ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন – ৩১

তুমি ডাক দিয়েছ কোন সকালে

সেদিন রাতে অমরনাথ না ছাড়ার সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়লো। আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম, তার পাশেই একটা বিশাল তাঁবু যাত্রীদের ভাড়া দেয়, আমরা দলের ষোলো জন সেটায় সেঁধিয়ে গেলাম। মাটি থেকে তাঁবু অনেকটা উঁচুতে। কারণ দেখতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ। নীচে বিশাল বিশাল বরফের চাঁই। তার উপর ম্যাট পাতা। তারপর একের পর এক গদি সাজানো। তার ওপরে বিছানা। ম্যাটের কল্যাণে ঠান্ডা না উঠলেও স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া গোটা তাঁবু জুড়ে। কিন্তু আমাদের কিছু করার ছিলো না। জুতো খুলে বিছানায় শরীর ছাড়া মাত্র ঘুম নেমে এলো চোখে।
ঘুম যখন ভাঙলো তখন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা। বাইরে কিন্তু ভালো আলো আছে। ঘুম ভাঙা মাত্র টের পেলাম মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে। সাথে করে একটা চাইনিজ বাম নিয়ে গেছিলাম, এবার ওটা কাজে লাগলো। একটু পরে দেখি দলের বাকি দের অবস্হাও একরকম। ঐ বাম টা সেদিন দারুণ কাজে লেগেছিল সবার। কিন্তু বিছানা ছাড়ার মতো ইচ্ছা কারুর ছিলো না। আমাদের তাঁবু থেকে দেড়শো মিটার গেলেই লঙ্গর, কিন্তু আমরা আর যেতে পারিনি। তাঁবুর মালিক বেশী দামে ডাল আর রুটি দিয়েছিলো, কোনোমতে খেয়ে আধো ঘুম আধো জেগে রাত কাটিয়ে ছিলাম। ভোর চারটে বাজতেই হুড়মুড় করে উঠে ঘোড়ার খোঁজ, বেলা দশটার মধ্যে বালতাল ফিরতেই হবে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।