পৃথিবীর শেষ ধুলোর পাশে যাবো মিশে অবশেষে
হয়তো বা মিশবো না কোনদিন
আগাছার তলে বিন্দু বিন্দু জলে ব্যর্থ হবে সাগরের ছবি আঁকা,
হোগলের শিরদাঁড়ায় হাওয়া এসে দিয়েছে নাড়া
দূরে উদীয়মান বৃক্ষেরা কেন হলো দল হারা;
রমনীরা তৃণ হয়ে সুধালো আমারে এসে
একলা তপস্যার এই চুপিসার সাথি হলো নিমেষে।
রদবদল হয়ে যায় সময়ের পারাপার
হাল ভাঙ্গা বিকেলে ওপার হতে কেউ ডাকবে না আর,
স্মৃতি বলে কিছুই পারিনি গড়িতে এহেন জীবনে
ছায়ার সেতুর পাশে শক্ত কবচ খানি,
পারিনি রাখিতে থামায়ে আমার এই মৃত্যুর বাণী।
এই নিঃস্বতার মাঝেও যারা প্রজাপতির বাসর সাজায়
আমি আমরণ কাল ধরে তাহাদের সাথে রবো
মনের সরণি বেয়ে আমি ঘুমন্ত শৈলীতে রবো জনম জনম
সেই মরমীয় শাখায় শাখায় প্রতিলিপির মর্মের পাতায় পাতায়।
রাখিবো আজি খুঁটি গেড়ে তোমার তরে
নিশ্চুপ হাওয়ার সাথে দেওয়া-নেওয়া গেছে মিশে;
পরাজিত মৌনতা জিতে যায় অবশেষে,
আমি গাঢ় গাঢ় উজ্জ্বল পশ্চাৎ করিয়াছি স্মরণ
প্রেমকে পারিনি দিতে সম্পূর্ণ মুক্তহস্ত
প্রেম তো নয় খেলনা; প্রেম কথাটি বড়ই শক্ত।
২| গৃহ স্মরণ
এই ঘর কেড়ে নিয়েছে পুনর্বাসন
এই শীতল মেঝে জন্ম দিয়েছিল এক নবজাতক;
হেনেছিল এই ঘর হঠাৎ আক্রমণ,
দিনগুলো হয়েছিল রাত; রাতের প্রহর ঘুমহীন শান্ত যন্ত্রনা,
মোর স্মৃতিগুলো দিয়েছিল বেদনা।
স্মৃতির কোনো ছবি নেই
শৈশব; কৈশোর; যৌবন অবাধ স্রোতে ভেসে যায় সবটাই,
তারাদের সাথে বলে যাবো কাল কিছু ব্যথার কথা,
হয়নি বলা।
হয়নি বলা; বাঁচার লড়াই আর কুৎসিত বর্ণের-
নানা রঙের অপবাদ আর অপমানের কথা।
সময় তো চলে যাবে একদিন সত্য;
কোন ধাতু দিয়ে গড়া আমি?
আমি কোন পদার্থ?
উদার নদীর মতো করে;
সময় সামাজিক হয়নি জীবনের তরে,
সংস্কৃতির পাহাড়;ভ্রষ্টতার সাথে কেড়ে নেয় আহার।
সেদিনও তো বুঝিনি রবো বেঁচে কোনোক্রমে এতদিন।
আমি জীবন, সময় এবং সমাজের ক্রীতদাস।
ক্রীতদাস হয়েছি সম্মান চলে যাওয়া নানান ঘেরাটোপের মাঝে।
আর্থিক আনুকূল্য আড়াআড়ি দিয়েছে পারি
খনন করি পূর্বজনমের ঐতিহাসিক ভিড়ের উত্তাল সমাগম।
প্রেতছায়ার ডাকেও ব্যর্থ হই চলে যেতে,
মায়ায় ভরা নদী উপচে পড়ে হঠাৎ আগন্তুক রমণীর দিশায়;
আবার বাঁচার গান করে সময়।
ঋণী হওয়া প্রজন্মের সম্মুখে তাকাই এখন
সেই ঘর; সেই পুনর্বাসন;আমার ত্রি জনমের আপন
এখনো কালি মাখা পথ সাহসের কঠোর আস্তানা,
সেই ঘর ঘর নেই, এই ঘর আমার বেঁচে থাকার ঠিকানা।
৩| বসন্ত বিলাপ
সুর ও ছন্দের তালে তালে ডাকে পাখি ডালে ডালে
মায়াবী নগর তাই ঝলমলে হাসিতে হেসে ওঠে বসন্তের সকালে
চোখে পড়ে সতেজ পাতা;এতদিন ছিল যারা ঘুমন্ত,
কোকিলের বাসি হাঁকে, হাঁকে নতুন মনের সুর হয়ে জীবন্ত।
তব মাঝে বিরাগের ছোঁয়া লাগে কার অনুরাগে
প্রেমময় স্বপ্নেরা প্রাক্তন হয় ক্রমশ
অবিচল হেঁটে চলে জীবন ধারা
তোমার এই মায়া খেলা আমি মন ভরে দেখি দুবেলা
প্রাণের বসন্ত আসবে কবে কি জানি ?
প্রানের প্রান্তরে রূপের ছটার ঘটা
মাথা বোঝাই হাহাকার লয়ে ছুটে চলি আমি সেই মাথামোটা।
মাথার ভাজে বসে, সে যে আছে বসে;
কালো চুলে মেঘের পাহাড় এঁকে বনলতা ওঠে হেসে,
মনের মাধুরী ডেকে বলে বসন্ত গেছে এসে।
হঠাৎ হয় আপন সেই প্রাক্তন জীবন
রংবাহারি ফুল মেলায় বসন্তের কালো কেশ ভেসে যায়
দখিনা বাতাসে আমি ভীরু আধমরা অধম
যেন মরি পুড়ে বসন্তের আগুনে লয়ে হতাহতের নিয়ম।