সম্পাদিকা উবাচ

এমন ঘটনা বহুবার ঘটেছে আমার সাথে। কখনো সেই মুহূর্তেই বুঝেছি আবার কখনো বুঝতে লেগে গিয়েছে কয়েক বছর। একটি সর্বশক্তিমানের অস্তিত্ব আমি বহুবার অনুভব করেছি। ধর্মে যারা বিশ্বাসী তারা ঈশ্বর আল্লাহ ভগবান নামে ডাকে তাকে। বিজ্ঞান আবার তাকে প্রকৃতি নামে ডাকে। আর যারা আমার মতো না বিজ্ঞান জানে, না ধর্ম জানে তারা মনে মনে ভেবে নেয় যে ওই উপরে কেউ একজন আছে সর্বশক্তিমান।
তাই হয়ত বলি ” বিশ্বাসে মলায় বস্তু তর্কে বহুদূর ” ৷
কিন্তু বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ দিয়ে দেখলে বিষয়টা অন্য রকম ভাবে আলোচনা করা যেতে পারে৷
কিছু কিছু এমন ঘটনা আমাদের সকলের জীবনে ঘটে। ঘটনা না ঘটা বা ঘটে যাওয়ার পরমুহূর্তে মনে হয় ভাগ্যিস এটা ঘটেছিলো বা এটা ঘটেনি। ঘটলে বা না ঘটলে হয়তো ভয়ংকর এক বিপদের সম্মুখীন হতাম। মনোবিজ্ঞানী হয়তো বলবে এটা মানুষের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়র অনুভূতি, যা একটি ঘটনাকে ঘোটতে বা না-ঘোটতে সাহায্য করেছে। গবেষকদের অনুমান প্রত্যেক মানুষের মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে ধারণা বা পূর্বানুমানের বিষয়টি একটি জটিল রাসায়নিক কাজ করে, যা আমাদের অজানা কোন বিষয়ের উপর সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।
বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে এই প্রবাদকে “উট পাখির বালিতে মাথা গোঁজে বসে থাকার” সমার্থক হিসেবে ধরা যেতে পারে। এর আগে বুঝতে হবে যে তর্ক আর কুতর্ক এক ব্যাপার নয়।
বিজ্ঞানের একেকটি অংশ এতো বেশি ডালপালা যুক্ত যে আমরা সাধারণ লোকেরা চিন্তা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ি এবং বিশ্বাসের উপর ছেড়ে দেই। আমাদের মস্তিকের একটি প্রবণতা আছে। আমাদের মস্তিষ্ক এনার্জি এফিসিয়েন্সিকে খুব প্রাধান্য দেয়। যখনই আমরা চিন্তা করি তখনই মস্তিষ্ককে প্রচুর এনার্জি খরচ করতে হয়, নিউরনের কাজও অনেক বেড়ে যায়। আমাদের মস্তিকের গভীর অবচেতন মন কিন্তু এখনো রেপটেলিয়ান বা সরীসৃপ ধর্মী প্রকৃতি বজায় রেখেছে। একে আপনি পরিবর্তন করতে পারবেন না। ঠিক যেমনটি আপনি আপনার খুব মৌলিক দৈহিক ব্যাপার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না একই ভাবে। এবার এই রেপটেলিয়ান চিন্তাধারা আপনার মাথাকে আদেশ দেয় খাদ্য, বিপদ থেকে রক্ষা আর প্রজনন ছাড়া বাকি বিষয় এতো গুরুত্বপূর্ন নয় এবং একটি সময় পরে সেই চিন্তা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এর ফলে একটা সময় পর আমরা বিশ্বাসের সামনে আত্মসমর্পণ করি।
ভালো থাকবেন৷ সুস্থ থাকুন ৷ লিখতে থাকুন ৷ পড়তে থাকুন ৷

রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।