কথায় গানে সৌমজিতা সাহা

সুরের ওপারে

অনেক অনেক আদিম অতীতের কথা, তখন নগ্নরূপা সত্য ভিন্ন দ্বিতীয় কোনো অস্তিত্ব ছিলোনা। সেই আদিম অনস্তিত্ব কোন অজানা খেয়ালে আপন আনন্দে প্রকাশিত হলো বলা ভালো ধ্বনিত হলো।
তারপর কেটে গেছে বহু কাল, কত নক্ষত্র, কত প্রাণ, কত চেতনা, কত স্বত্বা মহাকালের অঙ্কুশ হেলনে সৃষ্টির অমোঘ নিয়মে হয়েছে। গভীর বৃষ্টির রাতে টিপটিপ করে ঝরে পরা নীরের বোল আর সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর হতে চলা রাতের অস্তিত্বর বিলম্বিত লয় সৃষ্টি করে অদ্ভুত ত্রিতালের ইন্দ্রজাল।
হে মানবসন্তান! কখনো শুনেছো তোমার চারপাশে প্রকৃতির কোলে বেজে ওঠা সেই সীমাহীন শাব্দিক প্রকাশ? ঝমঝমে বৃষ্টির সুরে বেজে ওঠে আমাদের মনের বিরহের সেতার।
বাতাসের শনশন বসন্ত রাগ যখন তোমার কানে বয়ে আনে পাতাঝরার টুপটাপ মুখরা, অনির্দেশ্য কোনো যৌবনের হিল্লোল ছড় টেনে কি টানটান করে দেয়না তোমার শরীরের তন্ত্রীগুলো?
কিংবা যখন কোনো মর্ত্যবাসী এপারের সব সঙ্কোচ কাটিয়ে নগ্ন নিঃসঙ্গ হয়ে রওনা দেয় পরপারের পথে সে কি শোনেনি মহাকালের সেই দরবাড়ি কানাড়া যা তোমার কানে প্রবেশ করে চোরা বৈরাগ্যের রূপ শিরশির করে নেমে যায় মস্তিস্ক থেকে মেরুদণ্ডের পাক বেয়ে কোন উদাসীনতার গভীরে।
বিধাতার অদ্ভুত এক বিভূতি এই মানব মনন প্রকৃতি ও পুরুষের সৃষ্টিরূপ এই মহামিলন উৎসবের মূল ও আদি প্রকাশকে সুর মূর্ছনায় ধরে নিজের আয়ামের যোগ্যতায় আপন মননের মনোরাজ সৃষ্টি করে ফেলেছিল সপ্ত সুরকে, যার রকমফেরের ইন্দ্রজালে আদিমতম সেই ধ্বনি ধরা দিয়েছে মন মাতানো রাগের নান্দনিক সত্ত্বায়। যার প্রতি ঝংকারে প্রকাশিত হয় এক সৃষ্টির বহু আঙ্গিকে যা আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
আমাদের প্রথম অস্তিত্ব আমাদের মন, কে ত্রাণ করার দার্শনিক চিন্তারূপে নিলো মুনি মনে, মন ত্রাণকারী ‘মন্ত্র’ রূপে।
নিঃশ্বাস, প্রশ্বাস, দিন, রাত্রি, সৃষ্টি, ধ্বংস,নক্ষত্রের চক্রবৎ আবর্তন সব নিয়�
ধ্বংস,নক্ষত্রের চক্রবৎ আবর্তন সব নিয়ে জেগে ওঠে স্বয়ং চক্র পানি।
কোথা হতে বয়ে এল সমুদ্রের নোনা বাতাস, সূর্য উঠেছে, ভোরের ভৈরবী ছড়িয়ে যাচ্ছে সর্বত্র, সৃষ্টি আবার জেগে উঠলো নবজাতকের কান্নার বিলাবলে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।