|| বাইশের বাইশে শ্রাবণ একটু অন্যরকম || বিশেষ সংখ্যায় সুমিতা মুখার্জ্জী

তুমি জান না, ঢেকে রেখেছি তোমার নাম

‘মন’

সত্যি করে বল, তোর ওপর কত রাগ করেছি, ঝগড়া করেছি, করেছি না? তারপরও তুই তো রাত্রিবেলা কাছে এসে সব ভুলিয়ে দিয়েছিস আদরে আদরে।

আজ শুধু নিজের দুঃখটাকেই বড় করে দেখলি? আমারটা চোখে পড়লো না তোর?

আমার বুক জুড়ে একগাদা ঋণ জমে আছে রে।
তোকে কিছু দিতে না পারার যন্ত্রনা।

কিন্তু তুই? তোর কি একবারও সে কথা মনে হয়? কষ্ট পাস?
জানি, পাস না।

যার লেখা ছুঁয়ে আমার অক্ষরের রাজপ্রাসাদ , সেই কিনা নিঃশব্দে ঠেকিয়ে গেল! ঠেকিয়ে গেল গোটা একটা পৃথিবীর যাবতীয় গল্প, কবিতা।

আমি তো কোনোদিনও অহংকার করিনি। অহংকার করতে জানিনা বিশ্বাস কর।

তবু এ ফাঁকি কোন ফাঁক পূরণ করল , বলতে পারিস?

তোর সমুদ্র সমান শব্দ আংশিক মেঘলা আকাশে আজ বড় বিব্রত বোধ করে, তাই না, বল?

তুই কিন্তু বলেছিলি , তুই যাবি না। আর কোনোদিনও যাবি না।
বল, বলেছিলি কি না? কিন্তু সেই চলে গেলি!

কেন?
কেন তোর এই সাগরের মতো বালির বুকে আছড়ে পড়া, তারপর মূহুর্তে সবটুকুভাসিয়ে দিয়ে একেবারে শূন্য করে চলে যাওয়া!
বলনা, কেন?
কেন?
হুঃ, কেন?

অন্ধকারে হ্যারিকেনের আলোটুকু বাতাসে কাঁপতে কাঁপতে যখন দপ করে নিভে যায়
তখন তুইও উঠে চলে যাস
আর এদিকে জীবনের মানেটাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

এই যে তোর সমস্তটুকুতে টান দিয়ে বারবার চলে যাওয়া,
রক্ত শূন্য স্নায়ূ শূন্য একটা স্পন্দনকে মৃত অববাহিকার মতো দুচোখের বিষ করে পুড়িয়ে দিতে চাস সর্বক্ষণ
তার কি কোনো দরকার ছিল?

আজ বাইশে শ্রাবণ। মনে আছে নিশ্চয়ই?
খুব মনে পড়ছে জানিস তো,
সেই যে সেই সন্ধ্যেবেলায় শুনিয়েছিলি,
” অশেষ বাসনা লয়ে ভাঙাবল
প্রাণপণ কাজে পায় ভাঙা ফল
ভাঙা তরী ধরে ভাসে পারাবারে
ভাব কেঁদে মরে ভাঙা ভাষা….”

সকালের শ্রাবণের ভিজে রোদ গাছে নরম পাতা ছুঁয়ে যেমন ওই নীল আকাশের দিকে চেয়ে থাকে,
ঠিক তেমনি করেই কারুর বুক জুড়ে হাহাকার ছুঁয়ে থাকে ‘ভালো থাকুক ভালোবাসা’টাও।

আজকাল কতকথা মনে আসে আবার তলিয়ে যায়।

তোর গান তোর কবিতা মানেই তো তুই!

বাস্তবিক তুই ছাড়া বেঁচে থাকার রসদ আর কিই বা থাকতে পারে বল না?

আর শোন, পারলে এই অবাধ্যটাকে ক্ষমা করে দিস।

তোর
তুঁতে কালি।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।