Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে নীলম সামন্ত (পর্ব - ১৬)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে নীলম সামন্ত (পর্ব - ১৬)

ব্রহ্মমুখী সূর্য ও রেবতী রেবতী ঠোঁট

ব্রহ্মমুখীর বেশিরভাগ পর্বই মাঝরাতে লেখা৷ এখন ঘড়িতে প্রায় বারোটা বাজে৷ চারপাশ অন্ধকার। একমাত্র আলো বলতে আমি আর আমার এই ইলেকট্রনিক ডিভাইসটি৷ বিগত কিছু দিন ধরে AI নিয়ে শোরগোল পড়ে গেছে৷ AI অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি। বিজ্ঞানের এই আবিষ্কার সবই পারে৷ একটি ভিডিওতে দেখলাম AI দেখিয়ে দিচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের সাম্রাজ্য কেমন ছিল? সে এক বিশাল প্রাসাদ৷ অভিনব তার চৌহদ্দি। রংবেরঙের ফুলে সাজানো৷ কেউ আবার দেখালো AI কবিতাও লিখছে। তবে কবি সাহিত্যিকদের কি হবে? বিজ্ঞানের এমন উন্নয়ন যদি মানুষের মন পড়ে ফেলে তাহলে তো সমস্যার লাইন পড়ে যাবে৷ যাইহোক পড়াশুনো এবং আলোচনার মাধ্যমে বুঝলা বস্তুটি মানুষের আবেগ ছুঁতে পারে না৷ এই স্বাভাবিক নয় কি? মানুষই মানুষের আবেগ ছুঁতে পারেনা যন্ত্র পারবে? তবে ব্রহ্মাণ্ডের সম থেকে জটিল কেন মানুষের মন? না শুধু জটল না সব থেকে সরলও। যেভাবে মানুষই উদ্দেশ্য সাধন করে সেভাবে মানুষই তো পারে ভালোবাসতে।

ভালোবাসা বড় অন্ধ আর গভীর অসুখ৷ ভীষণ জ্বর হলে ঘোর তৈরি হয়। ভালোবাসাও ওই ভীষণ জ্বরের সাথে আরও অনেক কিছু। কত কবিতায় আসে এই সব কথা। জানালা দিয়ে ঠাঁয় দেখছি বৃষ্টি পড়ছে৷ অদ্ভুত শব্দ। বেগ অনুপাতে বাড়ছে কমছে। এই সময় আমি একমাত্র আমার আত্মার। হাজার এক কথপোকথন। লড়াই। দাঙ্গা। যে কেউ ভাবতেই পারে পাগলের প্রলাপ। অথবা যেচে অশান্তি বয়ে আনার প্রকল্প৷ সে যে যাই ভাবুক। আমার তাতে কিচ্ছু আসে যায় না৷ আমার বাস যা নিয়ে তা তো আমারই।

এই যেমন এখন মনে মনে ভাবছি আত্মার সাথে আত্মার মিলন আর মহাবিদ্যার কথা। আগুনকে সাক্ষী মানতে হলে ভেতরের আগুনে চকমকি ঠুকতে হয়। তবেই সত্যের স্থান। এই সত্য কোনদিন বহুমুখী হয় না৷ না কোন রঙ মাখা সঙ। তবুও যারা ভালো থাকা বিলনোর নাটক করে নিজেকে মেকাপ আর কথামালায় লুকিয়ে দেয় তাদের উদ্দেশ্যে এক স্কুপ আইসক্রিম বরাদ্দ করলাম৷ কারণ তাদের জানা প্রয়োজন গলনশীল আসলে একটা প্রক্রিয়া। যার তাপমাত্রা একটু বাড়লে দহনও শুরু হয়। আমার মতে সমস্ত দাহ্য বস্তুই সত্যের পূজারী। বলা যায় ব্রহ্মের পূজারী।

প্রতি পর্বে ফুলের কথা বলি। ফুল আমাদের ঝরে পড়া শেখায়। নিজের সমস্ত রূপ অহংকার বিলিয়ে টুক করে সবার মাঝে ঝরে পড়তে শেখায়। আর নক্ষত্র - যা বেঁচে থাকতে শেখায়। যুগের পর যুগ আলো দিতে শেখায়। আমাদের ঝরে পড়া জীবনের ধর্ম কিন্তু আলো দেওয়া নিজেদের মহাবিদ্যামুখি আবেগ। এর পর আসি ঠোঁট সম্পর্কিত আলোচনায়। আত্মার ধারালো ঠোঁট। যাকে প্রয়োজনে লিপস্টিক পরিয়ে সাজাতে হয়। আর অহেতুক তীর-বর্ষণের দিকে ঢাল হিসেবে এগিয়ে দিতে হয়৷ জানেন তো ঠোঁটই আমাদের মুখমন্ডলের একমাত্র অদ্ভুত দেখনদারি সৌন্দর্য। যাদের তা সুন্দর সুচারু তারা জানে অহমিকায় প্রজাপতি বসে থাকার সুখ।

এই রাত প্রজাপতি দেখার না হলেও নক্ষত্র দেখার নয়। ঘরে কেবল অন্ধকার আর অনেকগুলো ভাঙা অন্ধকার। মাঝে আমি একা অনন্তের জাগরণ। যাকে প্রেম বলে আখ্যা দিলে ভুল করা হয়।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register