মার্গে অনন্য সম্মান সঞ্জিত মণ্ডল (এডমিন পোস্ট)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

পাক্ষিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ১৯
বিষয় – বারো মাসে তেরো পার্বণ / বাংলার পার্বণ

উৎসব

যদি বলি এত উৎসব কেন, কেন এতো মেলা চারিপাশে!
মানুষ কি তবে শুধু উৎসব আর মেলাতেই ভাসে!
চারিদিকে ব্যথা আর বেদনার হাহাকার মাঝে,
তবু ওরা কারা, কি করে এমন করে আনন্দেতে ভাসে!
আমি শুধু দেখি আর মনে মনে হাসি ভাবাবেশে।
এভাবে কি ভুলে থাকা যায়?
এতো জ্বালা, এতো ক্লান্তি, এতো অনাহার এতো মৃত্যু এতো বেকারী!
এতো হানাহানি আর দড়ি টানাটানি, এতো ক্লেশ এতো অশান্ত হামলা এই ক্ষুব্ধ দুনিয়ায়!
মেলা কি নেশার ঘুম! ঘুমিয়েই কাল কেটে যায়! জাগবে আবার কবে, বলো,কে কাকে জাগায় !
কি এমন খেলে বলো যেটা খেলে সব ভোলা যায়,
এমনই নেশার ঘোরে ভেসে যাওয়া যায়!
উৎসব মেলা দিয়ে বাকি সব ভুলে গিয়ে
এমনই নেশার ঘুমে ঢলে পড়া যায়!
কতো কার মেলা দেখি, আসে দেব গণপতি
আসে বিশ্বকর্মা স্তুতি, কতো মেলা শুরু হয়ে যায়,
একে একে দুর্গা আসে,সকলেরে নিয়ে সাথে
গরীবের দুর্গা কাঁদে নিত্য মরে উপবাসে, ধর্ষকের ভয়ে ত্রাসে লাশ হয়ে জলে ভাসে,
তার দিকে আর কেউ ফিরে না তাকায়!
লক্ষ্মী আসে,কালী আসে,জগদ্ধাত্রী আসে পাশে
ঘরে ঘরে লক্ষ্মী যারা কেঁদে মরে যায় তারা
সব অসুর নিত্য হাসে ধর্ষিতা ধরায়!
কটা দিন মা মা ডেকে ঝড় তুলে বাতাসেতে বিসর্জন দিয়ে দিলে যেন অবলীলায়
যে মায়ে করলে পূজা, ঠেলে ফেলে দিলে তারে যেথায় সেথায়!
মনে প্রশ্ন জাগে তাই সংসারের নিয়ম ভাই !
এই বুঝি হাল চাল এই দুনিয়ায়!
যতটুকু প্র‍য়োজন দেখিয়েছি দয়া।
কতভাবে কতকিছু লুটেছি যে মজা
কটাদিন কাটিয়েছি তোফায় মজায়!
মজা শেষ, তাই মাকে ঠেলে ফেলে দেওয়া!
জলে-জঙ্গলে,বৃদ্ধাবাসে,বানপ্রস্থে তাই অবহেলা
মজা হবে সুদ-আসলে মুক্তি পাবে আর সকলে
প্রয়োজন ফুরিয়েছে, মিছে আর কেন ঘরে পোষা!
চমৎকার! এ না হলে আদরের সন্তান সে মা র! এসো খুঁজি উপেক্ষার অন্য মেলাভার!
যত দায় দায়ীত্বের সহজ উপায় আছে ঝেড়ে ফেলবার।
পূজা-মেলা,খেলা-মেলা,কাপড়ের মেলা খাদ্য মেলা, ইলিশের মেলা,পিঠে মেলা, বই মেলা,
আরো আছে অগণিত মেলা, কত কিছু আছে জানবার।
দুঃখ -ব্যথা,বেকারীর জ্বালা, অর্ধাহার, অনাহার, অশিক্ষা, বিপ্লব,প্রেম, অ-চিকিৎসা
না-চিকিৎসা, আরো কত সমস্যার জ্বালা
এক ফুঁয়ে নিভে যাবে এমনই যাদুর ঠেলা
ওই দেখো উৎবের মেলা কত আর।
সাধে কি এ মন হাসে দেখে কর্মকান্ড নাশে
কতকিছু ঘটে চলে ঘটানো যে হয় আমাদেরই চারপাশে খেলা খেলা মেলা কত
অলক্ষ্যেই বেলা বয়ে যায়।
হেলাফেলা সারাবেলা,শুধু হেলাফেলা সারাবেলা বৃথা বয়ে যায়।
জন্মদাত্রী বিসর্জিতা মাতা একা একা পথে ভেসে যায় অবেলায়!!
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।