ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন – ৮৭

ফেরা
ব্রম্হোকপোলে বাবার কাজ সারি, ভেতর ভেতর কষ্ট পেলেও মনে একরাশ আনন্দ নিয়ে ভারত সেবাশ্রমের ঘরে ফিরি.. যাক বাবার কথা তো রাখতে পেরেছি। এবং তারপর একটি অদ্ভুত ঘটনা ঘটে, যার ব্যাখা এতো বছর পরেও পাইনি। এখনও জানিনা সেদিন কি হয়েছিল।
কাজ শেষ, বাড়িতে জানানোও হয়ে গেছে, খাবার খেতে যেতেও প্রায় দু ঘন্টা মতো দেরী তখন। যে জামাকাপড় পরা ছিলো, তা থেকে খালি বড়ো জ্যাকেট টি ছেড়ে লেপের তলায় ঢুকেছি, মনে হলো আমি আর নিজের মধ্যে নেই। চোখের সামনে পরিস্কার সব কিছু, কিন্তু হাত পা নাড়ানোর ক্ষমতা নেই। শরীরটাই যেন নিজের নয়। ঘরের দরজা খোলা হঠাৎ মনে হলো কেউ যেন ঢুকলো, আমি তার দিকে তাকিয়ে হাসলাম, সে আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো কিন্তু সেটা কে, কেন এসেছে, বুঝতে পারলাম না। তার মুখটা কেমন ঝাপসা হয়ে গেল। কি করছি, কেন করছি, তাও আমার বোঝার বাইরে। এরকম বেশ খানিকক্ষণ হলো। ঘুমিয়ে পড়ে স্বপ্ন দেখিনি, এটা স্পষ্ট মনে আছে, আর আধ ঘন্টা পরে আমার যে রূমমেট ছিলো, সে ঘরে ঢুকে দেখেছিল যে আমি চোখ খোলা, হাঁ করে বসে আমি। তার ধাক্কা খেয়েই আমি সম্বিত ফিরে পাই, কিন্তু কি যে হয়েছিল তা আজও আমার বোধগম্য হয় নি।
ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর বারো বছর কেটে গেছে। ঐরকম অনুভূতি আর কোনোদিন ও হয়নি আজ অবধি। কয়েকজনকে বলেছিলাম, আজ সবার সাথে শেয়ার করলাম। আমার নিজের বদ্ধমূল ধারনা, মুক্তি পাওয়ার আগে, বাবা হয়তো ছেলেকে শেষ দেখা দেখতে এসেছিলেন। আপনাদের কি মনে হয়?