কবিতায় শর্মিষ্ঠা সেন

লোকতন্ত্র

আমি নিছক এক না-মানুষ।
তোমার তাবৎ মিছিলে আমার পেট-চুক্তি হাঁটা
আমার পায়ে পায়ে ওঠা ধূলোয় মুখ ঢাকে তোমার নাগরিক সভ্যতা। আমি ভীড় হয়ে বাঁচি।
আমার মাদলের তালে তোমার এলোমেলো পা বেভুল বিকোয় টিভির পর্দায়।
আমি কৃতজ্ঞতায় কান এঁটো করে হাসি।।
আমি প্রান্তিক, আমি প্রতিবাদী, ঘরছাড়া যাযাবর,
আমার মেহনত যায় রাজার খাতায়, আমার আপন কড়ির হিসেব করে তোমার বিচারালয়!
আমি রাজপথে রাত জাগি আর শাসকের ঘুম কাড়ি।
আমার মাঠের ফসল তবু জল পায়, সবুজের বাড়াবাড়ি।
তুমি দিশেহারা শত কাজে;
দেখি,আমার কষ্টে বুক ফাটে যত বিজ্ঞাপনের মাঝে!
তোমার সকালে উদাত্ত রাগ আলাহিয়া বিলাবলে,
আমার ঘরের কোনায় একতারাটি
সুর ভেঙে ছিঁড়ে পড়ে!
আমি কাক ডাকা সব ভোরে, প্রাণপনে ছুটে
দূরপাল্লার বাঁশি গুনি!
একবুক নদী কোনো বাঁধা নয়, শহরের ডাক শুনি।
অমানুষ আমি হাঁটি ক্রোশ‌ পথ।
কাঁধে চড়ে বসে অন্যায় কত শাসনের নাগপাশ,
আমি পরিযায়ী, সার দিয়ে চলি, পরিবার হাত ধরে,
অন্ধ রাষ্ট্র! সাদা চোখে তুমি চাপা দিয়ে রাখ অগুনতি কত লাশ!
কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ এখনও, হা ক্লান্ত লিখে কবি
দাও ধিক্কার, হোক কলুষিত
গণতান্ত্রিক ছবি।
রাষ্ট্র তোমার উদাসীনতায় বিপ্লব জাগে মনে,
মহাকাব্যের পাতাগুলি পোড়ে দারুণ আগ্রাসনে।।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।