Fri 19 September 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ৪১)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ৪১)

দেবমাল্য

--- টাকার জন্য তোকে ভাবতে হবে না। আমি তো আছি, নাকি? বলেই, দেবমাল্যর দিকে তাকিয়ে বলল, উঠে পড়ুন, উঠে পড়ুন। দরজা খুলে দেবমাল্য উঠতেই চালক বলল, আমি কিন্তু মুর্শিদাবাদ নার্সিংহোমের সামনে একটু দাঁড়াব। একজনকে ওষুধ পৌঁছে দিতে হবে। রণো বলল, সে দাঁড়া না... তুই তো ওদিক দিয়েই যাবি। ওষুধ পৌঁছে দিতে আর কতক্ষণ লাগবে? তুই তো আর আড্ডা মারতে যাচ্ছিস না, যা যা... ওরা যখন কথা বলছে, দেবমাল্যর হঠাৎ মনে পড়ল, রণোর গাড়ির টাকা তো দেওয়া হয়নি! তাই পেছন পকেট থেকে ওয়ালেট বের করতে করতে রণোকে জিজ্ঞেস করল, তোমাকে কত দেব? রণো বলল, আমি কাল সকালে আপনার ওখানে যাচ্ছি। তখন নেব। --- সে ঠিক আছে। কিন্তু এখন তো কিছু রাখো। --- না না, এখন দিতে হবে না। --- তা হয় না, রাখো তো... বলেই, ওয়ালেট থেকে একটা পাঁচশো টাকার নোট বের করে প্রায় জোর করেই রণোর হাতের মধ্যে গুঁজে দিল দেবমাল্য। রণো বলল, কাল সকালে দেখা হচ্ছে তা হলে... দেবমাল্য বলল, ঠিক আছে, ও কে। গাড়ি ছেড়ে দিল। যেতে যেতে দেবমাল্য নিজের মনেই বিড়বিড় করে বলল, এই রে, একটা ভুল হয়ে গেল। রাজীববাবু যখন কারখানায় ফোন করেছিল, যে ধরেছিল, তার কাছ থেকেই তো সামশেরের মোবাইল নম্বরটা নিয়ে নেওয়া যেত। তা হলে যে কোনও বুথ থেকে ওকে ফোন করে বলে দেওয়া যেত, এখানে চলে আসার জন্য। যার উপরে অনায়াসে এতটা ভরসা করা যায়, তার সম্পর্কেই কিনা সে এতক্ষণ এইসব ভাবছিল! ছি ছি ছি... ওকে একটা ফোন করতে পারলে হতো। ও পাশে থাকলে অনেক জোর পাওয়া যায়। পড়াশোনা তেমন না জানলে কী হবে, ওর প্রচুর বুদ্ধি। বুদ্ধি করে তখন যদি ওর নম্বরটা ও নিয়ে নিত! অবশ্য তাতে কোনও অসুবিধা নেই। কারখানার ফোন নম্বর ওর কণ্ঠস্থ। হোটেলে গিয়ে যদি তানিয়াকে না পায়, তা হলে কারখানায় ফোন করে, সামশেরকে পেলে ভাল, না পেলেও যে থাকবে, তাকেই বলে দেবে সামশের আসামাত্রই যেন দৌলতাবাদে চলে আসে, ব্যস। দ্বিতীয় বার আর বলার দরকার হবে না। যেভাবে হোক ও ঠিক চলে আসবে। কিন্তু ভাবতে গিয়েও ওর অবাক লাগছে, যে সামশের এখন হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার কালীবাবুর বাজারের কাছে, তার কারখানায়, স্টেশনে যেতে গিয়ে এই এত দূরে, বহরমপুরে তাকে সে সাইকেল রিকশার মধ্যে দেখল কী করে! নাঃ, সে ভুল দেখেনি। সে যাকে দেখেছিল, সে সামশেরই। এত বড় ভুল তার হওয়ার কথা নয়। কারণ, ওই একই রিকশায় সামশেরের পাশে বসে ছিল তার বউ তানিয়া।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register