গল্পবাজে রিতা মিত্র

আসন

অ্যামাজন এ একটা টিভি অর্ডার করেছিল । আজ আসছে। ফোন করে ডেলিভারি দেওয়ার লোক সঠিক লোকেশন চাইল। স্বাতীর ফ্ল্যাটটা একটু গলির ভেতর তাই সে পাশের বাড়ির দেবাশীষ কে ডেকে বলল ‘ তুই একটু এগিয়ে যাবি। টিভি ডেলিভারির লোক আসছে। বাড়িটা ঠিক চিনতে পারছেন না’
‘হ্যাঁ, বউদি যাচ্ছি। ‘ টিভি ডেলিভারি দিয়ে লোক চলে যেতেই
মিঠু ( দেবাশীষ এর গিন্নি) বলল
বউদি এসো সবাই মিলে চা খাই।
স্বাতী -‘ বলল ঠিক আছে আসছি’।
দেবাশীষ ও স্বাতী এক সাথেই বাড়িতে ঢুকল।
সেখানে প্রতিমা মাসিমা বসে ছিলেন।
কেমন আছিস তুই? স্বাতীকে জিজ্ঞেস করলেন প্রতিমা মাসিমা।
‘মোটামুটি আছি’ সংক্ষিপ্ত উত্তর স্বাতীর।
দেবাশীষ তোর বাড়ি গিয়েছিল?
হ্যাঁ, আমি ডেকে ছিলাম। ওই একটা টিভি নিয়েছি, ডেলিভারি দিতে এসেছিল তাই।
কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর মাসিমা আবার মুখ খুললেন : তুই সব কিছু খাস তো? মানে মাছ, মাংস ডিম?
ততক্ষণে স্বাতীর বোঝা হয়েগেছে যে মাসিমা সালিশি বসাবেন। কেননা সবে পাঁচ মাস হয়েছে স্বাতীর স্বামী মারা গেছেন। ছেলেপিলে নেই। এখন একদম একা। শশুর বাড়িতে ভরা পরিজন। তারা গ্রামের বাড়িতে থাকে।
আর তার বাপের বাড়ি ভিন্ন রাজ্যে। দেবাশীষ স্বাতী থেকে বয়েসে পাঁচ বছরের ছোটো। তবে দুই পরিবারের খুব মিল। তারা একত্রে ভ্রমণে যায় আজ প্রায় সাত বছর ধরে। স্বাতীদের সাথে তাদের খুব ভাব ভালোবাসা।
স্বাতী খুব ঠান্ডা মাথায় উত্তর দিল ‘হ্যাঁ মাসিমা, আমি গো মাংস, গু ও লোহালক্কড় ছাড়া সব খাই। সব ধরনের কাপড় পরি। কেননা আমি একলা। নিজেকে দেখে রাখার দায়িত্ব আমার নিজের। শাড়ি পরতে হবে এমন আমি মনে করি না। শরীর ঢাকা ভদ্র যে কোনো ড্রেস আমি পরি ও পরবো।
আমার শশুর বাড়ির কেউ কোনো রকম নিয়ম আমার উপর চাপায়নি।
আর এমন নিয়ম চাপালেও আমি মানতাম না। ‘
কিছুক্ষণ একটা কথাও আর কেউ বলল না।
মিঠু আজ আমি আসি মা, পরে আবার আসবো, বলে প্রতিমা মাসিম আসন ত্যাগ করলেন।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।