ক্যাফে ধারাবাহিক গল্পে সুবল দত্ত (অন্তিম পর্ব)

হন্যতে
উত্পলার প্রসব
উত্পলা দেখল ঠিক তারই নিচে উল্লাস দাঁড়িয়ে। নারায়নীর অর্ধেক মুন্ডু নিয়ে লোফালুফি করছে। মৃত মানুষের চুল যে কত আলগা এটা তার বোধে নেই। উত্পলা একটু নড়ে উঠতেই অস্বাভাবিক যন্ত্রনায় চোখে অন্ধকার দেখলো। পেটের ভিতরে একটা ফুটবল যেন বনবন করে ঘুরছে। প্রায় টলে পড়তে গিয়ে সামলে নিল। একটু উঠে বসে ওড়নাটা খুলে ডালের সাথে কষে বেঁধে ফেলল নিজেকে। প্যান্ট খুলে ডায়াপারটা নিম্নাংগ থেকে বার করে নিল আর গাছের ডালে টাঙ্গিয়ে দিল। একটু হালকা লাগলো নিজেকে। নিচে দেখলো উল্লাস কটাশগুলোর সামনে কাটারি নিয়ে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে একটু একটু দুলছে। ঠিক এই সময় প্রচণ্ড ব্যথাতে সবকিছু ভুলে উত্পলা চিত্কার করে উঠলো। এতো জোরে যে কাকগুলো আছ ছেড়ে কা কা করতে করতে চারপাশে উড়তে লাগল। উল্লাস উপরে হাঁ করে তাকিয়েই রইল। ওর কাছে অত্যন্ত অবিশ্বাস্য ব্যাপার। উত্পলা তখন আবার অমানুষিক চিত্কার করে পা ফাঁক করে ডালের উপর ঝুলে পড়ল। একটা রক্তাক্ত থকথকে মাংসপিন্ড ধীরে ধীরে প্রসবিত হয়ে উল্লাসের ঠিক গর্দানের উপরে পড়ল। রক্তস্রাবে তার মুখ চোখ ঢেকে গেল। কাটারি ছেড়ে থকথকে মাংসের দলা মুখ থেকে সরাতে যাবে, এমন সময় লাফ দিয়ে সবকটা কটাশ তার গর্দান কামড়ে ধরল। মুহূর্তের মধ্যে উল্লাসের গলা ছিঁড়ে ফেলল তারা।
উত্পলার সারা শরীর যেন তখন যন্ত্রনামুক্ত হয়ে গেল। একটা মরণপাশ যেন আষ্টেপৃষ্ঠে পেঁচিয়ে ছিল তাকে। সেটা খুলে যেতেই এক প্রশান্তি তার চোখে ঘুম এনে দিল। শিরীষ ডালের উপর হাত পা ঝুলিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে সে প্রতীক্ষায় থাকলো এবার কোনো ধাত্রীমা তাকে ধোয়া পোঁছা করে শুদ্ধ করে কোলে করে বাড়ি নিয়ে যাবে।