Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

গল্পেরা জোনাকি তে রীতা চক্রবর্তী (পর্ব - ৪৯)

maro news
গল্পেরা জোনাকি তে রীতা চক্রবর্তী (পর্ব - ৪৯)

নীল সবুজের লুকোচুরি

সেদিন যে কথা বলা হয়নি আজ সবার সামনে সেটা স্বীকার করছি। ডাক্তার সুমিতা মৈত্র যিনি এখন তোমাদের চিকিৎসাধীন রয়েছেন, সেই সুমি'ই আমার প্রথম ভালবাসা। ওঁর মেয়ে, তোমরা যাকে ডাক্তার আয়ুস্মিতা মৈত্র বলে চেনো, সে আমাদের ভালোবাসার মিষ্টি উপহার। -------- গল্পেরা কোথায় থাকে আমরা জানিনা। তোমার আমার সকাল সন্ধ্যার জালে জড়িয়ে আছে যে কথা তারাইতো বয়ে যাওয়া সময়ের কতো কথা বলে যায় কথকতায়। তারাই যখন অনুভবের ফাঁকফোকর গলে সামনে এসে হাজির হয় দেখি অগ্রহায়ণের ঘ্রাণে মঁ মঁ করছে জীবন-বাতাস। শালি ধানের ক্ষেতের সবুজ ছড়িয়ে পরেছে অলিন্দ - নীলয়ের ফোকর গলে দরিদ্রের কুটির থেকে ধনীর রাজপ্রাসাদে। সংসারের শতেক কর্তব্যের জটিল শাখা প্রশাখার ঘর্ষণে যে উত্তাপ ছড়িয়েছিল সম্পর্কের ফাকটল থেকে আজ তার কিরণখানি স্নিগ্ধ আলোর পরশ মেখে ভালোবাসার রংয়ে সেজে উঠেছে। পাতায় পাতায় শুধু তারই ফিসফাস। মনের ভেতর থেকে কে যেন ডেকে বলে যায়, "ওরে শোন, আর কতদিন অপেক্ষা করাবি ! মধু লগন যে বয়ে যায়। দেরি না করে তাড়াতাড়ি ছুটে আয়। চাঁদকে জড়িয়ে ধরে আঁচল দিয়ে আড়াল করি। ও যে সকলকে ডেকে বলে দেবে তোর আর আমার ভালোবাসার ঘরের ভাব আর আড়ি।"...

এতক্ষণ ধরে আরিয়ান দুরে দাঁড়িয়ে সব কিছু দেখছিল, শুনছিল। এখন কাছে এসে ডাক্তার আনসারির সামনে দাঁড়িয়ে বলল, "আপনার সব কথা বলা হয়ে গেছে তো! আপনার অনুমতি নিয়ে এবার তবে আমি কিছু বলতে চাই। মন দিয়ে শুনবেন সবাই। আপনি এত বছর ধরে যে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেন নি সেটা আজ হঠাৎ কেন বললেন জানিনা। তবে আপনার অবগতির জন্য জানাই যে, আমি অনেক আগে থেকেই ডাক্তার আয়ুস্মিতাকে আমার বড় বোনের সম্মান দিয়ে থাকি। যে শ্রদ্ধা সম্মান মন থেকে আসে সেটা যেমন মুছে ফেলা যায় না তেমনি সম্মানহীন যে সম্পর্ক তাকে জোর করে বাঁচিয়ে রাখা যায় না। আপনি যে সম্পর্কটাকে সামনে আনতে চাইছেন সেটার পেছনের কারণ আমি বা আমার মা' কেউই জানিনা। আপনি যদি মনে করেন, এতে আমার বা আমার মায়ের আপত্তি আছে, সেটা কখনোই না। যদি মনে করেন আমার মায়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন তাহলেও আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এটা বলার জন্য মায়ের পারমিশন নেবার মত সময় আমার নেই। তবুও এই কথাটা আমি বলতে পারছি কারণ আমি জানি মা কোনোদিন এখানে এসে থাকবেন না। আর আপনি তো দেশে থাকবেন বলেই এত বছর আমাদের থেকে দুরে সরে রয়েছেন। আপনি আমার জন্মদাতা ঠিকই তবে আপনাকে খুব বেশিদিন কাছে পাইনি বলে হয়তো বাচ্চার জীবনে বাবার তেমন কোন গুরুত্ব আছে এটা জানতাম না। এদেশে এসে 'বাবা' নামের যে অর্থ চোখের সামনে দেখছি ঠিক তেমন করে আগে কখনো বুঝতে পারিনি। এখানে এসে আমার চোখ খুলে গেছে। প্রতিটা সম্পর্কের গভীরতা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। ভালো লাগছে এখানকার মানুষের জীবন যাপনের ধ্যান ধারনা। আর সেই কারণেই আপনার এইদেশে থাকার সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান করছি। রইলো পরে আমাদের কথা। সেটাতো...সাহানা ম্যাডাম কিছু ইশারা করতেই কথা বলতে বলতে আরিয়ান চুপ করে যায়। ম্যাডামের দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকেন আনসারি স্যার।

আসছি পরের পর্বে

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register