Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে অনিরুদ্ধ গোস্বামী (পর্ব - ২৬)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে অনিরুদ্ধ গোস্বামী (পর্ব - ২৬)

অদৃশ্য প্রজাপতি

কি ভাবে দেখবো আথিরা কে ভেতরে ?মুহূর্ত চিন্তা করে একটু গম্ভীর হয়ে নিলাম। খুঁজে খুঁজে এতদূর এসে এতদিন ,ভ্যানিশ হয়ে থাকার জন্য দু চার কথা তো শোনাতেই হবে।তাতে একটা বেশ মজা হবে। নক করলাম দুবার ,দরজার নব হাত দিয়ে ডান দিকে ঘোরাতে হালকা একটা শব্দ হলো লক খোলার। উৎকণ্ঠা নিয়ে হালকা করে ডাকলাম "আথিরা" ,কয়েক মুহূর্ত কাটলো। রসবোধ আছে বলতে হবে ,কে কাকে চমকায় দেখা যাক। আথিরা- বলে আলতো করে দরজাটা খুলে ঢুকলাম। দেখি আথিরা চেয়ে আছে তার কাজল পরা বড় টানা টানা চোখ নিয়ে আমার দিকে ,মুখে অনাবিল হাসি ,ফটো তে , আর তাতে সাদা মালা দেওয়া। আর নিজেকে ধরে রাখা গেল না। ওখানেই বসে পড়লাম। অন্ত :স্থল থেকে উৎসারিত বেদনার ঢেউ এসে যেন গলায় এসে আটকে রইলো, আর তা চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়তে লাগলো। একটু সামলে নিতে বুঝলাম যে "ছেলেদের ও ব্যাথা লাগে ও সেটা খুব ভেতরে । কেন কিভাবে ?প্রশ্নের ঝড় উঠছে মনে। বয়স্ক ভদ্রলোক সহানুভূতি নিয়ে কাঁধে হাত রাখলেন ,বললেন " সন উই আর রিয়েলি সরি হোয়াট হ্যাপেন্ড টু ইউ ...এন্ড দি কাইন্ড অফ পেন ইউ আর গোয়িং থ্রু। আরো জানালেন "এই ফার্মা বিসনেস আমাদের বহুদিনের পারিবারিক ব্যবসা। বর্তমানে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি আর অন্যান্য লোকাল কোম্পানির সাথে প্রতিযোগিতায় আমাদের অবস্থা ভালো যাচ্ছিলো না। আথিরার বাবা আমার বড় ভাই ,আর তার মা অনেকদিন আগে মারা গেছেন। আথিরা ছিল এই কোম্পানির একজন অংশীদার ও ডিসিশন মেকার। যখন আমরা শুনলাম তোমাদের কোম্পানি নতুন এই প্রোডাক্ট টি বাজারে আনবে আর তার ভবিষৎ খুবই ভালো তখন ই সে নিজে উদ্যোগ নিয়ে এর খুঁটিনাটি জোগাড় করতে নেমে পরে। উদ্দেশ্য একটাই ছিল কোম্পানি কে আবার লাভের মুখ দেখাবে। এর্নাকুলাম গিয়ে সে ঠিক করলো সব খুঁটিনাটি তথ্য জোগাড় করে আনব। এই করতে গিয়ে বুঝিনি সে এতটা ঝুঁকি নিয়ে নিয়েছে। সেখানেই তোমার সাথে দেখা করে। প্রথমে ভেবেছিলো বেসিক কিছু ইনফরমেশন নিয়ে চলে আসবে ,কিন্তু তোমার সাথে যত পরিচিত হতে থাকে সে আরও তোমার জীবনের সাথে জড়িয়ে পরে। চলে আস্তে পারেনি কারণ সেও যে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলো। " নীল: এটা ঠিক যে এই কর্পোরেট একটিভিটি কোনো ওয়ার এর থেকে কম নয় ,মার্কেট দখলের লড়াই। উনি আরো বললেন "সে হয়তো গিয়েছিলো তোমাকে ফাঁকি দিয়ে ইনফরমেশন নিয়ে চলে আসতে কিন্তু ফিরে এসেছিলো তোমার ভালোবাসাকে জড়িয়ে নিয়ে। আর নিজের সত্তা তোমাকে সম্পূর্ণ রূপে সমর্পন করে দিয়ে । আর আজ দেখলাম সে ভুল করেনি। " নীল : আমি কতবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি।... সে যেন একেবারে এ উবে গেছিলো। আমাকে তো একবার সব বলতে পারতো ... উনি বললেন "সে বুঝতে পারে এ ভাবে বেশি দিন লুকিয়ে রাখতে পারবে না এবং না পেরে সব হয়তো তোমাকে বলে ফেলবে ,কিন্তু শুনে তাকে তুমি কি চোখে দেখবে ?আথিরা তোমাকে হারানোর খুব ভয় পেতো আর তোমার চোখে ছোট হয়ে যাবার ভয় পেতো ,তাই সে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে তোমার থেকে। চেরাই থেকে আসার পর থেকে অপরাধ বোধ গ্রাস করতে থাকে। এখানে এসে তার ইনফরমেশন অনুসারে আমরা কাজ ও শুরু করি। আর সে ক্রমাগত নিজেকে গুটিয়ে নিতে থাকে। আমাকে বলতো সব। আর কথা দিইয়ে নিয়েছিল যে আমিও যেন নিজে থেকে তোমাকে না যোগাযোগ করি। নিজেকে বিশ্বাসঘাতক ভাবতো আর বলতো ভগবান ও ক্ষমা করবে না হয়তো, ক্রনিক ডিপ্রেশন এ ভুগতে থাকলো ডাক্তার অনেক দেখানো হলো কিন্তু ডাক্তার কি করবে যদি রোগী না চায় সেরে উঠতে। দিন কে দিন অবস্থা আরো খারাপ হতে লাগলো। সারা দিন তোমার আর তার ফটো র দিকে চেয়ে থাকতো আর জল গড়াতো চোখ দিয়ে। বাঁচার ইচ্ছাটাই আর ছিল না তোমাকে ছাড়া ,আবার হারাবার ভয় যদি সব তোমার কাছে স্বীকার করে আর তুমি দূরে সরিয়ে দাও।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register