কবিতায় সোনালি

দোল

ফাগুন চৈত্র আর চারদিকের রঙেরা ছাড়া
আমার আর দোল খেলা ছিল না।
আমি আর আমার গুটগুটি বন্ধু
নিজেদের বাইরের ঘরে
এ ওর গায়ে পিচকিরি ভর্তি ভর্তি রঙ
গুলে গুলে ঢেলে হেসে
কুটিপাটি হয়ে যেতাম।
বাইরে বাঁদুরে রঙের বীভৎস উল্লাসের আওয়াজ
দৌড়ে যাওয়া অজস্র পায়ের উন্মত্ততা
শোনা যেত
কিন্তু তা যেন অনেক অনেক দূরে
আমাদের ফ্রক আর হাফ প্যান্ট পরা
চার দেওয়ালের পৃথিবীতে
এর কোন ছিটে এসে পৌঁছাত না।
কখন তার মধ্যেই জ্ঞান গোঁসাই
বাবার হাত ধরে এসে বললেন ;
আহা, তোমা বিনে কারে বলি —
আর বাগেশ্রী রাগে কথা বসিয়ে বাবামশাই
গলায় পরিয়ে দিলেন মীঢ় আর তানের গয়না
আমি গাইতে থাকলাম
শ্রীমধুসূদন দোলে শ্রীরাধা সনে
মনের বৃন্দাবনের হদিস পাওয়া গেল।
ঢের বড় হয়ে যাওয়া আঠারোয় এসে
তবেই খবর পেলাম
বসন্ত রাগের সেই দামাল দুরন্ত সুর
এলোমেলো বাতাসের সঙ্গে
বেল ফুলের মাতাল করা গন্ধের সঙ্গে
নববর্ষের শাড়ি পরার ধুকপুকের সঙ্গে
পলাশ আবীর ফাগ সব পাকাপাকি ভাবে
লাগিয়ে দিয়ে গেল মনে
বলে গেল, তুলে ফেলো না
মহাকাল ধোবিওয়ালা, হাজার চেষ্টা করলেও নয়।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।