সম্পাদকীয়

ঈশ্বর অসিদ্ধ,কারণ ঈশ্বরের অস্তিত্বের কোন প্রমাণ নেই – কপিলমুনি।

প্রথাগত ধর্ম-ধার্মিক-ধর্মাচার যে কতটা ভয়ংকর আর বিভৎস হতে পারে তার আরেকটা নিদর্শন হচ্ছে ‘চুরাল মুরিয়াল’। কেরলের মেভেলিক্কারার ছেত্তিকুলাঙ্গারা মন্দিরে যুগ যুগ ধরে চলে আসা একটি প্রথা। ওই মন্দিরে মার্চ মাস নাগাদ অনুষ্ঠিত হয় কুম্বাভারানি উৎসব। সেই উৎসবের অঙ্গ হিসাবেই গত ২৫০ বছর ধরে চলে আসছে চুরাল মুরিয়াল প্রথাটি। দক্ষিণ ভারতের কেরলে মানুষ বলি দেওয়ার এক ভয়ংকর ধর্মীয় রীতি। ২০১৬ সালে এই প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে কেরল স্টেট কমিশন ফর প্রোটেকশন অব চাইল্ডস। এ নিয়ে মামলাও শুরু হয় উচ্চ আদালতে। সেই মামলায় কেরল হাইকোর্ট গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এই প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।` তবে বাস্তবে সে নিয়মে কিছুই এসে যাচ্ছে না ‘অতি ধর্মপ্রাণ’ কিছু মানুষের! আদালতের নির্দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আজ- ১১ মার্চ ছেত্তিকুলা‌ঙ্গারা মন্দিরের আরাধ্য বিগ্রহ ভদ্রকালীর উদ্দেশে কেরলের চেট্টিকুলাঙ্গারা মন্দিরে ফের পালিত হতে চলেছে চুরাল মুরিয়াল।
এই রীতি অনুযায়ী ১০ বছরের কম বয়সি বাচ্চা ছেলেদের বলি দেওয়া হয় মন্দিরের ভগবানের কাছে। সুচে সোনার সুতো ঢুকিয়ে তা দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করা হয় তাদের দেহ। এই শিশুদের রক্তে নাকি তুষ্ট হন দেবতা!` যে পরিবার এই প্রথা মেনে পুজো দিচ্ছে তাঁদের উপর নাকি বর্ষণ করেন আশীর্বাদ! আর এখানেই আছে আরও একটি ভয়ানক টুইস্ট। এই পুজো সাধারণত করে থাকেন ধনী পরিবারগুলি। আর তাঁরা কিন্তু এই রীতির জন্য কখনওই এগিয়ে দেন না নিজেদের বাড়ির ছেলেকে। বরং পঞ্চাশ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে একেবারে গরিব পরিবারগুলির থেকে তাঁদের শিশু পুত্রদের কিনে আনেন তাঁরা! এই নিষিদ্ধ প্রথা যাতে আবার শুরুর আগে থামানো যায় সে জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কেরলের কিছু সংস্থা।

মানুষই তার মত করে ঈশ্বর সৃষ্টি করেছে- ভলতেয়ার।

রীতা পাল

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।