সাপ্তাহিক ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন (পর্ব – ১৩০)

ম্যায় কহিভি রহু, হার কদম হার ঘড়ি…

আগের রাতে ফোনের এলার্মের রিংটোন চেঞ্জ করে রেখেছিলাম। এলওসি কার্গিলের এই গানটা সেট করেছিলাম। সিনেমাটি হয়তো হিট করেনি, কিন্তু ভারতীয় সেনাবাহিনীর লড়াই খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছিল।আর গান গুলো ছিলো শ্রুতিমধুর। তাই কার্গিলের ভোর ঐ ছবির গান দিয়ে শুরু করবো, সেটা আগেই ঠিক ছিলো।
ঝটপট রেডি হয়ে নীচে এসে আলু পরোটা আর আচার দিয়ে ব্রেকফাস্ট সেরে গাড়িতে ওঠা। দুধারে উঁচু পাহাড় আর সংকীর্ণ পথ বেয়ে চলা। গাড়ির স্পিকারে আবার বাজে এলওসি কার্গিলের গান। ড্রাইভার বাচ্চা ছেলে হলেও অনেকের মুখে এখানকার শোনা ঘটনা আমাদের জানায়। কখনো উঁচু একটি জায়গা দেখিয়ে বলে ঐটাই পাকিস্তান।
একসময় গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া। কার্গিল ওয়ার মেমোরিয়াল। গাড়ি থেকে নামতে নামতে শুনি ঘোষণা হচ্ছে এবার একজন কর্ণেল স্মৃতি চারণ করবেন। দৌড় দৌড়। হাঁপাতে হাঁপাতে পৌছনো একটা মাঠের মাঝে। পতপত করে ওড়ে জাতীয় পতাকা। তার নীচে দাঁড়িয়ে কর্ণেল শুরু করেন তাঁর স্মৃতিচারণ। জানতে পারি এটা রোজ হয়। ঘুরতে আসা মানুষজনের সামনে তুলে ধরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর শৌর্য ও আত্মত্যাগের আখ্যান।
আধা ঘন্টা এর পর খালি চারদিকে হাওয়ার শব্দ, আর তা ছাপিয়ে কর্ণেলের গমগমে গলার আওয়াজ। সবাই চুপ।
একসময় কথা শেষ হয়। নিজের তো বটেই, আশেপাশে তাকিয়ে দেখি সবার চোখ ভেজা। কান্নাভেজা গলা একসাথে মেলে জাতীয় সংগীতে। সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত জিনিস ও আরো কত কিছু দিয়ে সাজানো মিউজিয়াম দেখে ফের গাড়ি। আজ বিকালের মধ্যে শ্রীনগর পৌঁছতে হবে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।