|| কালির আঁচড় পাতা ভরে কালী মেয়ে এলো ঘরে || T3 বিশেষ সংখ্যায় পিয়াংকী

আহুতি আর কার্ত্তিকরাত

আশ্বিনের তারিখেরা বয়ে নিয়ে এসেছিল যে প্রেম, কার্ত্তিকের এক নিথর কালচে সন্ধেতে ওরাই তাকে নামিয়ে দিল পুকুরের পাড়ে, সেই মুহূর্তে হালকা হচ্ছে আলো। অন্ধকার ঘুপচি থেকে বেরিয়ে আসছে উজ্জ্বল খয়েরী রঙের পাখী, জেলেদের গায়ের নূন্যতম নুনটুকু শুষে গিয়ে আরও মিইয়ে যাচ্ছে শব্দ, পাতাখসার অনুভূতি জড়ো করে ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে দুই ভুরুর মাঝের চওড়া রাস্তা।
হঠাৎ আকাশের গায়ে আচমকা জ্বর এল।নৌকা আর জলের স্পর্শরেখা বরাবর জমতে থাকল পাথর। মিশমিশে কালো। আমি হলুদ লাল সবুজ বেগুনি খুঁজে মরলাম অযথাই

কানাগলির মুখে রোজ ঝালমুড়ি বিক্রি করে যে লোকটা তার গালভর্তি দাড়ি দেখে হকচকিয়ে গেলাম, হাতে তার আচারের তেল মাখামাখি, অষ্টাদশী এক কন্যার গালে সে লেপে দিচ্ছে প্রাচীন মেঘ। এসব ভেবে চোখে সর্ষেফুল দেখার আগে পাতে এসে পড়ল পদ্মার ইলিশ, বুঝলাম আমার বয়স বাড়ছে সাথে ব্যস্তানুপাতে কমছে দৃষ্টি

যমুনা। ওর জল নাকি কালো। জানিনা।দেখিনি।লোকমুখে শোনা কথায় ভরসা করব না বলেই হয়ত দৌড়ে গেলাম পূর্বের বারান্দায়। নয় সড়িকি একটা পুকুর, রোজের চুলোচুলির কারণ তরল। আমি নিস্পৃহ, জলের সাথে জল মেশালাম।বুক শুকিয়ে উঠছে,তাকিয়ে রইলাম ছায়ার দিকে। শাপলার অভিশাপে মরেছিল যে বালিকা, আজ সেই জলজ কয়েদীর রঙ ঘনিষ্ঠকালো

মায়ের রান্নার উনুন জ্বলছে,ধোঁয়ার সাথে খানিকক্ষণ বচসার পর থেমে গেছে আগুনের এসপারওসপার, কালিঝুলি লেগে গেছে ছাপার শাড়ির কোলআঁচলে,
এখন শান্তসহাবস্থান। এখন সবটা জুড়ে শুধুই ছাতিমফুলের গন্ধ,মা চিৎকার করে বলছে,” তোদের পেটের জন্য আমি পারলে উনুনের মুখে আমার হাত-পা ভেঙে ঢুকিয়ে দিই,তবে যদি চাল তাড়াতাড়ি সেদ্ধ হয় “

অষ্টাদশী মেয়ের মাথায় অমাবস্যা ঝালমুড়িওয়ালার শিবজটা পূবপুকুরের সন্ধ্যাজপ অথবা মায়ের সারা শরীর জুড়ে ভূতচতুর্দশীর চোদ্দপ্রদীপ

আসলে…কার্ত্তিকের সবটুকুতে কেবলমাত্র কালোর আহুতি

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।