(৪)
“হ্যাঁরে মিষ্টি চিরাগকে তোর কেমন লাগে ?কাকলি দেবী সোহাগের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বললেন।
“উফফ মা আস্তে আস্তে বিলি কাটো,এমন টানছো না মনে হচ্ছে যুদ্ধ করছো চুল গুলোর সাথে।”
“আরে বল না চিরাগ কে তোর খুব পছন্দ না রে?”
” কিইই!ভ্যাবলা? এমন মর্কটকে আমার পছন্দ হতে যাবে কেন।”
“তাহলে যে তোরা একসাথে সব সময় থাকিস কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারিস না।”
“মরণ ওর সাথে আমার আবার ভাব দেখলে কবে! মালটা আমাকে এমনি এমনি খাওয়ায় না, দশটা গার্লফ্রেন্ড ,ম্যানেজ করার ক্ষমতা নেই ওই জন্য খাওয়ায়!”
“মুখের কি ভাষা তোর মিষ্টি ?দুদিন বাদে শ্বশুর বাড়ি যাবি!”
সোহাগে এবার তেড়েফুঁড়ে উঠে বসে,” কে যাবে শ্বশুর বাড়ি ?কিসের শ্বশুরবাড়ি ?তুমি না মাইরি মা আমাকে নিয়ে আর ঝামেলা বাড়িয়ো না।”
“কিসের ঝামেলা শুনি? একটা প্রেম তো করতে পারিসনি, এরকম মেয়েকে এখন কে বিয়ে করবে শুনি?”
“ওয়েট ওয়েট একটা প্রেম করতে পারিস নি মানে? যখন প্রেম করার বয়স ছিল তখন বলতে প্রেম করবি না প্রেম করবিনা ,স্যাটেলাইটের মত ঘুরে বেড়াতে, আমার বলে হিস্ট্রির ভাস্কর দা কে হেব্বি পছন্দ ছিল,এখন বলছ প্রেম করিস নি কেন ? লে হালুয়া।আর তোমাকে ভ্যাবলা ফোন করেছিল তাই না?”
“কেন চিরাগ কেন ফোন করবে আমাকে?”
“ওইযে বললে এরকম মেয়েকে কেউ বিয়ে করবে না এই এক কথা শুনিয়েছে আমায় ভ্যাবলা!”
“তোরা দুজনে কেন বিয়ে করে নিচ্ছিস না কে জানে! একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারিস না একে অপরের কথা ভুলতে পারিস না তাছাড়া চিরাগ কে তো আমার পছন্দ।”
“ও মাই গড কাদের সাথে থাকছি আমি, নিজেরাও পাগল আমাকে পাগল করে দেবে, এটা নিশ্চয়ই তোমার বাবা বলেছে ,মা,চিরাগ আর আমি জাস্ট ফ্রেন্ড,ওকে বিয়ে করব ভাবলে আমি কাঁদবো না হাসবো বুঝতে পারিনা!”কাকলি দেবী এতক্ষণ সহ্য করছিলেন এবার মুখটা গম্ভীর করে আদেশের সুরে বললেন,”কিসে যে তোমাদের পাগলামি লাগে আর হাসি কান্না পায় আমরা বুঝি না তবে তোমার ভালোমন্দ ব্যাপারটা তো জলে ফেলে দিতে পারি না ,কানখুলে শুনে রাখো এই সপ্তাহের শেষে অংশুর বাবা-মা আসবেন ,আশীর্বাদ করে নিতে চাইছেন ,আশা করব তুমি আর কোন ছেলে মানুষী করবেনা।”কাকলি দেবী উঠে পড়েন এবং কোন উত্তরের অপেক্ষা না করেই চলে যান সোহাগের ঘর থেকে। সোহাগ নিরুপায় হয়ে চিৎকার করে,”মা প্লিজ শুনে যাও প্লিজ মা”, কোন সায় না পেয়ে সিগারেটের প্যাকেটটা খুলে ফাঁকা দেখে’ ধুর শালা” বলে জানালার ধারে বসে!