- 12
- 0
স্বামীর গান গাওয়া শুনে স্ত্রীর চোখে জল চলে এলো। আমার স্বামী এত ভাল গান গায়! স্ত্রী শ্যামলীও সুন্দর গান গায়,আসলে দুজনের আলাপ হয় এক গানের আসরেই। শ্যামলী মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে ও ওর সর্বস্ব দিয়ে ইন্দ্রনীলের ক্যারিয়ার গড়ে দেবে,ওর পাশে থাকবে। ইন্দ্র খুব ভরসা করে শ্যামলী কে,কি পরে ফাংশনে যাবে,কি নিয়ে যাবে,কোন যন্ত্র নিয়ে যাবে,কোন কোন গান পর পর গাইবে,সব শ্যামলী দেখত।এদিকে অনেক গানের টিউশন করে সংসার চালাত। ইন্দ্রনীল সংসার সম্বন্ধে খুব উদাসীন তবে শ্যামলী যা রান্না করে দিত তাই সোনাতলা করে খেয়ে নিত। টিভির রিয়ালিটি শো য়ে ইন্দ্রনীল সুযোগ পায়,শ্যামলীর কাজ আরো বেড়ে যায়। প্রথম রাউন্ডের পর দশ জনে ইন্দ্রর সুযোগ পেয়ে যায় শ্যামলী চোখে স্বপ্ন দেখে ইন্দ্রনীল স্টার হয়ে গেছে। ইন্দ্র কে পরবর্তী রাউন্ডের জন্য বম্বে যেতে হবে,শ্যামলীর এবার যাওয়া হবে না,অনেক টুইশন, সব হাতছাড়া হয়ে যাবে! সংসার কিভাবে চলবে? ইন্দ্র কে সব গুছিয়ে দেয় সাথে নতুন ফোন কিনে দেয় শ্যামলী। ভিডিও কল করার জন্য। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঘুরে ঘুরে ইন্দ্রর বেশ নাম ডাক হয়,ইন্দ্র রিয়ালিটি শোয়ের অনুষ্ঠানে তিন নং স্থান পায়,তত দিনে ইন্দ্র সম্পূর্ণ বদলে গেছে! যাকে বলে গ্রুমিং। ইন্দ্র কোলকাতায় এলে শ্যামলী ওর সাথে আবার আগের মতো প্রত্যেক প্রগ্রামে যায়,ইন্দ্র প্রথম প্রথম কিছু বলত না,কিন্তু কিছু দিন যেতেই ইন্দ্র সেক্রেটারির কথা বলে,শ্যামলী অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। শ্যামলী দেখেশুনে গান জানা মহিলা সেক্রেটারি রাখে,যে ইন্দ্রনীলর সবসময়ের সঙ্গী হয়ে যায়,ইন্দ্রর শ্যামলীর অত প্রয়োজন হয় না। শ্যামলী টিফিন গুছিয়ে দেয়,সময় বদলেছে টিফিনে এখন রুটি আলুভাজার বদলে,ফল,ড্রাইফ্রুটস,আরো কত কি দিয়ে দেয়। মলি সব দেখে শুনে রাখে,কখন ইন্দ্রর কি প্রয়োজন, সব খেয়াল এখন মলি রাখে। শ্যামলী গানের স্কুল খুলেছে ছাত্রীদের নিয়ে বেশ সময় কাটে। মাঝে ইন্দ্রর অনেক রাত হয়ে যায়,শ্যামলী ঘুমিয়ে পড়ে,ইন্দ্র আলাদা ঘরে বেহুশ হয়ে ঘুমোয়। একদিন মলি, শ্যামলী কে প্রেগ্ন্যাসির কথা জানায়! মলি শুনে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়! ইন্দ্রর ওপর অভিমান হয়! ইন্দ্র মনেই করতে পারে না কবে সে ঘুমের ঘোরে এই কাজ করেছে। এদিকে মলি ইন্দ্র কে বিয়ে করার চাপ দিতে থাকে,ইন্দ্র শ্যামলী কে সমস্যার কথা বলে, বিশ্বাস করতে বলে। শ্যামলী গোয়েন্দা ফিট করে। গোয়েন্দা এক মাস সময় চেয়ে নেয়। শ্যামলীর এক মাস্তুত ভাই ওদের বাড়িতে যাওয়া আসা করে,মাসী অনেকদিন হল গত,মেসো আছে তবে সেও অসুস্থ,ছেলে তেমন কিছুই করে না,মাসীর সংসারে পরে থাকে,মলির ইনকামে ভাগ বসায়! মলির ব্যাংকের বই বাবুর কাছেই থাকে। শ্যামলী মলি কে ক্রস এক্সাম করে জানতে পারে এই দুর্বুদ্ধি ওর ওই মাস্তুত দাদার,ওদের অবৈধ সন্তানের পরিচয় ইন্দ্রর ঘারে ফেলতে, অথবা বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চাপ দেওয়ার পরামর্শ। ইন্দ্র হাপ ছেঁড়ে বাঁচে।
0 Comments.