সেখানে শরীর মন ঈশ্বর পরিবেশ মৃত্যু আছে।
পায়ে কাঁটা ফুটলে, মন বলে ঈশ্বর এ কি হল! মঙ্গল কর। শরীর খেঁকিয়ে উঠে। ডাক্তার লাগবে। আজকাল ঈশ্বর লাগে না। যা নেই তা কিভাবে করবে! সামনে ডাক্তারখানা। চিকিৎসা হয়। শরীর সুস্থ হয়। মঙ্গল ঘন্টা বাজে। মনের মন ভাঙে। খুঁজে চলে কেন ঈশ্বর! কি ঈশ্বর! কোথায় ঈশ্বর!
সেদিন মাথায় যন্ত্রণা। চুল ছিঁড়ে চলে হাত। খেতে ইচ্ছে নেই। বমি বমি গা। চিকিৎসা শুরু। পরীক্ষা হয়। লক্ষণ ব্রেন টিউমার। লাস্ট স্টেজ। হতাশ মন। কত কি সয়েছে। চলে যেতে হবে! শরীর তুমি পারবে লড়তে! চেষ্টা চলুক। মরে যাবার আগে খাঁটি ভয়। টাকা জমে আছে। বাঁচার ইচ্ছে। অপারেশন টেবিল। মন একা! মৃত্যু ওত পেতে আছে। কান্না শুরু। নিথর দেহ…
পরিবেশ আশকারা দেয়। শুরু হয় গল্পের ঈশ্বর।
দুটি লোক একটি পোস্ট মর্ডান অপরটি সেকেলে। জ্বর চলছিল। প্রথম জন হাত বাড়িয়ে রক্ত দিলেন। সেকেলে লোকটি ঈশ্বরকে স্মরণ করে হাত বাড়ালেন। অতি আধুনিক যা দেখে হাসেন। বলতে থাকেন এই ল্যাব ঈশ্বরকে হার মানায়। গুজগুজ করে বলেন যত কুসংস্কার।
প্রথমজনের ম্যালেরিয়া অপরজনের রক্ত ক্যানসার সীমা শেষ। পরীক্ষা হয়ে গেছে। ল্যাব তাচ্ছিল্য করে বদলে দিলেন রিপোর্ট।
পোস্ট মর্ডান লোকটি নিচ্ছেন মৃত্যুর প্রস্তুতি। কান্নাকাটি সাথে প্রতি মুহূর্ত চোখ ঢাকার অভিমান। আত্মীয় পরিজন দলে দলে একই সাথে মৃত্যু বিভীষিকার আঁচে তপ্ত। কোন আশা নেই। একটু সময় আর নিজের নেই। খুবলে খাচ্ছেন কেউ। কেবল মরণ ভয়! অথচ প্রতি পদে পদে ডাক্তার দেখাতে ছাড়েননি। কোন কষ্টকে অগ্রাহ্য করেননি। যাঁর বিশ্বাসে চিকিৎসা বিজ্ঞান। আজ কি হাল। সব্বাইকে ছেড়ে চলে যেতে হবে। ক্রমশ মৃত্যুর দিকে…
সেকেলে মানুষটি বেশ আছেন। শরীরের কষ্টকে মন দিয়ে। মনকে ঈশ্বর দিয়ে মানিয়ে নিয়েছেন। বুঝতে পারেননি জীবনটা কি ধারাতে আছে। সুখ আমোদকে সাথী করে। জ্বরা দেহ নিয়ে। মৃত্যুকে কতটা দূরে ঠেলেছেন…
পাঁচ মাস পর
ল্যাব জরুরী তলব করলেন একজনের শরীর ঠিক মন মরে আছে। অপরজনের মন ঠিক শরীর মরতে বসেছে।
রিপোর্ট উলটপালট হয়েছিল। সেকেলে তোমার ক্যানসার। আজও জীবিত কেন! পোস্ট মর্ডান তোমার ম্যালেরিয়া। এখন সুস্থ। বাড়ি যাও।
সেকেলে – হাহাহা মহাশয় বেশ শুনালেন! হউক যত কল্পগল্প। ঈশ্বরে বিশ্বাস আস্থা রেখে মন অক্সিজেন পেয়ে গেছে। এতগুলো দিন নির্ঘাত মৃত্যুর সাথে আপোষ করেছে। পদে পদে চুমু খেয়েছে। মৃত্যু খেয়াল করেনি সময় পেরিয়েছে। কষ্ট বেদনা সবের মাঝে মন বুঝেছে ঈশ্বর সাথে আছে। অনেক বেশি বাঁচা হয়ে গেছে আর ইচ্ছে করে না বাঁচতে। বাতাসে অট্টহাসি…
পোস্ট মর্ডান – বলেন কি মশাই! পাঁচ মাস ধরে মৃত্যুর অভিনয় করেছি! জানি মরতে একদিন হবে। তবুও তিলে তিলে শেষ হয়েছি! চিকিৎসা বিজ্ঞানকে ধ্রুব সত্য ধরে প্রতিনিয়ত মরণের সাথে শুয়েছি। সুস্থ হতে চাই না আর! ফিরবে কি বিগত পাঁচ মাস! অনেক ব্যাথা পেয়েছি। প্রতিদিন মরেছি।
যেথায় মন বিচার করতে পারে না শরীর বুঝতে পারে না। সেথায় চিৎকার করে বলি শক্তি দাও। বিশ্বাস দাও। তাকে দাও যাকে মন নিজের করে পেতে পারে। জীবন চলতে পারে আপন খেয়ালে …