Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে রীতা পাল (পর্ব - ১৪)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে রীতা পাল (পর্ব - ১৪)

যাও পাখি দূরে

আপনার ছেলে নয়ন আর আমার মেয়ে কুমারী,ওরা খুব ভালো বন্ধু। নয়ন কি বাড়িতে আছে? আমি একটু ওর সাথে কথা বলতে চাই।” মহিলার মুখটা কেমন ফ্যাকাসে হয়ে গেল। বলে,“ নয়ন,নয়ন,একবার বাইরের ঘরে এসে------ দেখ,কুমারীর মা এসেছেন।” কিছুক্ষণ পর নয়ন ঘর থেকে বেরিয়ে এলো। সবিতা দেবীকে দেখেই জিজ্ঞাসা করল,“ কুমারী কেমন আছে কাকিমা? এখন একটু ভালো আছে?” “ তুই কেমন আছিস?” “ আমি এখন ঠিক আছি।” নয়নের মা ট্রেতে করে চা-বিস্কিট নিয়ে এলো। সবিতা দেবী নয়নের মা’র কাছে জল চাইলেন। নয়নের মা জল আনতে ভেতরে যেতেই সবিতা দেবী নয়নকে সরাসরি প্রশ্ন করলেন,“ তোর মা জানে তোরা দীঘা গেছিলি?” “ আগে জানতো না,পরে জেনেছে। তাছাড়া সেদিন আমাদের দিঘা যাবার কথা ছিল না। আমরা দীঘা যাবো বলে বের হয়নি। কোলাঘাটে ডিনার করে ফিরে আসার কথা ছিল।” নয়নের মা জল নিয়ে ঢুকতে নয়ন কথা থামিয়ে দিল।

সবিতা দেবী গ্লাসটা নিয়ে এক নিঃশ্বাসে জলটা শেষ করলেন। নয়নের মা জিজ্ঞাসা করল,“ কুমারী এখন কেমন আছে?” সবিতা,“ এখন ভালো আছে। আজ নিজে উঠে দাঁড়িয়ে জানলার সামনে গেছে।” “ সত্যি কি যে একটা অঘটন ঘটে গেল! আমরা তো এখনো ভুলতে পারি না সেই দিনটার কথা! দু’টো তাজা প্রাণ শেষ হয়ে গেল।” সবিতা দেবী নয়নকে বললেন,“ নয়ন, আমাকে একটু এগিয়ে দিয়ে আসবে?” “ হ্যাঁ কাকিমা,চলো,তোমাকে স্টেশনে ছেড়ে দিয়ে আসি।” সবিতা দেবী নয়নের মাকে বিদায় জানিয়ে রাস্তায় নামল। নয়নকে বলল, “ এবার আমায় বল তো,সেদিন ঠিক কি ঘটনা ঘটেছিল?” “ সেদিন পরীক্ষা শেষে ললিতদা এসেছিল।” “তুই ললিত কে চিনিস?” “ হ্যাঁ,কেন চিনবো না। মাঝে মাঝে কলেজে আসত। রঞ্জনা আর কুমারীর খুব ভালো বন্ধু ছিল। রঞ্জনা ওর সাথে আমাদের আলাপ করিয়ে দিয়েছিল। খুব হাসি খুশি ভালো ছেলে ছিল। বোম্বে থেকে আসলে এখানে আসত। কলকাতাতেও ওর একটা ফ্ল্যাট আছে। সেখানে আমরা একদিন আড্ডা মারতে গিয়েছিলাম। "তারপর" ললিত দা বলল,"নতুন গাড়ি কিনেছে সবাইকে খাওয়াবে। চল সবাই মিলে কোলাঘাটে ধাবায় যাই রাতে ডিনার করে ফিরে আসব। কুমারী প্রথমে রাজি হয়নি। বলেছিল,তোমরা ওকে অতদূরে ছাড়বে না।' তারপর কাকুকে ফোন করে রাজি করে নিয়েছিল। আগে যদি জানতাম এমন দুর্ঘটনা ঘটবে তাহলে কি যেতাম?” " কলকাতায় কোথায় রে ওর ফ্ল্যাট? " ঐ তো বেগ বাগানের কাছে,দারুণ সুন্দর ফ্ল্যাট।” "তোরা ওখানে মাঝে মাঝেই যেতিস?" "আমরা একদিন গেছিলাম। কুমারী, রঞ্জনা বোধহয় যেত,সেদিন ওদের কথাবার্তায় মনে হচ্ছিল। ” "ও আচ্ছা! তোরা কোলাঘাট যাবি বলে দীঘা চলে গেলি কেন? “ লরির জ্যামে পড়ে আটকে গেছিলাম। আমাদের পৌঁছাতে বেশ রাত হয়ে গেছিল। তারপর খাওয়া দাওয়া করতে করতে অনেক রাত হয়ে গেলো - - - । রঞ্জনা বলল - এই রাতে তোরা বাড়ি ফিরবি কি করে? সবাইকে বাড়িতে ছাড়তে ছাড়তে তো ভোর হয়ে যাবে।'' ললিত বলল, “ একটা কাজ করলে হয় না। আরতো ঘন্টা দুই গেলেই দীঘা পৌঁছে যাব। চল রাতটাও কেটে যাবে। সমুদ্রে ভোরের সূর্যদয়টাও দেখা হয়ে যাবে। তারপরে একটু ফ্রেশ হয়ে বাড়ির দিকে রওনা দেব' পলি, ‘ বাড়িতে কি বলবো? সবাই চিন্তা করবে’ ললিত,‘ আরে,এটা কোন ব্যাপার! সবাই বাড়িতে জানিয়ে দে গাড়ি খারাপ হয়ে গেছে মেকানিক পাওয়া যাচ্ছে না।’ গাড়ি ছুটলো দিঘার দিকে - - -

ক্রমশঃ

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register