কবিতায় শর্মিষ্ঠা সেন

কবি এবং বাচাল পাঠক

আব্দুল, রমেশ, সরিতারা কবিতা জানেনা।
ধোঁয়া ওঠা গরম ভাত, গেড়ি গুগলি, কচু সেদ্ধ বা
হঠাৎ জুটে যাওয়া বন মোরগের ঝোল
ওদের অনুষ্টুপ ছন্দ, মার্গ সঙ্গীতের ঝঙ্কার।
কবি, আপনি যখন দুর্বোধ্য কবিতা লেখেন,
পাঁশুটে গন্ধ মাখা স্যাঁতস্যাঁতে কাঁথা গায়ে মুংলী পাশ ফিরে শোয়। হা ক্লান্ত শরীরের নিঃসাড় ওঠাপড়া দেখে দোর থেকে ফিরে যায় শ্বাপদ ও।
মাথায় ইঁটের পাঁজা, পিঠে রুগ্ন ভবিষ্যৎ বেঁধে
ফুলমণি মন্ডল ভাটির আগুনে সার সার সভ্যতার নীড় বিছোয়। এক, দুই, তিন থেকে সহস্র পর্যন্ত। মজুরি দেড়শ টাকা রোজ। কখনও একশ আশি।
কবি, আপনার শব্দেরা ঠান্ডা ঘরে আয়েসী আশ্রয়ে।
কালো কফি, ডাইজেস্টিভ এবং পার্কার হাতে ফিল্টার্ড সিগারেট পোড়ে যত, এদিকে লেখার বাঁধুনি বাড়ে ।
আহা! অদেখা যত সংগ্রাম কবিতায় চাপা পড়ে!
নরম হাতের নিপুণ শিল্পে দুটি পাতা একটি কুঁড়ির নাচন দেখেছেন? আপনার ফার্স্ট ফ্লাস? মকাইবাড়ি? দয়াবতীর কড়ে আঙুলের লেগে থাকা জোঁক, টুপ করে খসে পড়ে নালার ধারে, টুবুটুবু রক্ত শুষে!
মাননীয় কবি, নিভাঁজ সার্ট, মুখে স্মিত হাসি, অনেকটা ঝুঁকে ফুল আর মানপত্র হাতে, শরীর আবেগে থরোথরো।
জানবেনা কেউ, কয়লা মজুর আব্দুলের হাত ছুঁয়ে গোপনে রুমালে হাত মুছেছিলেন!
Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!