এক মাসের গপ্পে সৌমী গুপ্ত (পর্ব – ২)

ঘেঁটে গেলেও ঘটনা – ২

সোহাগ সেন যাদবপুর ইউনিভার্সিটির সাইকোলজি ডিপার্টমেন্ট এ এম এস সি ফাস্ট ইয়ার। নেকু নেকু মেয়েলীপনার ধার ধারে না সে। ভীষণ স্মার্ট ,লাস্ট কবে জিন্স আর শার্ট ছাড়া সালোয়ার-কামিজ বা শাড়ি তে দেখা দিয়েছে তাকে চিরাগ মনে করতে পারে না। চিরাগ বলে ওটা হচ্ছে ওর জাতীয় পোশাক। চিরাগ ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের থার্ড ইয়ারের স্টুডেন্ট ।স্কুল থেকে ওরা ভাত ডাল এর মত অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাই চিরাগের কোন মেয়ে পছন্দ, কোন মেয়ের সাথে চিরাগকে মানাবে ভালো সোহাগ চোখ বুজে বলে দিতে পারে ।আর সোহাগের কখন কেন মন খারাপ, কি করলে মন ভালো হবে তা চিরাগের অক্ষর অক্ষরে জানা। এই যেমন এখনই এই মুহূর্তে দুটো চকলেট কর্নেটো নিয়ে হাজির সোহাগের সামনে চিরাগ।
“এই মোটি খেয়ে ফেল ,অনন্যার সাথে কেসটা মিটে গেছে। শালা বারোটা প্র্যাকটিকাল লিখব নাকি বাকি দিবানি গুলোর সাথে চ্যাট করবো রে।”
সোহাগ একবার আড়চোখে তাকায়,”তা আনলিই যদি পঞ্চান্ন টাকার ফ্রুটস চকলেট কর্নেটো আনতে পারতিস, সকাল থেকে পেটটা চোঁ চোঁ করছে!”
“ইঃ তোর তো শালা একপেট ভাত খেয়েও খিদে পেয়ে যায়”
“নারে ভ্যাবলা, শালা আজ সকালে মায়ের সাথে হেব্বি ঝগড়া হয়েছে জানিস! কিচ্ছু পেটে জোটে নি।”
আইসক্রিমে কামড় দিয়ে চিরাগ জিজ্ঞাসা করল, “কেনরে আন্টি এত ভাল মানুষ ,তুই বলে ঝগড়া করিস।”
সোহাগ মারমুখী হয়ে নকল করে ভেংচালো,” তুই বলেই ঝগড়া করিস !কুকুর ,ইতর ,ছোটলোক জানিস তুই বাবার বন্ধুর ছেলের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছে, মালটাকে ভালো করে চিনলামই না।”
চিরাগ কে যেন কেউ জোরে কাতুকুতু দিয়েছে পেটে, হাসতে হাসতে গড়িয়ে যায় সে,” তোকে কে বিয়ে করবে রে মোটি? মুখটা আয়নায় দেখেছিস পুরো পেঁচার মেজো বোন।”
“কেনরে মুখে আমার প্যাঁচার মতো কি দেখলি তুই? আমি যথেষ্ট সুন্দর বুঝলি, প্রবলেম সেখানে না ।প্রবলেম হলো শালা এই যে স্মোক করি ,জিন্স শার্ট ছাড়া কিছু ভাবতে পারিনা, মাসকাবারি তোর সাথে ভদকা গিলি সব শালা একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে তার মধ্যে মেনিমুখো বর আমার একদম পছন্দ নয়!”
“তুই কি করে জানলি মেনিমুখো ?তুই দেখেছিস? চিরাগ মন দিয়ে আইসক্রিম খেতে খেতে বলল।
“আর বলিস না আমার বাবার অফিসের গেট টুগেদার এ একবার দেখেছিলাম তখন কি আর জানতাম যে বাবা ওর জন্যই গিয়েছিল ওখানে।”
“তাহলে আর কি ঝুলে পর, তোর মত দজ্জাল মেয়ের পাল্লায় পড়লে যে কেউ সোজা হয়ে যাবে,আর তুই তো সারাক্ষণ বই নিয়ে বসে থাকবি, চাপ নিস না মালটা তোকে মেন্টাল ভেবে দুদিন বাদে ভাগিয়ে দেবে।”
“জানতাম তুই কোন সলিউশন বার করতে পারবি না ,ভাগ শালা “বলে সোহাগ চিরাগের হাত থেকে কর্নেটোর শেষ মাখন চকলেট টা কেড়ে গপ করে মুখে পুরে দিল।”
“এটা কি হলো মোটি!”
“ভালো জিনিস সবার জন্য নয় বুঝেছিস পাগল!চল একটা সিগারেট খাই মাথাটা শালা সকাল থেকে ভোঁ ভোঁ করছে।”

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।