গদ্যের পোডিয়ামে শুভদীপ চক্রবর্তী

জোনাকিআলোয় ফেরা

একটা হেরে যাওয়া জীবনবোধ নিয়ে বিগত কয়েক শতাব্দী ধরে হেঁটে চলেছি। আমার একপাশে স্বপ্নভাঙা কালো বিষাদমেঘ আর অন্যপাশে হা করে তাকিয়ে থাকা বাস্তব, গুটি গুটি পায়ে নিঃশব্দে হেঁটে চলেছে। পথের পাঁচালীর সাদাকালো মনকেমন কিংবা অপুর সংসারের হঠাৎ নেমে আসা শূন্যতা আমাকে চারিদিক থেকে বাক্সবন্দি করে নিতে চাইছে। যেখানে রাস্তার গতিপথ অবরুদ্ধ হয়ে যায়, যেখানে অন্ধকারের ঘনত্ব তার সর্বশেষ সীমায় পৌঁছায়, সেখান থেকেই নতুন দিশার সন্ধান পাওয়া যায়। সেই অন্ধকারের জঠর থেকেই দ্বীপভাঙা আলোর জন্ম হয়।
জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে, আশারমেঘ থমকে দাঁড়ায়। তখন ঝিঁ ঝিঁ ডাকে। মনের ব্যথাজঙ্গলে কবেকার হাওয়া বয়। জীবন তখন কাঁপতে কাঁপতে বেপথু হাতে ভবিষ্যৎ এর আরাধনায় লীন হয়ে যায়। এক গভীর অসুখে ভুগছে আমাদের জীবন। এই অসুখের কোনো ওষুধ আজও পাওয়া যায় নি। সেই অসুখের নাম ‘মনখারাপি’। অসুখের ভিতর ত্রিপল ঢাকা ঘরে, জীবন বসে থাকে আর বিষধর সাপের সরসর শব্দ শুনতে শুনতে কান্নায় ডুবে যায়।
জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত অপমানে,অপমানে, শ্লেষে ডুবে যেতে যেতে জীবন এগিয়ে চলে। মাঝে মাঝে দুঃখে অপমানে কেঁদে, নখ দিয়ে খিমচাতে চায় এই জীবন।
তবুও, দিনের শেষে যন্ত্রণা আক্রান্ত জীবন ভাগ্যচরের বাঁধ দিয়ে একলা একলা সাইকেলে বাসায় ফেরে। ঠিক তখনই পথের পাশে অসংখ্য জোনাকিপোকা তাদের আশাআলো নিয়ে জ্বলে ওঠে।
পথের অন্ধকার গুলো একে একে জোনাকিআলোয় হারিয়ে যায়।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।