কবিতা সিরিজে তুলসী কর্মকার

১| মিছিল

বাতাস থমথমে আছে কিছুটা উড়ে নেওয়া যাক
দিল্লী থেকে কলকাতা ঝাপটা মারতে মারতে
দোষ কোথায় কেন কলকাতা কেন দিল্লী
পেট কথা শোনে না
ভেঁদির মা বলে চলে শুনতে শুনতে অন্যমনস্ক হতে হয়
ভাতের তাগিদে গোলযোগ আছে
ডাল ঝোল টুকরো মাংসে বিলাসিতা আছে
তিনি পাখি পড়ান
পাখি শিস দেয়
ডানা নাড়তে নাড়তে এগিয়ে যেতে হয়

২| স্পর্ধা

পারি না আর
অভিযোগ করেন
অসহ্য গরম
একঘেয়ে বিষয়কর্ম
অথচ তিনি অক্ষমতা লুকিয়ে রাখাতে জানেন
ছেড়ে দাও
ভালো লাগে না
এসব আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না
বকুল তলার দোকানে দুটো ডিমের ভরসায়
এগিয়ে আসে রাত………

৩| মোচড়

সভ্যতার চোখ নীল সীমান্তে থমকে দাঁড়ায়
কতগুলো বিবাহিত মাঝবয়েসী দিশেহারা
হাহাকার ওঠে বিছানায়
যৌনতা খানখান
ঈশ্বর তুমি কি দেখতে পাও
দৃষ্টি চলে যায় দূর সীমানায়
ইতস্তত তিলোত্তমা
ক্ষণিক সুখের খোঁজে মানুষ অসহায়
আঙুল চালে মোবাইল ফন্দি আঁটে মন
কত রাত পার করে মন্থন হয় কে জানে
বিবাহ নামক ব্যবস্থাপনায় ক্লান্ত সমাজ
দমন হয় না তুষ্টি নিমগ্ন হতে যায়…….

৪| সুর

সভ্য ছিল পৃথিবী যতক্ষণ রাত লেগে ছিল
মগ্ন ছিল ছিল প্রণয়
ধুকধুকি গায়ছিল গান
শান্ত ছিল প্রকৃতি যতক্ষণ সকাল ছিল
জমে ছিল শিশির
ঘুম হেঁটেছিল আপন খেয়ালে
ক্লান্ত ছিল মাঠ যতক্ষণ দুপুর ছিল
রোদ হয়েছিল নগ্ন
প্রহরী ঘর্মাক্ত
সভ্যতাকে খুব কাছ থেকে দেখতে হয়
কতটা পোশাক ছাড়লে অসভ্য লাগে সমাজ জানে
তখন সকাল দুপুর না রাত এ খেয়াল থাকে না
সানাই ভেসে এলে সৃষ্টির দামামা বাজে
জানালার ফোকর ধরে রাত ভেঙে ভোর হতে চায়

৫| সরোবর পরিক্রমা

জলতলের উপরিভাগে কিছু ক্ষুদ্র মাছ আছেন
যাঁদের পুষ্টির জন্য বারে বারে অনুদান ছড়ানো হয়
পুষ্টি হয় না বরং গুষ্টি বাড়ে
মধ্যভাগে মাছেদের সুযোগ কম
উপর নীচ উঠানামা করতে চান না
স্রোতের অনুকূলে আহারের অপেক্ষা করেন
হাড়ভাঙা খাটুনিতে দিন চালান
পেট সংসার সামান্য খাদ্যভূমি
নিম্নস্তর অল্প আলাদা
এখানে যাঁরা থাকেন গভীর জলের মাছ
তল মাটি উপর করেন
জল ঘোলা করে প্রতিকূল পরিবেশ গড়তে পারেন
পুলকিত হয়ে ডাঙায় লম্পঝম্প করে থাকেন
ধরা পড়লে ছল জানেন
হূল ফুটিয়ে করেন আত্মরক্ষা নয়তো করেন দলবদল
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।