সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে পিয়াংকী (সাবেক কথা – ৮)

সাবেক কথা

কুপি

যাবজ্জীবনের পথ, ফেলে এলে পড়ে থাকে যেটুকু মাটি, যেটুকু অধাতু-ধাতু,যেটুকু তরল সে সব উল্কির মতো এঁকে রাখি চিলেকোঠার ঠিক ওপরের বর্গাকার সেই ঘরে যেখানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হলে কুপিতে কেরোসিন ভরে দেয় আমার চন্দ্রবিন্দু হয়ে যাওয়া মা…

বয়ে চলো অনন্ত এ যাত্রাপথে। ক্লান্ত হও, সূর্য অস্ত যাক,জাঁকিয়ে উঠুক তোমার আঙুলের পদ্ম’… ভবিষ্যৎ লিখতে এসেছে একটি আলো। অসীম সেই আলো,চক্রাবর্তের মতো সেই আলো। ধীর ম্লান নিভন্ত সেই আলো। দিন শেষে হ্যামিলটনের বাঁশির ভেতর যে সুর বাজে, সেখানেই জন্মের এ সংসার। সেখানেই যাবতীয় স্পর্শ সমস্ত আসা-যাওয়া। কুপি জ্বলছে। পুড়ে যাচ্ছে নারী পুরুষ। আলো আর আগুন এক হয়ে এলে জল ঢালছে প্রকৃতি। নেমে আসছে মেঘ। ভিজতে ভিজতে বৃষ্টি হলে গড়িয়ে পড়ছে বুকের কোণ ঘেঁষে।

একক দশক শতক… দশগুণ করে বাড়ছে যন্ত্রণা। তীব্র নেশা যেমন ছিনিয়ে নেয় সাদা ভোর নীল দুপুর আর হলুদ বিকেল সেভাবেই বাড়ন্ত হচ্ছে সেইসব জরুরি-আলো যাদের আমি ছেড়ে এসেছিলাম আম্রপালির অনন্ত গহ্বরে। এখন একটি কুপি,কুপিই ভরসা। হাত ধরে এগিয়ে দিচ্ছে ওই সামান্য একটা জড়। নিষ্প্রাণ একটি জড়। হারিয়ে যাব বললেই সেই কুপি দৌড়ে আসে এক আলোকবর্ষ দূর থেকে, হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,” সেঁকে নাও নিযুত ব্যথা, পুড়িয়ে নাও পাঁজরের হাড়, ঘুমিয়ে পড়ো অস্তমিত সূর্যটার সাথে, ফের উদয় হও কারণ তুমি মহাকাল ”

১ লা শ্রাবণ
দুপুর ২ঃ৫৫
ইছাপুরের বাড়িতে ফুর্তি’র পড়ার ঘর

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!