প্রায় ই বিজয় অফিসে থেকে ফেরার পথে মিস্টি নিয়ে ফেরে ۔۔ওটা বহুদিনের অভ্যেস ۔۔বিশেষ করে বুধবার , পরদিন বৃহস্পতি বার , সাথে কিছু ফুল ফল মূল , প্রথমদিকে সুমনা মনে করিয়ে দিতো
এত বছরের অভ্যাস এখন আর ভুল হয় না , মিস্টি সে বেশিরভাগ সন্দেশ জাতীয় নিয়ে আসে ۔۔পুজোর জন্য শুকনো মিস্টি বা পেরা ۔۔বৃহস্পতিবারের পুজোর পর বেশিরভাগটাই ছেলে খায় ۔۔ছেলে টা ও সন্দেশ জাতীয় মিস্টি পছন্দ করে ۔۔মাঝে মাঝে ই ফ্রীজ এ উঁকি মারে ,মুখে পুড়ে ফেলে ۔۔ওর মুখ নাড়া দেখে সুমনা বোঝে ফেলে ۔۔”কি খেলি রে ۔সন্দেশ না ”
এই শনিবার রাতে খাবার পর ছেলে কে ফ্রীজ খুলতে দেখে বিজয় টিভি দেখতে দেখতে বলে বললো
” আমাকে ও দে তো একটা ”
” মা তুমি খাবে ”
“না۔আমার সন্দেশ ভালো লাগে না ”
“মানে ”
হাসি হাসি মুখ বিজয়ের ۔۔যেন বেশ মজা পেয়েছে কথাটা শুনে “দূর ওই শুকনো মিস্টি কে খাবে ”
“কবের থেকে ”
“আহা তুমি জানো না আমি রসের মিস্টি ভালোবাসি !”
“তাই বুঝি ? তা সেটা কবের থেকে ?”
“অতোসতো জানি۔۔ না ۔۔এখন আমাকে কাটকেটে রসের মিস্টি ই ভালো লাগে ۔۔রসগোল্লা বোদে ۔۔জিলাপি ”
বিজয় দেখলো রান্নাঘর পরিষ্কার করতে করতে সুমনা নিজের মনেই কথা গুলো বলে চেলেছে ۔۔
“হম বুঝলাম ۔তা বয়স তা বাড়ছে না কমছে ۔۔এতদিনে তোমার রসের মিস্টি খাবার শখ জাগলো ”
“আমি কোথায় তোমায় বলেছি যে আমার জন্য রসগোল্লা নিয়ে এসো ”
“বলছো তো ”
“মোটেই না ۔۔আমি একবার ও বলিনি যে আমার জন্য মিস্টি কিনে এনো ۔”
বিজয় যে মিটিমিটি হাসছে সেটা সুমনা দেখতে পেলো না
“কথার মধ্যে ই বুঝিয়ে দিচ্ছ ”
“বয়েই গেছে ۔۔আমি বলে ডায়েট করছি ۔۔মিস্টি খাওয়া ۔ বারণ۔۔যেন না চা এ চিনি পর্যন্ত খাই না ”
এবার বিজয়ের মুখ তা হাঁ হয়ে যাবার উপক্রম۔۔
খুব কষ্টে সে হাসিটা চেপে বললো “ঠিক আছে পরে বোলো না কিন্তু ”
বুধবার বিজয় অফিস থেকে ফিরল এক কৌটো রসগোল্লা নিয়ে
“একি তুমি এত রসগোল্লা নিয়ে এসেছো কেন ” আঁতকে উঠলো সুমনা
“তোমরা দুজনে ও রসগোল্লা পছন্দ করো না ۔۔কে খাবে এত গুলো ۔۔আমি তো ছোবো ও না ”
এবার বিজয় মিথ্যে কথাটা বলেই ফেললো ” আরে আমি কিনে আনিনি ۔۔অফিস থেকে একটা পার্টি র সঙ্গে হোটেল গ্রান্ড এ একটা মিটিং ছিল ۔۔যতজন ছিলাম ۔۔সবাই কে ই দিয়েছে ۔۔
“তাই ۔۔?একমুখ হাসি নিয়ে সুমনা
“আমার সামনে রেখো না ۔۔ জানো ই তো মিস্টি দেখলে ঠিক থাকতে পারি না ۔۔ এখনই খেয়ে ফেলবো ”
কোনো আওয়াজ নেই দেখে বিজয় রান্নাঘরে মুখ বাড়িয়ে দেখলো সুমনার দুচোখ বন্ধ আবেশে ۔۔হাতে আধখানা রসগোল্লা ۔۔۔