সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে সৈকত ঘোষ (পর্ব – ৩)

কলকাতা কলিং

সেগমেন্ট-৩:

‘তোমার শরীরে ক্ষয়ে যাওয়া শহরটা উঁকি মারে।
অ্যালবাম খুলে পুরোনো ছবিগুলো দেখতেই সোয়েটার থেকে উষ্ণতা গড়িয়ে এল…’
জামার অস্তিনে লুকিয়ে রেখেছিলাম তোমাকে। তুমি এক নরম বোঝাপড়া। স্টুডিওর অন্ধকার থেকে জন্ম নেওয়া পাগল পাগল প্রেম। এর বেশি কিছুই হবার ছিল না, একটা সাহসী দুপুর কিংবা প্রজাপতি বারান্দা। বৃষ্টির চুমুচিহ্ন তোমাকে রাতের গান উপহার দিয়েছে। জিন্সের পকেটে খুচরো সম্পর্কের মতো সে বেহাগ বিস্ময়।
আজকাল তোমাকে দেখলেই জেগে ওঠে ঘুম শহর। তুমি সন্ধের পার্কস্ট্রিটে নদী হয়ে যাও। এলোমেলো এক একটা ঘটনা গলে যায় আইস কিউবে। শনিবারের অলিপাব জানে, কতটা বিষ মিশলে শরীর জোনাকি হয়ে ওঠে। তুমি হাত ধরাধরি করে ঢুকে যাও সিংহের গুহায়। আসলে তোমাকেও জ্বলে উঠতে হবে। সূর্যের কাছে পৌঁছতে হবে আলোর গতিতে। সে রাতে আকাশের সিঁথিতে অন্ধকার মুছে গেছিল…কবিতা নেমে এসেছিল রাস্তায়। আমি তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি, আসলে নিজেকেই। আমার সামনে সিজারের গোপন বান্ধবী। আমার সামনে একটা উইকেন্ড স্বপ্ন। আমি উঠে দাঁড়াই। আত্মবিশ্বাসী আলো খুলে দেয় রহস্য জড়ুল।
চায়ের ভাঁড়ে জেগে ওঠে নতুন সকাল। যে মায়া ছড়িয়ে দিয়েছিলে তুমি, একান্ত সম্ভাবনায় রিবন খোলা অলকানন্দার জল। আজ পিয়ানোর রিডে ভুল সুর বেজে ওঠে। ভেঙে যাওয়ার আগে খুলে যায় আপদকালীন দরজা। তোমার বুকে ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ। এ শহর জানে সুখ দুঃখ আবেগ ওসব সিলেবাসে মানায়, অনার্স ক্লাসে হেসে ওঠেন বিভূতিভূষণ। আমি জানি স্পর্শ ভীষণ ছোঁয়াচে একটা হ্যাবিট, স্পর্শ ভীষণ জোড়ালো আবদার। তুমি উনিশ, তুখোর প্রেসিডেন্সি। তুমি শেষ বেঞ্চ, হলুদ বারিস্তা। রহস্যটুকু উবে যাবার আগেই আমি নির্মাণ করি, নিপুণ অক্ষরে সারভাইবাল অফ দি ফিটেস্ট। হয়তো তুমিও বোঝো, হয়তো আমিও। এসব কথা বিক্রি হবার নয়। ভালোবাসা আসলে একটা অসুখ, নেশাবন্ধনী ভেঙেছে দুপুরবেলা। তুমি জ্বালিয়ে দাও আগুন, আমি ঠোঁটের নেভিকাট। দেখো হেডিং জুড়ে ক্যাটরিনার ক্লিভেজ, তর্ক জমুক বঙ্কিম কাফকায়। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি নামে ক্লাসঘরে, নিজেকে নিভিয়ে দেয় আলো। এ এক অদ্ভুত ভাষাপাঠ।
সময় গুলতে থাকে, কাপ থেকে কাপে হলুদ চিনির দানা। রহস্য মুছে দেয় বৃষ্টি দাগ। এর পর মুখোমুখি শ্রাবণ। চুল খুলে দেয় সিজারের বান্ধবী। সমস্ত অসহায়তা ভেদ করে আমি আশ্রয় নিই। ওর স্তনে চতুরঙ্গের দেশ, ঠোঁটে চরিত্রের পাশওয়ার্ড। শহরের উল্কিতে জেগে ওঠে লাল টিপ, অবৈধ সংসারে স্লিপলেস রাত। বুঝতে পারি, বদলে যাওয়া শহরে তুমি এভাবেই ভেঙে যাচ্ছ প্রতিদিন। হয়তো এভাবেই ভেঙে যেতে হয়। জানলায় ঝুলে থাকে বন্দিশিবির। আমি তোমার চোখে ভাঙনের কোনও তারিখ খুঁজে পাই নি, কিংবা যন্ত্রণার লাজুক দরজা। তবু মনে মনে চিঠি লিখেছি, চুমুর গভীরে খুঁজেছি যন্ত্রনা।
আসলে তোমার কপালে যতটা সুগন্ধি আলো, ততটাই কবিতার মতো ঘোর। ততটাই না হয়ে উঠতে পারা আমি…

[অনিবার্য কারণ বশত লেখকদের তরফ থেকে লেখা না পাওয়ায়,ধারাবাহিকটা সম্পূর্ণ প্রকাশ করা সম্ভব হল না!]

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।