গল্পেরা জোনাকি তে রীতা চক্রবর্তী (পর্ব – ৪১)

নীল সবুজের লুকোচুরি
পরিস্থিতির ধাক্কায় অস্থির মিঠিকে ডাক্তার দেশিকান বলেন, “চিন্তা করবেন না মিস মৈত্র, আপনার মা’ ঠিক আছেন। ভয় পাবার কিছু নেই। আপনি নিজেওতো একজন রিনাউন্ড কার্ডিওলজিস্ট। তাছাড়া এখানে তো আরো একজন বিখ্যাত হার্ট স্পেশালিষ্ট রয়েছেন। তেমন কোন প্রবলেম হবে না আশা করি। আপনি একদম রিল্যাক্স থাকুন। আমরা তো আছি আপনার পাশে। এত ভাববেন না প্লিজ”.. এই বলে মিঠিকে আশ্বস্ত করেন।
——
ডাক্তার দেশিকানের কথাগুলো মিঠির মন ছুঁয়ে যায়। কোথাও যেন ভরসার একটা সুর কানে আসে আর প্রাণে লাগে এক অজানা ভালোলাগার ছোঁয়া। এযেন ” কানের ভিতর দিয়া মরমে পশিল গো”-র মত একটা কিছু ঘটে চলেছে। মনের মধ্যে একটা রিণরিণে অনুভূতি হচ্ছে। এমন ভাবে মিঠিকে কেউ কখনো মেন্টাল সাপোর্ট করবে, এরকম মিঠি কখনো ভাবেনি। এমন স্ট্রং সাপোর্ট পেলে মিঠি তো যে কোন পরিস্থিতিতে বিশ্ব জয় করে ফেলতে পারে।.. কথাটা মনে হতেই মনটা নেচে ওঠে। মিঠি যেন এই মুহূর্তে প্রজাপতির ডানায় ভর করে রঙিন ফুলে ফুলে উড়ে চলেছে। যেন কোথাও কোন দুঃখ নেই, দুশ্চিন্তা নেই। আছে শুধু রাশি রাশি ভালোলাগা। ভেবে পায়না এই কথাগুলোতে কি এমন আছে? আর নিজেকেও অদ্ভুত লাগছে আজ! মায়ের শরীরটা এত খারাপ যে হেল্থ সাপোর্ট নিতে হচ্ছে। সেজন্য টেনশন তো একটা হচ্ছেই। তবে একটা ভালোলাগা কোথা থেকে এসে মনজুড়ে বসে আছে। এটা কি হচ্ছে বুঝতে পারছেনা মিঠি। ছোটবেলায় কোনোরকম পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পারত না বলে কোনো ব্যাপারে টেনশন হতনা। কিন্তু আজ তো মা’ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একটু আগেওতো ভীষণ অসহায় লাগছিল নিজেকে। কি এমন ঘটে গেল এরমধ্যেই যে সব দুশ্চিন্তাগুলো ভ্যানিশ হয়ে গেল মুহূর্তেই! মিঠির এই মনকে তো নিজেই চিনতে পারছে না। এই মুহূর্তে মায়ের সামনে ডাক্তার দেশিকান রয়েছেন। আর সেটাই যেন মিঠির মনে অদ্ভুত একটা সাহস কিম্বা ভরসার উৎস হিসেবে কাজ করে চলেছে।
আসছি পরের পর্বে