করলাম আমি। ননদ নন্দে চলে গেলো। সব ছাপিয়ে কানে বাজছে "অ্যাসপারগিলাস", হা হা হা--- ওটার উচ্চারণ অ্যাসপারজিলাস, আমি বোটানির কি না! তাই বলতে পারলাম। নাহ্! সর্বসমক্ষে নয়, মনে মনে। ফল হলো --- "আমি আর তরকারী কাটতে পারবো না। তোমরা যা পারো করো। আমার নিজের অনেক কাজ আছে। কোনোদিন তো কাজ করলে না।" --- সে ঠিক আছে। তরকারী কাটতে হবে না। কিন্তু আমি কোনো কাজ করিনি জীবনে, এটা যে বললে, এটা কি ঠিক? ---ঠিক বলেছি। কোনদিন কি কাজ করলে তুমি? আর আমি কি হাত গুটিয়ে বসে ছিলাম? মনে রেখো, তোমার পাশে সবসময় আমি ছিলাম। (মনে মনে বললাম--- কেমন মুখ মুছে "না" বলে দিলো রে! এ সংসারে আমার অবদান অস্বীকার করলো কি করে এরা?) পরদিন খেতে বসে: --- এটা কি? ওল কপির ডালনা?সেই কবে কেটে দিয়েছিলাম! আজ খাচ্ছি! ---আমার অভ্যেস কারো কোনো অভিযোগ বা অনুযোগের চটজলদি কোনো উত্তর না দেওয়া। ভাগ্নী কারো কোনো কথা মাটিতে পড়তে দেয় না। সে বলে বসে--- ---মেসো, কি যে বলেন? এটা তো আজ মাসী কেটেছে। একদম আপনার মত করে কেটেছে, তাই বুঝি বুঝতে পারেননি। [মনে মনে বলি: এভাবেই কেউ কেউ নিজের মনের মত করে অন্যের ভাবমূর্তি তৈরি করে পাবলিক করে ছেড়ে দেয়। সেটা যদি নেগেটিভ পাবলিসিটি হয়, তাহলে তার ফল হয় ভয়ঙ্কর। ত্রিশ বছর ধরে এভাবেই চলতে চলতে কোথায় গিয়ে ঠেকবে এ নদীর জল? কি বললে? তিরিইইইশ বছঅঅঅর? মানতে হবে তার সহনশক্তিকে। এভাবে কোনো কোনো সংসার ভাঙা যায়, সব সংসার নয়।]
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register