সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে সীমন্তি চ্যাটার্জি (পর্ব – ৩৪)

স্রোতের কথা

পর্ব – ৩৪

[অস্তিত্বের রহস্য….রহস্যের অস্তিত্ব]

“রিয়্যালি সুজি…তুই খেল দেখালি বটে!কি গাটসি্‌ রে তুই !…হাই প্রিস্টেসের মুখের উপর জবাব!!সত্যি কিন্তু…ওনার একটু বেশিই আলোহা প্রীতি আছে ”
” আমি যাদের ভালোবাসি তাদের কেউ কিছু করলে আমার মাথা প্রচন্ড গরম হয়ে যায়…আবার আমার ভালোবাসাও যদি কোনো ভাবে হার্ট হয়…তাহলেও কিন্তু আমি ছেড়ে কথা বলি না…”
কথাটা বলে সুজি একবার আড়চোখে সমীরের দিকে তাকিয়ে নিল…
“ওরে দ্যাখ দ্যাখ তোরা”…বলতে বলতে প্যাম ওর হাত টা প্রসারিত করে দিল…যার উপরিভাগে ফুটে উঠেছে একসাথে পাঁচটা রুপোলি জলবিন্দু আঁকা সুন্দর একটা ট্যাটু‌…যাতে আলো পড়ে চিকমিক করে উঠছে…আর প্যামের ধবধবে সাদা সুন্দর হাতটা যেন ট্যাটুটার জন্য আরো ঝলমলে হয়ে উঠেছে….
“আমারও হয়েছে মনে হয় তাই না?? দ্যাখ তো তোরা…” বলতে বলতেই গলাটা বাড়িয়ে মুখ টা উপর দিকে তুলে ধরলো সুজি…আর ওর গলায়… ডান কলার বোনের পাশে টকটকে লাল আগুনের শিখার জ্বলজ্বলে ট্যাটুটা যেন একটু আগে আলোহাকে ঘিরে জ্বলতে থাকা আসল আগুনের শিখার মতই লেলিহান আর আসল বলে মনে হলো।
“তাহলে এই হচ্ছে ব্যাপার…আমাদের যার যে এলিমেন্টে এফিনিটি সেই এলিমেন্টের একটা করে ট্যাটু আমরা গিফ্ট পেলাম…হেভ্ভী কেস্… এই স্রোত…ডাইকো…সমীর…তোরা যা না এবার… তোদের কার কি হয় একটু দেখি…
মিট্টি আন্দাজ করে করে নিজের ঘাড়ের উপর ফুটে ওঠা ট্যাটুটাতে হাত বোলালো
” স্রোতস্বিনী বসুমল্লিক….যাও এবার তুমি যাও…পাওয়ার সার্কেলের মধ্যে গিয়ে দাঁড়াও তাড়াতাড়ি…”
” ‌‌যা স্রোত… আমাকে মনে হয় সবার শেষেই ডাকবে… আমার আর কোনো এলিমেন্টের ব্লেসিং পাওয়া হবে না…ডাইকোর গলায়
স্পষ্ট হতাশা…”
বেচারা ডাইকো…অস্থির হয়ে উঠেছে একেবারে… ওর কান্ড দেখে আমার হাসি পেল…আর একটু দুঃখও হলো ওর জন্য…ও হয়তো ভেবেছে…আগে গেলে এলিমেন্টাল পাওয়ার একেবারে নিশ্চিত ভাবে পাওয়া যাবে… আর না হলে সব ফুরিয়ে যাবে খাবারের মত…আসলে প্রথম থেকেই দেখছি ডাইকো এসব নিয়ে খুব সিরিয়াস…ও অবশ্য বলেইছে যে ওর জীবনের লক্ষ্যই ছিল ইসপ্যামাতে আসা…
কিন্তু আমি!! আমার তো এসবে কিছুই যায় আসে না…এটা ঠিক, এখানে,এই অদ্ভুত জায়গায়…এই অদ্ভুত জীবনে এসে ডাইকো মিট্টিদের মত বন্ধুদের পেয়ে আমি যা ভেবেছিলাম তার চেয়ে অনেক ভালো আছি… কিন্তু এই জীবনকে এ্যাকসেপ্ট কি সত্যিই আমি করতে পেরেছি??… আমার অতীতের ছায়া…ছেড়ে আসা প্রিয় মুখ গুলো…দিম্মা…শৌনক…
না…লীনা মল্লিকের কথা আমি ধরছি না…সে কোনোদিন আমার প্রিয় মানুষদের মধ্যে ছিল না… শুধু মা বললেই তো আর কেউ জোর করে মা হতে পারেনা…
যতই ইসপ্যামা স্পেশাল জায়গা হোক…কিন্তু এটা তো ঠিক…এখানে আমি ইচ্ছেমত দিম্মার কাছে যেতে পারবো না…দিম্মাকে জড়িয়ে ধরে তার গায়ের প্রিয় গন্ধটা বুক ভরে নিতে পারবো না…তবে আশার কথা এই যে, হয়তো কথা বলতে পারবো…কারণ আমাদের ফোনগুলো জমা নিয়ে নেওয়া হলেও বলা হয়েছে তিন চার দিন পরে মেন্টরদের থেকে কালেক্ট করে নেওয়া যাবে…তার মানে দিম্মার সাথে কথা বলা যাবে…যদিও মাঝরাতে কথা বলতে হবে…দিম্মার ঘুমের বারোটা বাজিয়ে… আমার তো এখন আবার রাত ই দিন…
কিন্তু শৌনক!! মনের গভীরে হাজার ইচ্ছে হলেও…হাজারবার চাইলেও তো আমি ওর সাথে কথা বলতে পারবো না…আর শেষ দেখা হওয়ার দিন যে ঘটনা ঘটেছিল বা বলা ভালো ঘটতে পারতো…তারপর ওর সাথে কথা বলতে চাওয়ার ইচ্ছেটাও তো অপরাধ…
আমার এই অদ্ভুত জীবনে শৌনকের মতো একজন সাদাসিধে নর্মাল মানুষ কে কেনই বা জড়িয়ে তার জীবনটাকে শেষ করবো আমি… আমি বরং গডেসের কাছে প্রে করবো…শৌনক যেন তার জীবনে এগিয়ে যায়…স্রোত বলে যে কেউ কোনোদিন ছিল তা ভুলে যায় সম্পূর্ণ… আমি না ভুলতে পারলাম তো কি হলো… স্রোতস্বিনী কষ্ট সহ্য করতে জানে…
“স্রোত স্রোত…যা না তাড়াতাড়ি…”
ডাইকোর অধৈর্য্য গলা আমার চিন্তার জাল ছিন্নভিন্ন করে দিলো
” ওহ্ ডাইকো স্যরি রে… আমার তো মনেই নেই…প্রিস্টেস রোশনাই জাহান আমাকে অনেকক্ষন আগে ডেকে গেছেন…আমি একটু ওনার সঙ্গে আগে দেখা করে আসি…তুই ততক্ষণে চলে যা না প্লিজ”
বলতে বলতেই আমি দেখলাম সত্যিই প্রিস্টেস রোশনাই জাহান উঠে দাঁড়িয়ে প্রফেসরদের বসার জায়গা থেকে নেমে খুব তাড়াতাড়ি পিছন দিকের ফুল সাজানো রাস্তা ধরে… হাঁটতে শুরু করেছেন… আমিও লাফিয়ে উঠে ওনার পিছনে দৌড়লাম…দৌড়তে দৌড়তে শুনতে পেলাম ডাইকো খুশি মাখা স্বরে হাই প্রিস্টেস কে বলছে…” ম্যাম স্রোতস্বিনী কে প্রিস্টেস রোশনাই জাহান কি একটা দরকারে ডেকেছেন…ও একটু পরে আসছে তাই…এখন আমি চলে আসি প্লিজ?… আমার পরে না হয় ও…”
হাই-প্রিস্টেসের কিছুটা বিরক্তি মাখানো গলাও ভেসে এল শুনলাম…”ঠিক আছে ঠিক আছে…টাইম ওয়েস্ট না করে,কে আসবে… কাম ফাস্ট”
আমি অনেকটা দৌড়ে গিয়েও প্রিস্টেস জাহানের নাগাল পেলাম না…উনি ততক্ষণে বড়বড় সবুজ গাছপালার আড়ালে হারিয়ে গেছেন…প্রিস্টেস রোশনাই জাহান এত দ্রুত হাঁটলেন‌ কি করে কে জানে!!না কি উনি সুপার পাওয়ার ইউজ্ করেছেন…বাবাঃ, হাঁটার জন্যও সুপার পাওয়ার!!
কিন্তু সমস্যা হলো আমি এখন করি কি!! আমার কি প্রিস্টেস জাহানের কাছে যাওয়ার জন্য ওনার পিছন পিছন যাওয়া উচিত!! না কি রিচ্যুয়ালের জায়গার কাছে ফেরত যাওয়া উচিত! ভাবতে ভাবতে হাঁটতে হাঁটতেই আমি দেখতে পেলাম গোটা আকাশ জুড়ে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে… আর সেই বিদ্যুৎরেখা সোজা‌ ইসপ্যামার দিকে ছুটে আসছে…বিদ্যুতের সাদাটে আলোর প্রবল ঔজ্বল্য এতটাই তীব্র যে আমার চোখে ধাঁধা লেগে গেল… আমি দাঁড়িয়ে পড়ে চোখে হাত চাপা দিলাম…আর হাত দিয়ে চোখ চাপা দেওয়া অবস্থাতেই প্রিস্টেস তাশি ডোমার সুরেলা কন্ঠস্বরের আবছা হয়ে ভেসে আসা ঘোষনা শুনতে পেলাম
” ওয়াও…কনগ্র্যাচুলেশন্….
ডাইকো‌ টেনজিন তোমার এলিমেন্ট হলো ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুৎ… আমি খুব খুব আনন্দিত ডিয়ার… এবার তোমার এলিমেন্ট কে রিলিজ করে দাও…”
আমার মনে হলো এই মুহূর্তে আমার রিচ্যুয়ালের কাছেই ফিরে যাওয়া উচিত…কারণ আর শুধু আমি আর সমীর বাকি আছি রিচ্যুয়াল কমপ্লিট করতে…এটা হয়ে গেলেই না হয় প্রিস্টেস জাহানের কাছে গিয়ে সবটা বুঝিয়ে বলে স্যরি বলে দেবো…আর দেরি করলে হয়তো হাই-প্রিস্টেস মিরান্ডা প্রিস্টলি…যিনি আমার মেন্টরও…উনি ভীষণ রেগে যেতে পারেন… এমনিতেই কেন যেন মনে হয়…উনি আমায় নিয়ে একটু অস্বস্তিতে থাকেন!
ফিরতে গিয়ে বুঝলাম, আমি প্রিস্টেস জাহানের পিছন পিছন আসতে গিয়ে হেকেটির স্ট্যাচুর তলার রিচ্যুয়াল প্লেস ছেড়ে বেশ খানিকটা দূরে চলে এসেছি…
সবুজ ঘাস মাড়িয়ে…বড় বড় পাতা ভরা ঝুপসি গাছগুলোর পাশ দিয়ে প্রায় দৌড়েই ফিরছিলাম… কিন্তু…
হঠাৎই একটা বিশাল বড় গাছের পিছন থেকে ভেসে আসা একটি পরিচিত কান্নাভেজা উদ্বেগভরা কন্ঠস্বর আমার গতি স্লথ করে দিল…আর এক অমোঘ আকর্ষণে আমি গাছটার যে প্রান্ত থেকে স্বর টা ভেসে আসছিল… ঠিক তার উল্টো প্রান্তে এগিয়ে গেলাম
“এই জন্যই আমি চাইনি…সার্সী কলকাতা ইসপ্যামায় আসুক…তাই ভূমিসুতার কাছে খবর পেয়েই আমি আবার কলকাতা ইসপ্যামাতে দৌড়ে এসেছি…আপনাকেও আসতে বাধ্য করেছি… আমি জানি এই পরিবেশে এই স্তরে আপনার থাকতে কষ্ট হয়…তা ও চন্দ্রমৌলি… কিছু করুন দয়া করে প্লিজ…সার্সীর এলিমেন্টাল এবিলিটি কিছুতেই সবার সামনে এক্সপোজ হতে দেওয়া চলবে না…ওর এত বড় ক্ষতি হতে দেবেন না…তাহলে এতদিন ধরে করা আমাদের সমস্ত কষ্ট…সমস্ত স্যাক্রিফাইস…সব নষ্ট হয়ে যেতে পারে চন্দ্রমৌলি…প্লিজ…যদি ও এটা জানে স্রোতের এফিনিটি স্পিরিটে…আর তার মানে সব এলিমেন্টের উপর ওর দখল আছে…ও হিংসায় পাগল হয়ে গিয়ে সার্সীর বিশাল ক্ষতি করে দেবে চন্দ্রমৌলি…”
ডাইকোর আহ্বান করা বিদ্যুৎ আকাশ থেকে আমার মাথায় পড়লেও বোধহয় আমার এর থেকে বড় ঝটকা্ লাগতো না!
অনিন্দিতা কি বলছেন এসব!! তাও আবার অবতার চন্দ্রমৌলিকে… আমি জানি চন্দ্রমৌলি অনিন্দিতার কনসর্ট বা সঙ্গী…ওঁরা কাপল্… ওঁরা আলাদা করে গাছের আড়ালে কথা বলতেই পারেন…
আমিও লুকিয়ে ওঁদের কথা শোনার মত অসভ্যও নই আর সে রকম রুচি বা শিক্ষাও আমার নয়… কিন্তু….এ কি!!
আমার নিকনেম যে সার্সী… সেটা তো দিম্মা ছাড়া আর কারোর জানার কথা নয়!!
আর কথাটা যে আমার সম্পর্কেই হচ্ছে…সেটা না বুঝতে পারার মত অতটা বোকাও আমি না… কিন্তু আমাকে নিয়ে সবার আড়ালে এসব কি অদ্ভুত কথা বলছেন…কেনই বা এসব‌ বলছেন এঁরা!!
চন্দ্রমৌলির শান্ত গলা শুনতে পেলাম…
“শান্ত হও প্রিয়ে…এক্ষণে এত বিচলিত হইবার সেমত কারণ দেখি না…ক্ষমতাগর্বী মনুষ্য সততই অপরের শক্তিকে তুচ্ছ জ্ঞান করিয়া থাকে…যাহা অপরের পক্ষে মঙ্গলের কারণ হইয়া থাকে এবং অহঙ্কারই মনুষ্যজাতির পতনের মূল কারণ…ইহা ব্যতিত আমরা তো রহিলাম ই… আমাদের কন্যাকে রক্ষা করিবার জন্য…উহার ভাগ্য ও শক্তি দেবীগনের দ্বারা পূর্বনির্ধারিত…অতএব যাহা হইতেছে উহা বিনা প্রতিরোধে সংঘটিত হইতে দাও ”
আমার মাথার ভিতর বিস্ফোরণ ঘটে গেল যেন….হোয়াট দ্য হেল!!…আমাদের কন্যা মানে!!নাকি উনি আমাকে ওনার মেয়ের মত বোঝাতে চাইছেন!!কি হচ্ছে এসব…আমাকে নিয়ে! আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না…একটা বিশাল রহস্য যেন ক্রমশঃ মধ্যরাতের কুয়াশার মত ঘনীভূত হয়ে উঠছে…এই ইসপ্যামা তার ভিতরে আরো কত রহস্য লুকিয়ে রেখেছে কে জানে…আর নিজের অজান্তেই আমিও ক্রমশঃ সেই রহস্যের জালে জড়িয়ে পড়ছি…না কি এটাই আমার ডেস্টিনি!!
” সতেরো বছর ধরে ধৈর্য্য ই তো ধরে আছি চন্দ্রমৌলি…আপনি তো জানেন… কিভাবে নিজের অনুভূতি কে চাপা দিয়ে ওকে রক্ষা করেছি…তখন যদি ভূমিসূতা আর দেবলীনা আমাদের সাহায্য না করতো…” অনিন্দিতার কন্ঠস্বর কান্নায় ডুবে গেল…
আমি আর পারলাম না… আমার সারা শরীর কাঁপতে শুরু করলো, হাত পা অবশ হয়ে গিয়ে জবাব দিল…আর আমি পা মুড়ে বসে পড়লাম…
“কি একটা শব্দ হলো না?…” নিমেষে অনিন্দিতার গলার কান্না সতর্কতায় বদলে গেল…
আমার গাট্ ফিলিং আমাকে বললো… আমার এখানে আর এক মূহুর্তও থাকা উচিত নয়…আর রহস্য উন্মোচনের সঠিক সময়ও এটা নয়…এই গভীর রহস্যের তল পাওয়া এত সোজাও নয়…
এখন আমাকে এখান থেকে যে করে হোক পালাতে হবে… এখন এঁদের সামনে কিছুতেই নিজের অস্তিত্ব প্রকাশ করা যাবে না…না হলে সমস্ত রহস্য জানার ইচ্ছে অধরাই থেকে যাবে আমার…আর এখান থেকে পালাতে গেলে, এঁদের চোখকে ফাঁকি দিতে গেলে আমাকে সুপার পাওয়ার ইউজ্ করতে হবে… আমি এখানেই আমার এলিমেন্ট কে আহ্বান করবো…তার হেল্প চাইবো… কিন্তু এইভাবে কি এলিমেন্ট সাড়া দেয়?!! হেল্প করে?? কি যেন বলছিলেন না হাই প্রিস্টেস??প্রপার প্লেস বা শক্তিক্ষেত্র লাগে এলিমেন্টদের আহ্বান করার জন্য…
ভাবতে ভাবতেই নিজের অজান্তেই আমি ফিসফিস করে উঠলাম…প্লিজ আমাকে এক্সপোজ হওয়া থেকে বাঁচাও…আমাকে যেন কেউ দেখতে না পায়…আমার কাছে এসো প্লিজ…আমাকে উন্মোচিত হওয়া থেকে রক্ষা করো…”
নিমেষের মধ্যে একটা অপূর্ব অনুভূতি আমার মাথা থেকে পা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়লো… আমি অনুভব করলাম, একটা নয়…অনেকগুলো অস্তিত্ব আমার চার দিকে আস্তে আস্তে আমাকে ঘিরে ধরছে… তারা কারা…তারা কি!! আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না…শুধু অনুভব করতে পারলাম… ক্রমশঃ এক অপূর্ব গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়লো…কানের কাছে কারা যেন মধুর কন্ঠে কি এক ভাষায় ফিসফিস করে উঠলো…কি ফিসফিস করলো… কি বলতে চাইলো তা আমি জানি না… কিন্তু তাদের কথার সুর… নিঃশ্বাসনিসৃত বাষ্প আমার কানের ভেতর দিয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে গেল…. আমি টের পেলাম আমার শরীরের প্রতিটি লোমকূপ হর্ষে আনন্দে শিউরে উঠছে… আমার শরীরটা গলে যাচ্ছে…মিশে যাচ্ছে… আর আমার চারপাশে যে ছায়া ছায়া অবয়বগুলো আমাকে ঘিরে রেখেছে…আমার পরম শুভাকাঙ্ক্ষীর মত…আমিও তাদেরই মত একখন্ড মেঘ হয়ে যাচ্ছি অস্তিত্বহীন ভারহীন অবয়বহীন…
“না না এখানে কেউ নেই…হয়তো খরগোশ বা বিড়াল… কিছু একটা হবে…উফ্ আমি কি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম…কেউ কিছু শুনে জেনে ফেললো কি না… অবশ্য এখন এখানে কে ই বা আসবে…সবাই তো রিচ্যুয়ালে ব্যস্ত ”
“যাহার যে বস্তু যে সময়ে জানিবার জন্য নিয়তি নির্দিষ্ট… তাহা থেকে তাহাকে প্রতিরোধ করা বিধিরও অসাধ্য…সময় কে নিজ গতিতে চলিতে দিতে হয় প্রিয়ে… তুমি শুধু কর্ম করিতে পারো… এবং সতর্ক হইতে পারো “

চন্দ্রমৌলির হাসি মুখ কি ভাসতে ভাসতে দূরে সরে যাওয়া একখন্ড মেঘের দিকে নিবদ্ধ??

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।