• Uncategorized
  • 0

গদ্যানুশীলনে সুদীপ ঘোষাল

আয়না

বিনয় তার বাবা মাকে ছোটবেলায় হারিয়েছে।রীতা দেবিকে ছোট থেকে মা বলে জেনেছে।তিনিই তাকে বড় করেছেন। আজ কালিপুজো।সকলে মায়ের কাছে প্রার্থনা করছেন নিজের মঙ্গলের জন্য। কিন্তু বিনয় শুনলো তার মা প্রার্থনার সময় মা কালি কে বলছেন,মা তোমার নিজের স্বাস্থ্যের খেয়াল রেখো।তুমি ভালো থাকলে পুরো পৃথিবী ভালো থাকবে।
বিনয় মৃণ্ময়ীর চিন্ময়ী রূপ দেখলো নিজের মায়ের মুখমন্ডলের আয়নায়।

কবর

সুমন চালিয়ে যেত তার গোপন ইচ্ছের কলমটা। বাংলা গল্প লেখায় তার বেশ নামডাক হয়েছে। মা বলেন, লিখে সংসার চলবে না বাবু তোমার বাকি জীবন পড়ে আছে। তুই একটা চাকরি পাওয়ার চেষ্টা কর। মায়ের কথামত সুমন চাকরির চেষ্টা করে কিন্তু পায় না। শেষে একটা শাড়ির দোকানে সেলসম্যানের কাজ করে। তারপর তার বিয়ে হয়। মা খুব খুশি কিন্তু সুমনের গোপন ইচ্ছেটা পূর্ণ হয় না। সুমন ভাবে, লেখকদের আর্থিক দিকটা যদি ভাবতে না হত তাহলে হয়ত ইচ্ছেপাখির কবর দিতে হত না।

অশরীরী

রমেন সকালে উঠেই ঘরের সিলিং এর দিকে তাকিয়ে দেখলো একটা লাশ ঝুলছে।অনেকদিন পর নিজেকে তার বেশ হাল্কা লাগছে।মনে পরে গেলো তার গত রাতের কথা।ঝুমার সঙ্গে তার ভালোবাসা অনেকদিনের। তবু সে দীপের সঙ্গে খোলাখুলি যৌনাচারে লিপ্ত। লুকিয়ে রমেন দীপের বাগানবাড়িতে সব দেখেছে। তারপর সে দুঃখে,রাগে গলায় দড়ি নিয়েছে গতকাল।শরীরবিহীন হয়ে সে আজ মুক্ত হয়েছে পরকীয়ার আঘাত থেকে।

রোদবেলা

ভট্টাচার্য পাড়ার দুর্গাপুজো দেখলেই মনে পড়ে বাল্যপ্রেম,অমিতের।কাঁসর ঘন্টা বাজত আরতির সময়।অমিত ভালো কাঁসর বাজাত।আর তাছাড়া সীমার মুখ দেখবার লোভে ছুটে চলে যেত পুজোমন্ডপে।অমিত আরতির ফাঁকে দেখে নিত সীমার চোখ।তার চোখের নজর অমিতের দিকেই থাকত। অমিত সারাদিন তাকিয়ে থাকত ওদের বাড়ির দিকে।যদি একবারও দেখা যায় সীমার মুখ। অসীম খিদে চোখে কেটে গেছে তার রোদবেলা।
আজও বাহান্ন বসন্তের পরে অমিত ভুলতে পারেনি তার অতৃপ্ত প্রথম রোদবেলার কথা…
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।