Wed 24 September 2025
Cluster Coding Blog

T3 || ১লা বৈশাখ || 26য় যাজ্ঞসেনী গুপ্ত কৃষ্ণা

maro news
T3 || ১লা বৈশাখ || 26য় যাজ্ঞসেনী গুপ্ত কৃষ্ণা

মেধাবতী নারীদের সনদনামা

যখনই বুকের ভেতর পাথরটা তেতে ওঠে বুঝি আমার কষ্ট হচ্ছে। অথচ পাথর ফেটে ঝর্ণার মতো রক্ত আর লবণকণারা বেরিয়ে আসে না আর।ফলে প্রতিবার আমার মৃত্যু হয় রক্তের অন্তঃক্ষরণে। মৃত্যুকে ডিঙোতে ডিঙোতে দু-চোখের রক্তবারুদ বিস্ফোরিত হয়ে আরও - আরও নক্ষত্রের জন্ম ঘটে যায় পলকে। তাদের নতুন দৃশ্যজগত খুলে গিয়ে আমার অন্তর্দর্শন হয়, পাঠ করে ফেলি সিন্ধুলিপির গোপন ম্যাহেক। সেসব সময় আমার কষ্টগুলোকে কবিতায় সাজাতে ইচ্ছে করলে ব্যর্থ করি সে ইচ্ছা। কারণ যে মানুষ জীবনকে ভীষণ ভালোবাসে, সে-ই তো পারে আত্মহনন করতে! আমিও অজস্র মৃত্যু নেব বুক পেতে তবু নিজেকে কাঙাল করে তুলব না রিক্তপাত্র হাতে। বুঝেছি, কবিতায় প্রেমের কথা বলতে তোমার কাছে যতখানি নির্বোধ সমর্পণ, যতখানি নির্লজ্জ নিবেদন প্রয়োজন ততটা আমি দিতে পারব না। আমার মগজ বিদ্রোহ করে প্রতিরোধের লাল-নীল বোতাম জ্বেলে, মগজের কোষে বিপ্ বিপ্ শব্দ ওঠে, আর আমি জীবনের অভিধানের সব নরম শব্দগুলো ভুলে যেতে থাকি। যে পৃথিবী এই নারীজীবনকে পাথরের বর্ম পরিয়েছে, সেই বর্মে নিজেকে সাজাই। যখনই মেঘ ঘনিয়ে আসে আমার অন্ধ বুকের উপকুলে তা আরও ঘন হয় - আরও ঘন --- বজ্রগর্ভ হয়ে ওঠে – তবু বৃষ্টি ঝরে পাথরকে গলাতে পারে না। নিরন্তর তাই মেঘ সঙ্গে নিয়ে ঘুরি।

এত পাথরই বা কীকরে বহন করি, বলো? তাই মৃত্যুলোকের জাগরণের পর ইহলৌকিক সব চলাচল থেমে গেলে একা বাহির হই। ছায়াপথের ভেতর ঘুরে ঘুরে, ক্লান্ত নদীর বাঁকে বর্ম খুলে রাখি। তখন একা ভিজি অহংকারী রমণী আমি, একা পুড়তে থাকি বাজে যেভাবে পোড়ে একাকী গাছ। যদি না ভাবো আমায় অলক্ষ্মী, কঠিন হৃদয় মেয়েমানুষ - তবে এসো! আমার অন্ধ ঝড়ের রাতে যদি পারো নিঃশর্ত নাবিক হয়ে পার করে দেবে দরিয়ার কাল, তবে এসো! আমার মেধাতিথির উদ্বোধনে যদি শঙ্খের ধ্বনিতে সূচনা করতে পারো মঙ্গলসকাল, তবে এসো!

তবে এসো হে পুরুষ, পাথর সরিয়ে যদি খুলে দিতে পারো আমার ব্যথার উৎসমুখ! তবে এসো হে পুরুষ, সেচনের অশ্রু নামাও!

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register