সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব – ৩৪)

দেবমাল্য

এতক্ষণ বোধহয় খেয়াল করেনি। এখন বুঝতে পেরেই রণো বলল, ও মা, পাখি তো বড় হয়ে গেছে।

— বড় হবে না? চিরকাল ছোটই থাকবে নাকি?

রূপার দিকে তাকাল দেবমাল্য। বলল, ওর নাম পাখি?

উনি বললেন, আমরা ওকে পাখি বলে ডাকি। ওর ভাল নাম পর্ণভী।

— পর্ণভী?

দেবমাল্যকে তাঁর মেয়ের নাম ফের উচ্চারণ করতে দেখে রূপা বললেন, হ্যাঁ, পর্ণভী মানেও পাখি।

— ভারি সুন্দর নাম তো!
— ওর বাবা দিয়েছেন। ওর বাবা বলেন, পাখির চেয়ে সুন্দর প্রাণী নাকি পৃথিবীতে আর একটিও নেই। একেবারে মুক্ত। স্বাধীন। কী সুন্দর ডানা মেলে এক দেশ থেকে আর এক দেশে উড়ে যায়। বাধা দেওয়ার কেউ নেই। পাসপোর্টও লাগে না। আসলে ওর বাবা কবি তো…

— কবি! ও যে বলল, স্টার আনন্দে কাজ করে।

— হ্যাঁ, করে তো… ওটা তো ওর চাকরি। আর কবিতাটা হচ্ছে ওর প্যাশন। ভালবাসা। এই তো কয়েক দিন আগে দিল্লিতে ওর একটা ইংরেজি কবিতার বই বেরোল। প্রণব মুখার্জি উদ্বোধন করলেন।

— কোন প্রণব মুখার্জি? অর্থমন্ত্রী?

— হ্যাঁ।

এমন সময় টাওয়াল দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশ বছরের একটি ছেলে ঘরে ঢুকল। দেবমাল্য বুঝতে পারল, এই-ই রাজীব। রাজীব ঘোষ।

থানার পুলিশ অফিসারটি ওই কথা বলায় প্রচণ্ড ক্ষেপে গিয়েছিল ও। রণো তখন তার হাত চেপে ইশারা না করলে ও হয়তো তার মুখের ওপরেই যা তা বলে দিত। কে তাকে অধিকার দিয়েছে, তার বউ সম্পর্কে ও রকম আজেবাজে কথা বলার? পুলিশে চাকরি দেওয়ার আগে প্রত্যেককে ট্রেনিং দেওয়া উচিত কার সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয়। পুলিশে চাকরি করে বলে কি মাথা কিনে নিয়েছে নাকি? দরকার নেই আমার এ রকম পুলিশের। হনহন করে থানা থেকে বেরিয়ে এসেছিল দেবমাল্য। পিছু পিছু রণোও।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!