প্রবন্ধে রতন বসাক

বর্তমান সংকট ও তার প্রতিকার

এক বছরেরও বেশি হয়ে গেল পুরো বিশ্ব জুড়ে মানুষ এক ভীষণ সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে। মানুষ নিরুপায় কিছুই করে উঠতে পারেনি এখনও পর্যন্ত। অদৃশ্য এক ভাইরাসের আক্রমণে মানুষের জীবন বিপদাপন্ন। সেই ভাইরাসটার নাম হলো ” করোনা ” যা খুবই দ্রুত বেগে ছড়িয়ে পড়তে পারে মানুষের দেহের মধ্যে।

এই ভাইরাসের আক্রমণে মানুষের প্রাণও যাচ্ছে খুবই সহজে। এখনো পর্যন্ত এই ভাইরাসকে মারার কোনো ওষুধ আবিষ্কার হয়নি বিশ্বে। তবে বিজ্ঞানীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এর ওষুধ আবিষ্কারের জন্য। দীর্ঘ এক বছর প্রচেষ্টা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা আপাতত টিকা অর্থাৎ ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই। যা এই ভাইরাসকে দেহে ছড়িয়ে পড়ার থেকে অনেকটাই প্রতিরোধ করতে সক্ষম হচ্ছে।

করোনা ভাইরাস অদৃশ্য মানে খালি চোখে দেখা যায় না ও এই ভাইরাস মানুষের দেহের মধ্যে খুবই দ্রুত বেগে ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই একজন সুস্থ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে। এই ভাইরাস ধনী-গরিব কিংবা ছোট-বড় কোনো বিভেদ বিচার করে না, যে কারো দেহে প্রবেশ করে যেতে পারে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর বিভিন্ন রকম সিমটমস্ দেখা যায়। যেমন গন্ধ বোঝার ক্ষমতা চলে যায়, গলা ব্যাথা, জ্বর ও গায়ে ব্যাথা হয় ইত্যাদি।

এই করোনা ভাইরাস মানুষের তৈরি নাকি প্রকৃতির থেকেই সৃষ্টি হয়েছে; তা এখনও পর্যন্ত সঠিক ভাবে জানা যায়নি। ইতিমধ্যেই আমরা এর আক্রমণে দুটো ঢেউ অতিক্রম করে ফেলেছি। আমরা এর জন্য অনেক আপনজনকেও হারিয়ে ফেলেছি। বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশেই এর বিস্তার হয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন এর তৃতীয় ঢেউ কয়েক মাসের মধ্যেই আবার আছড়ে পড়তে পারে পুরো বিশ্ব জুড়ে।

এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার একটাই উপায় মানুষের থেকে মানুষকে দূরে থাকতে হবে। তাই পুরো বিশ্ব জুড়েই লকডাউন পরিস্থিতি ছিল ও এখনও আছে কিছু-কিছু দেশে। যার ফলে প্রত্যেকটি দেশ ও মানুষের আর্থিক অবস্থার অবনতি অনেক হয়ে গেছে।

এই ভাইরাসের আক্রমণের ভয়ের জন্য চুপচাপ গৃহবন্দি হয়ে থাকলে তো আমাদের দৈনন্দিন জীবন চলবে না। তাই আমাদের দ্রুত ভ্যাকসিন নিয়ে দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরে কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে প্রত্যেককেই সাহসের সাথে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে ঘরে ও বাইরে আমাদের চলাফেরা করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৃতির প্রতিও আমাদের যত্নশীল হতে হবে।

এই করোনা ভাইরাস আমাদের শিক্ষা দিল যে হিংসার কোনো জায়গা নেই। প্রত্যেকটা দেশই যুদ্ধের জন্য অনেক সরঞ্জাম মজুত করে । কিন্তু একবারও ভেবে দেখে না হিংসা করে লাভ কী অন্য দেশের প্রতি? প্রত্যেকটা দেশ
যুদ্ধের থেকে যদি স্বাস্থ্য ও ওষুধ খাতে বেশি খরচা করত, তাহলে অনেক ভালো হতো। মানুষে-মানুষেও হিংসা করেও কোনো লাভ নেই। এই সুন্দর পৃথিবীতে আমরা সবাই সমান। তাই ভালোবেসে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে জীবন পথে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।