Mon 22 September 2025
Cluster Coding Blog

গল্পেরা জোনাকি তে রীতা চক্রবর্তী (পর্ব - ৪৪)

maro news
গল্পেরা জোনাকি তে রীতা চক্রবর্তী (পর্ব - ৪৪)

নীল সবুজের লুকোচুরি

মাদারের জন্য একটা চেয়ারের খোঁজ করতে মিঠি এদিক ওদিক তাকাতেই বাইরে বসে থাকা ছেলেরা এগিয়ে আসে। ওরা সবসময়ই নজর রাখছে ডাক্তার ম্যাডামের প্রয়োজনের দিকে আর ওদের সাপোর্ট পেয়ে মিঠির মনে একটা নতুন আশা জেগে উঠেছে। ওরা যদি মা-মেয়ে মিলে এখানেই থেকে যায় তবে বেশ হয়। ছোটবেলা থেকে দেখা নিজের চেনা পরিবেশ এটা। এখানে পুরনো দিনের সবাইকেই পাওয়া যাবে যারা ওর ছোটবেলার সঙ্গীবিহীন দিনের পরম আপনজন আর শহরের কোলাহল থেকে দূরে মায়ের পছন্দের নিরালা নিভৃত জায়গায় থাকলে মা'ও ভালো থাকবেন। যদিও শহরের সুযোগ সুবিধা এখানে নেই তবুও সবুজের সমারোহের ঘাটতি নেই আজও। বুকভরা প্রাণবায়ু এখানকার মানুষকে সতেজ রেখেছে। মানুষের মনেও আছে এমনই সবুজের ছোঁয়া। সদাসর্বদা জীবনের প্রকাশ রয়েছে এইসব মানুষের চলায় - বলায়, চিন্তায় - চেতনায়। এদের সান্নিধ্যে থাকলে ঐশ্বরিক অনুভূতি লাভ করা যায়। গত কয়েকদিন ধরে এই ছেলেরা কি ভীষণ যত্ন নিয়ে ওদের সাথে কাজ করছে। মানুষকে ভালো না বাসলে জনসেবার কাজে এরকম শ্রদ্ধা আসেনা কখনো! এখানকার লোকজনকে একটু ঠিকঠাক চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পারলে এই অঞ্চলের মানবসম্পদের মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে। সুস্বাস্থ্যই যে মানুষের আসল সম্পদ এবিষয়ে তো কোন দ্বিমত নেই! এই অঞ্চলের মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছে তো মিঠির ছোটবেলা থেকেই ছিল। আজ আবার নতুন করে সেই স্বপ্নটাই সাজিয়ে দেখতে দেখতে কখন যে আনমনা হয়ে পরেছে নিজেই জানেনা। হঠাৎ আনসারি স্যারের গলার আওয়াজে মিঠি চমকে ওঠে। "কি ভাবছিলে ম্যাডাম এত গভীর ভাবে? মা'কে নিয়ে খুব চিন্তা হচ্ছে তাই তো! হুম, সেটা তো হবারি কথা। কিন্তু তুমি একা একা সবটা ভেবে নিলে আমরা কি ভাববো বলতো--বলেই একটু হেসে ফেলেন ডঃ আনসারি। স্যারকে সামনে দেখে মিঠি যেন মনের গভীরে পরমশান্তি অনুভব করল। মনের ভেতর একটা নাবলা ছটফটানি বড্ড কষ্ট দিচ্ছিল। এখন কোনো এক' উড়নছু' মন্তরে এক মুহূর্তে সেসব উধাও হয়ে গেছে। যেন কোনো রাজকুমার পক্ষীরাজের ঘোড়ায় চেপে এসে ওর সব দুশ্চিন্তাগুলো ভ্যানিশ করে ওকে চিন্তাবুড়ির কবল থেকে মুক্তি দিয়েছে। ডাক্তার আয়ুস্মিতা মৈত্র কি তবে মনে মনে চাইছিল ওর মায়ের প্রিয়জন এই সংকটের সময়ে সামনে থাকুক? হয়তো বা এখানে যারা রয়েছে তাদের উপস্থিতিতে মায়ের স্বীকৃতিটুকুও মনে মনে চেয়েছে এই স্বনামধন্য মেয়ে আর সে নিজেই সেই পথটা প্রশস্ত করে দিতে চায়। তাই তো ড আনসারির পায়ে হাতদিয়ে প্রণাম করতে এতটুকুও হেজিটেট করলনা এখন। দুরে দাঁড়িয়ে আর এক মহিলা অপলক দৃষ্টিতে দেখ চলেছে দুজন ডাক্তারের একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর বিরল দৃশ্য। আসছি পরের পর্বে
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register