চল না মন,আরো একবার ছেলেবেলার সেই দিনে,
ইচ্ছে গুলো দিই ভাসিয়ে ময়ূরপঙ্খী নাও এ!
আমার কিছু ইচ্ছে আছে যতন করে রাখা,
ইন্দ্রধনুর রং-মিলান্তি সোহাগী আবেগ মাখা।
আরো একবার, দস্তক দিই চিলেকোঠার ঘরে,
ছোট্টবেলার খেলনারা সব আছে সুখের ঘুমে।
মন,তুই আজ ক্লান্ত ভীষণ, আর স্বপ্ন দেখিস্ না যে,
ভালো থাকার ভান্ করিস শুধু নিখুঁত অভিনয়ে!
জানি, তুই আজ পরিণত,হিসেবী আয়- ব্যয়ে,
শুধু ইচ্ছে গুলোর মৃত্যু ঘটে জীবন সমঝোতায়।
চল না রে মন,আরো একবার শৈশবে যাই ফিরে,
ইচ্ছে মত কাটবে সময় মনের আনন্দতে।
চিলেকোঠার ঘরে সেই কাঠের বাক্স আছে,
গুলি- মার্বেল, তেঁতুল দানা,টিকিট গোছা তাতে।
ছেলে- মেয়ের বিয়ে দেবো, পুতুল দুটো আছে।
” ঠাকুমার ঝুলি”,”চাঁদ মামা” পড়বো আবার নেশায় বুঁদ হয়ে।
শীতের দুপুরে গা এলিয়ে রোদের আদর মেখে,
চেটেপুটে আচার খাবো বয়াম দুটো খুলে।
মনকেমনের বিকেল গুলোয় গাইবো আবার গান,
হারমোনিয়াম – তবলাটা আজো আছে অপেক্ষায়….
কবিতার বই গুলো সব মুখরিত হবে,
রবীন্দ্রনাথ – নজরুল – জীবনানন্দ আজও প্রতীক্ষায়!
চিলেকোঠার ঘরে “ওরা” আজও জেগে আছে,
শুধু মন তুই হারিয়ে গেছিস যান্ত্রিকতার স্রোতে।
চল না রে মন, বৃষ্টি ভিজি চিলেকোঠার ছাদে।
রেনকোটটা আজও ভাঁজে তুলে রাখা আছে।
বৃষ্টি ভেজা আকাশ জুড়ে রামধনু সাতরঙে,
হাতের মুঠোয় ধরবো সে রঙ আদুল গায়ে মেখে।
আরো একবার মাঞ্জা সুতো লাঠাই হাতে ধরে ,
রঙীন ঘুড়ি উড়িয়ে দেবো মেঘ বলাকার দেশে।
আজকে আবার আঁকবো ছবি শুধুই হিজিবিজি,
মোম- প্যাস্টেল- জল রঙে চলবে মনের তুলি!
আর একটা খাঁচা আছে চিলেকোঠার ঘরে,
ছোটবেলায় সখের দুটো মুনিয়া ছিল তাতে।
বুঝি এখন, কষ্ট ভীষণ বন্দী জীবন কাঁদে,
সুযোগ পেলেই ডানা মেলি মুক্তির উল্লাসে।
চিলেকোঠার ঘরে কিছু সময় রাখা আছে,
নির্ভেজাল – নিষ্পাপ শৈশবের সহজপাঠে।
মুহূর্ত গুলো হাতছানি দেয় স্মৃতির সরণীতে,
চল না রে মন, আরো একবার চিলেকোঠার ঘরে।
ইচ্ছে গুলো দোসর করে শৈশবে যাই ফিরে।।