Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সম্পাদিকা উবাচ

maro news
সম্পাদিকা উবাচ
টানা ৬০ দিনের লড়াই শেষে ১৯৯৯ সালে ২৬ জুলাই পাহাড়ের চূড়ায় জম্মু-কাশ্মীরের কার্গিলের নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধ হয়েছিল ভারত-পাকিস্তানের। অবশেষে এইদিনই সেখান থেকে পাক সেনাকে হঠিয়ে দিতে সমর্থ হয় ভারতীয় সেনা। দিনটিকে স্মরন করতেই এটিকে বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়। কার্গিল ও দ্রাসে দুটি জায়গা আচমকা দখল করে নেয় পাক সেনা। সেই দখল মুক্ত করতেই ভারত শুরু করে অপারেশন বিজয়।
কার্গিলে যুদ্ধে মোট ৪৫৩ জন পাকিস্তানি সেনার মৃত্যু হয়। যুদ্ধবন্দির সংখ্যা ৮ জন। এই যুদ্ধে পাকিস্তান প্রায় ৫ হাজার সেনা পাঠায়। যুদ্ধ চলাকালীন দু’টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। আরও একটি ভেঙে পড়েছিল মাটিতে। এই যুদ্ধে কারগিলকে তাক করার নেপথ্যে পাকিস্তানের মূল উদ্দেশ্য ছিল লাদাখ এবং কাশ্মীরের মধ্যে সংযোগ ছিন্ন করা। এবং এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে আসা, যাতে বিভিন্ন অজুহাতে তারা তাদের দখল সফল করতে অন্যান্য দেশের সাহায্য পায়। কিন্তু এমন কিছুই হয়নি। এমনকী, চিনও সাড়া দেয়নি এই যুদ্ধে। ভারতের প্রায় ৫২৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল যুদ্ধে।
১৯৯৯ সালে ৩ মে যুদ্ধ শুরু হয় এবং শেষ হয় ২৬ জুলাই । আজ সেই বিজয় দিবসের ২২ তম বার্ষিকী৷ লড়াই চলে মোট ২ মাস তিন সপ্তাহ ২ দিন। যদিও ১৪ জুলাই অটলবিহারী বাজপেয়ী ‘অপারেশন বিজয়’-এর সাফল্য ঘোষণা করেছিলেন।
১৯৯৯ সালের ‘কারগিল যুদ্ধ’ প্রসঙ্গে বলা হয় প্রতিবেশী পাকিস্তান চরম বিশ্বাসহীনতার নিদর্শন দেখিয়েছে এই যুদ্ধে িস। কারণ, সংঘর্ষের মাত্র দু’মাস আগেই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী লাহোর সফর করেছিলেন। শীতে কাশ্মীর সীমান্তের কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা মাইনাস ৪০ ডিগ্রি নেমে যায়। ছাউনি ছেড়ে সেনারা সরে আসে। কারগিল যুদ্ধ যখন হচ্ছে, তখন ভারত-পাক দু’টি দেশই পারমাণবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ। ১৯৭১-এর ‘মুক্তিযুদ্ধ’-র পর থেকে দীর্ঘকালীন শান্তি বজায় থাকলেও ১৯৯৮-এর মে মাসে ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশেরই পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যুদ্ধের পটভূমিকা রচিত হতে থাকে। যদিও, ১৯৭৪ সালে ভারত প্রথম পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা করে।
দুই দেশেই কারগিল যুদ্ধের পর থেকে ক্রমাগত বেড়েছে সামরিকখাতে খরচ৷ বিশেষ করে পাকিস্তানে কারগিল যুদ্ধের পর থেকেই সরকারি কর্মকাণ্ডে বেড়েছে সামরিক নিয়ন্ত্রণ৷
উল্টোদিকে, এই যুদ্ধে সেনাবাহিনীর সাফল্য ভারতীয় চলচ্চিত্র থেকে টেলিভিশন সিরিয়ালে বারবার পরিবেশিত হয়ে আসছে, যেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপস্থাপন সব সময়েই বীরত্ব ও সাফল্যের সাথে করা হয়৷
এমন কার্যকলাপ স্বল্প আকারে হলেও পাকিস্তানে ঘটছে, জানান জিলানি৷ তিনি বলেন, ‘‘কিছু বছর আগে থেকে পাকিস্তানি সেনা বিভিন্ন চলচ্চিত্র, টেলিভিশন সিরিজ, এমনকি দেশাত্মবোধক গান তৈরির পেছনে অর্থলগ্নি করা শুরু করেছে৷ এর থেকে পরিষ্কার, যে সাধারণ মানুষের কাছে সেনার পক্ষে জনমত গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা বর্তমানে কতটা৷''
এই একই ধারা দেখা যাচ্ছে ভারতেও, যেখানে ‘উরি', ‘গাজি অ্যাটাক' বা ‘রাজি'র মতো ছবি শুধু বিপুল ব্যবসা করছে না, পাশাপাশি, ভারতীয় সেনাকে সততা ও দেশপ্রেমের নিদর্শন হিসাবেও উপস্থাপন করা হচ্ছে৷
বড় পর্দায় জনগন যুদ্ধ দেখতে পছন্দ করলেও যুদ্ধের খেসারত সবচেয়ে বেশি দিতে হয় সাধারণ মানুষেরই৷ দুই দেশের সরকারই কাশ্মীরের মানুষ নিয়ে ভাবিত নন৷ তারা শুধু কাশ্মীরের জমি ও সীমানা নিয়ে চিন্তিত৷ সাধারণ নাগরিক, বিশেষ করে সীমান্তে বসবাসকারী মানুষ, মরছেন সবচেয়ে বেশি৷ এভাবে, সেনার চাপে, কতদিন দমিয়ে রাখা যাবে নাগরিকের মৌলিক সমস্যা?''
আজ প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি মুখ্যমন্ত্রীরা এবং অনান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা ২২ তম বার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়ে ট্যুইট করেছেন ৷ শহীদ বেদীতে মালা দিয়েছেন৷ আমরাও স্যালুট জানাতে চাই সেই বীর আত্মাদের৷ তবে এইসব রাজনৈতিক মাথারা যদি দেশবাসী এবং দেশবাসীর মৌলিক সমস্যাগুলোর সমাধান করেন তাহলে হয়ত মানুষের জীবন ধারন অনেক সহজ হয়ে যেত৷
সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন লিখতে থাকুন পড়তে থাকুন।

রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register