গল্পেরা জোনাকি তে রীতা চক্রবর্তী (পর্ব – ৩২)

নীল সবুজের লুকোচুরি

এরমধ্যেই দেশিকান স্যারের অতিথি উপস্থিত হয়েছেন। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা অতিথিকে বরণ করে নিচ্ছে। মিঠি যদিও পেশেন্ট নিয়ে খুবই ব্যস্ত তবুও মাইকের ঘোষণা ওর কানে পৌঁছে যাচ্ছে। মিঠি বুঝতে পারে অতিথিরা মাদারের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকার সেরে কিছুক্ষণের মধ্যেই এই ক্যাম্পে চলে আসবেন।

আজ হার্টের স্পেশাল ওপিডি। ফরেনের ডাক্তার আসবে শুনে আজ ভিড় একেবারে গিজগিজ করছে। আশেপাশের কয়েকটা গ্রামের মানুষ সকাল হবার আগে থেকেই লাইন দিতে শুরু করেছে। মিঠির সামনের লাইনটা অনেক বড় হয়ে এঁকেবেঁকে গেছে। এদের রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে। এবার চেকআপের পালা। তাই মুখ তুলে তাকাবার মতো অবস্থা নেই এখন মিঠির। একা একজন নার্স নিয়ে আজকের সকালের ভিড় সামলানো বেশ কঠিন হয়ে পরছে।

আজকের এই স্পেশাল ওপিডিতে ডঃদেশিকান এবং তার বন্ধু থাকবেন ডঃআয়ুস্মিতার সাথেই। রেজিস্ট্রেশনের দিকে রয়েছেন “সেবাসদনে’র ট্রেনি ব্যাচ। ইকুইপমেন্ট এন্ড এক্সেসারিজের দায়িত্বে রয়েছেন চারজন মেডিক্যাল এসিস্টেন্ট আর এখন ওর সাথে রয়েছেন ওর ভীষণ প্রিয় মলিমাসি ওরফে রমলা ডিসুজা।
চোখের ইশারায় মিঠিকে সামনের দিকে দেখিয়ে মিসেস ডিসুজা এগিয়ে যান নবাগতদের দিকে। মিঠি দেখে আউটডোরর এপ্রোন পরে নাকমুখমাথা ঢেকে তিনজন এগিয়ে আসছে ক্যাম্পের দিকে। লম্বা ছিপছিপে চেহারা দেখে দেশিকান স্যারকে চিনে নিতে অসুবিধা হয়না। কিন্তু ওনার সাথে তো একজনের আসার কথা, তবে সাথে আরও একজন কে?
ভাবতে ভাবতেই ওঁরা এসে পরেছেন মিঠির সামনে।

ডঃদেশিকান পরিচয় করিয়ে দেয় তার বন্ধুকে মিঠির সাথে। মিস মৈত্র, হিয়ার ইজ মাই ফ্রেন্ড ডঃআরিয়ান এন্ড আরিয়ান হিয়ার ইজ ডঃ আয়ুস্মিতা মৈত্র আ রিনাউন্ড হার্ট সার্জন। মিঠি অবাক হয়ে তাকায় আরিয়ানের দিকে। মনে মনে ভাবে এই কি সে যে ওর ওপর গার্জেনগিরি করত!

আরিয়ানেরো বোধহয় তেমনই কিছু মনে হয়েছিল। একটু অবাক হলেও নিজের মনের কথা মনেরেখে সবাই কাজে মন দেয়। যখন সূর্যদেব মাথার ওপরে উঠে গেছেন তখন সবাই লাঞ্চের জন্য রেডি হয়ে হলে পৌঁছোয়। প্রত্যেকে নিজের তথাকথিত খোলস মানে এপ্রোন ছেড়ে রেখে খাবার টেবিলে আসে।

আসছি পরের পর্বে

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!